Advertisement
০২ মে ২০২৪
Controversy in SAFF final

সাফ ফাইনাল জয়োৎসবে বিতর্ক, ভারতীয় ফুটবলারের কাঁধে জাতীয় পতাকার বদলে মণিপুরের পতাকা!

সাফ কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে ভারতীয় দলের এক ফুটবলারের কাঁধে জাতীয় পতাকার বদলে দেখা গিয়েছে মণিপুরের মেইতেই সম্প্রদায়ের পতাকা। তাতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

Jeakson Singh with Manipur flag

ভারতীয় ফুটবলার জিকসন সিংহের কাঁধে মণিপুরের পতাকা (মাঝে)। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৩ ১০:১৯
Share: Save:

কুয়েতকে হারিয়ে সাফ কাপ জিতলেও বিতর্ক এড়াতে পারল না ভারতীয় ফুটবল। প্রতিযোগিতা জিতে উল্লাস করার সময় ভারতীয় ফুটবলার জিকসন সিংহের কাঁধে জাতীয় পতাকার বদলে দেখা গেল মণিপুরের পতাকা। সেই পতাকা নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পদকও নিলেন জিকসন। দলের অনেক ফুটবলারের কাঁধে যখন শোভা পাচ্ছিল দেশের জাতীয় পতাকা, তখন জিকসনের কাঁধে মণিপুরের পতাকা থাকায় শুরু হয়েছে বিতর্ক।

মণিপুরের ফুটবলার জিকসনের কাঁধে ছিল মেইতেই সম্প্রদায়ের সাতরঙা পতাকা। মণিপুরে গত দু’মাস ধরে মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। জিকসন নিজে মেইতেই সম্প্রদায়ের। তাই তিনি এই পতাকা নিয়ে নিজের সম্প্রদায়ের কথা তুলে ধরতে চেয়েছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে যে ভাবে তিনি ফুটবলের মঞ্চে তা ব্যবহার করেছেন তাতে অখুশি অনেকে। তাঁদের মতে, এর ফলে অশান্তি আবার নতুন করে বাড়তে পারে। জিকসন ভারতের অনূর্ধ্ব-১৭ দলের অধিনায়ক ছিলেন। অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ খেলেছেন। একমাত্র ভারতীয় ফুটবলার হিসাবে বিশ্বকাপে গোল রয়েছে তাঁর। তাই সাফ জয়ের উৎসবের মধ্যে তিনি এটি না করলেই পারতেন বলে মনে করছেন অনেকে। আবার একটি অংশের মতে, জিকসন নিজের কথা বলতে চেয়েছেন। সেই অধিকার তাঁর রয়েছে। তার জন্য ভারতীয় ফুটবলের সব থেকে বড় মঞ্চকেই বেছে নিয়েছেন এই ফুটবলার। আর তাতে যদি তাঁর দলের বাকি ফুটবলারদের কোনও সমস্যা না থাকে তা হলে বাকি কারও সমস্যা থাকা উচিত নয় বলে মত তাঁদের।

জিকসন পরে সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন, তিনি শুধু নিজের কথা সবার সামনে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। ভারতীয় ফুটবলার বলেছেন, ‘‘আমি কারও ভাবাবেগে আঘাত করতে চাইনি। আমার রাজ্য মণিপুর এখন কোন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সেটাই সবার সামনে তুলে ধরতে চেয়েছিলাম।’’ এই বিষয়ে অবশ্য ভারতীয় দল বা সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন এখনও মুখ খোলেনি।

মণিপুরে মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ১০০ পার করেছে। ঘরছাড়া প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। শুরু হয় দীর্ঘ অশান্তি।

গত ৩ মে মণিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর বিক্ষোভ-মিছিল ঘিরে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে অশান্তির সূত্রপাত। তার পর থেকে তা ক্রমে বাড়তে থাকে। এই ঘটনায় গত দু’মাস ধরে মণিপুরের এনএইচ-২ বা ইম্ফল-ডিমাপুর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিল কুকিরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সর্বদল বৈঠক ডাকেন অমিত। তার পরেও শান্তি আসেনি। অবশেষে অমিত মণিপুরে শান্তি স্থাপনের অনুরোধ করেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুরোধের পরে জাতীয় সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয় কুকিরা। দু’মাস পরে স্কুল খোলার নির্দেশ দিয়েছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহ।

সাফ কাপের ফাইনালে কুয়েতকে সাডেন ডেথে হারিয়েছে ভারত। নির্ধারিত সময়ে খেলা ১-১ ড্র ছিল। অতিরিক্ত সময়েও গোল হয়নি। টাইব্রেকারের প্রথম পাঁচ শটে দু’দলই চারটি করে গোল দেয়। কুয়েতের অধিনায়কের ষষ্ঠ শট বাঁচিয়ে দেন ভারতীয় গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিংহ সান্ধু। ট্রফি জেতে ভারত। এই নিয়ে নবম বার সাফ কাপ চ্যাম্পিয়ন হল ভারত। কিন্তু তার মধ্যেও বিতর্ক এড়ানো গেল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

SAFF Cup india football Controversy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE