প্রতিরোধ: ওড়িশার রক্ষণে আটকে গেলেন কাউকো। ছবি: এফএসডিএল।
ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে তিন মিনিটের মধ্যে মনবীর সিংহের গোলে এগিয়ে গিয়েও ১-২ হার। ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের গ্যালারি থেকে যখন রয় কৃষ্ণ, আহমেদ জাহুদের নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছিলেন ওড়িশার সমর্থকরা, থমথমে মুখে দাঁড়িয়েছিলেন আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস। আরও একবার সের্খিয়ো লোবেরা-র কাছে মস্তিষ্কের যুদ্ধে হারের যন্ত্রণা তাঁকে ক্ষতবিক্ষত করছিল।
মুম্বই সিটি এফসি-কে হারিয়ে লিগ-শিল্ড জয়ী মোহনবাগান কেন সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে ওড়িশার কাছে এ ভাবে বিপর্যস্ত হল? হতাশ হাবাস বললেন, ‘‘একাধিক ফুটবলারের ব্যক্তিগত ভুলের জন্যই আমাদের হারতে হল। আমি কাউকে কাঠগড়ায় তুলতে চাই না। দলগত ভাবে ভুল করলে কঠিন হয়ে পড়ে লড়াই।’’ আরও বলেন, ‘‘আমাদের রক্ষণে অনেক ভুল হয়েছে। বোঝাপড়া ছিল না। ফুটবলারদের মধ্যে দূরত্ব প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। এই কারণেই দ্বিতীয় গোলটা খেতে হয়। ওই সময়ে হেক্তরের প্রয়োজন ছিল এক জন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারের সাহায্য। কিন্তু ওর ২৫ মিটারের মধ্যে কেউ ছিল না।’’
এগিয়ে যাওয়ার পরেই খেলা থেকে হঠাৎ করে মোহনবাগানের হারিয়ে যাওয়ার কারণ কি আত্মতুষ্টি? সবুজ-মেরুনের স্পেনীয় কোচের কথায়, ‘‘শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার পরে ফুটবলারদের বলেছিলাম, এটা সেমিফাইনাল। ম্যাচ না শেষ হওয়া পর্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। কোনও অবস্থাতেই আত্মতুষ্ট হয়ে পড়লে চলবে না।’’ যোগ করেন, ‘‘লিগ-শিল্ড জয়ের পরে সম্ভবত আমাদের শিবিরে একটু গা ছাড়া মনোভাব এসে গিয়েছিল। এটা অবশ্য খুবই স্বাভাবিক একটা ঘটনা। ফুটবলে এ রকম ঘটেই থাকে।’’
তবে হাবাস বেশ বিরক্ত ৬৭ মিনিটে আর্মান্দো সাদিকুর লাল কার্ড দেখা নিয়েও। সেই প্রসঙ্গে বলে দিলেন, ‘‘আমাদের দলের অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের কঠিন সময়ে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। ওদের দেখেই তো শিখবে তরুণরা। তবে খেলায় যদি বারবার বিরক্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়, সে ক্ষেত্রে অবশ্য মাথা ঠান্ডা রাখাও মাঝেমধ্যে কঠিন হয়ে পড়ে।’’
ওড়িশার বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে সাংবাদিক বৈঠকে হাবাস জানিয়েছিলেন, জেতার লক্ষ্য নিয়েই নামবেন। তবে কোনও মতেই এই ম্যাচটা হারতে চান না। কারণ, সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বের লড়াই অনেক কঠিন হয়ে যাবে। কিন্তু ভুবনেশ্বরে ২-১ গোলে জিতে ফাইনালে ওঠার দৌড়ে কিছুটা এগিয়ে গেলেন কৃষ্ণরা। মোহনবাগানের ফাইনালে উঠতে হলে আগামী ২৮ এপ্রিল, রবিবার যুবভারতীতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে ওড়িশার বিরুদ্ধে জিততেই হবে। দু’গোলের ব্যবধানে জিতলে সরাসরি ফাইনালে চলে যাবে লিগ-শিল্ড জয়ীরা। ১-০ গোলে জিতলেও ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা আশা বেঁচে থাকবে মোহনবাগানের। কারণ, সে ক্ষেত্রে সেমিফাইনালের দুই পর্ব মিলিয়ে ফল ২-২ হবে। তখন অতিরিক্ত সময় খেলা হবে। তাতেও ফয়সালা না হলে টাইব্রেকারে নিষ্পত্তি হবে। মোহনবাগান কি পারবে লক্ষ্যে পৌঁছতে? আত্মবিশ্বাসী হাবাস বলছেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি, কলকাতায় ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা আমাদের আছে।’’
বিপর্যয়ের রাতেও তাঁর এক সময়ের প্রিয় ছাত্র রয় কৃষ্ণের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করতে ভোলেননি হাবাস। মোহনবাগানের স্পেনীয় কোচের কথায়, ‘‘রয় আজ অসাধারণ খেলেছে। তবে ও এখন তো আর মোহনবাগানের নয়, ওড়িশার ফুটবলার। তাই ওর সম্পর্কে আমার এর চেয়ে বেশি কিছু বলার নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy