ঠিক দু’বছর আগে আইএসএলের কাপ ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল মোহনবাগান এবং বেঙ্গালুরু। সেই ম্যাচে টাইব্রেকারে বেঙ্গালুরুকে হারায় মোহনবাগান। শনিবার আইএসএলের কাপ ফাইনালে আবার মুখোমুখি সেই দুই দলই। জেরার্ড জারাগোজা, সুনীল ছেত্রীদের সামনে সুযোগ প্রতিশোধ নেওয়ার। তবে দু’বছর আগে ফাইনালে জিতেছিলেন বলে শনিবারও জিতবেন, এমনটা মোটেই ভাবছেন না মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা। তিনি অতীত নিয়ে ভাবতে নারাজ।
শুক্রবার নিউটাউনের একটি হোটেলে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বেঙ্গালুরুর কোচ এবং ফুটবলার গুরপ্রীত সিংহ সান্ধুর সামনেই মোলিনা বলেন, “অতীত নিয়ে ভাবছিই না। ও সবে কোনও দিনই পাত্তা দিই না। আপাতত কালকের ম্যাচটা কী ভাবে জিতব সেটাই ভাবছি। লিগ-শিল্ড ইতিমধ্যেই জিতেছি। কাপ জেতার জন্যও আপ্রাণ চেষ্টা করব। গত মরসুমে কী হয়েছিল সেটাও আমার মাথায় নেই।”
মোলিনার ডান দিকে বসেছিলেন অধিনায়ক শুভাশিস বসু। তিনিও কোচের সুরে সুর মেলালেন। বলেছেন, “গত বার যা হয়েছে সেটা বদলে দেওয়ার সুযোগ আমাদের কাছে নেই। তবে এখন কালকের ম্যাচেই ফোকাস করছি। আগের বার মুম্বইকে প্রতিপক্ষ পেয়েছিলাম। এ বার বেঙ্গালুরু। আলাদা প্রতিপক্ষ, আলাদা ভাবনা রয়েছে। তাই অতীতকে নিয়ে না ভেবে বর্তমানে ভাবাই ভাল।”
লিগ-শিল্ড জেতার পর অনেক দলের মধ্যেই একটা গা-ছাড়া মনোভাব দেখা যায়। এ কারণেই এখনও পর্যন্ত মুম্বই সিটি বাদে কোনও দল একই মরসুমে লিগ-শিল্ড এবং কাপ জিততে পারেনি। শনিবার মোহনবাগানের সামনে বিরল ‘ডাবল’ করার সুযোগ। মোলিনা জানিয়েছেন, তাঁদের অনুপ্রেরণা যথেষ্ট।
মোহনবাগান কোচের কথায়, “অনুপ্রেরণার কোনও অভাব নেই। আমরা এ ব্যাপারেও সবার উপরে। বরং আগের বারের থেকেও বেশি অনুপ্রাণিত। লিগ-শিল্ড জিতেছি। কঠিন সেমিফাইনাল জিতে এখানে এসেছি। এখন আমরা আর একটা ট্রফি জিতে মোহনবাগানের ইতিহাসে প্রথম বার ‘ডাবল’ করার সামনে। এর থেকে বেশি অনুপ্রেরণা আর কী হতে পারে।”
সেই ইতিহাসের সামনে কাঁটা বেঙ্গালুরুই। সেটা ভাল করেই জানেন মোলিনা। তাই প্রতিপক্ষকে কোনও অংশে ছোট করে দেখতে চাইছেন না। গ্রুপ পর্বে এই বেঙ্গালুরুর কাছেই প্রথম পর্বে হারতে হয়েছিল তাঁকে। বললেন, “বেঙ্গালুরুকে আমরা যথেষ্ট সমীহ করছি। ওরা দারুণ দল। গোটা মরসুমেই সেটা প্রমাণ করেছে। খুব কঠিন খেলা হবে। তবে আমাদেরও পরিকল্পনা রয়েছে। সেটা এখানে বলা যাবে না।”
তাঁর সংযোজন, “ওদের দর্শন, ফুটবল, খেলার কৌশল আলাদা। তবে কোনও আলাদা ফুটবলারকে নিয়ে কখনও মাথা ঘামাই না। সব প্রতিপক্ষই আমার কাছে সমান। ফাইনালে খেলতে গেলে প্রতিপক্ষের কথা মাথায় রাখলে চলে না।”
আরও পড়ুন:
শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন আবার ভরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ৬০ হাজারের কাছাকাছি দর্শক আসবেন খেলা দেখতে। মোলিনার মতে, এটাও তাঁদের কাছে অনুপ্রেরণা। বলেছেন, “আমাদের কাজ হল সমর্থকদের খুশি করা। আমাদের সমর্থকেরা সব সময় জয় চান। ভাল খেলেও হেরে গেলে তার কোনও মানেই নেই। জিততেই হবে, সেটা ১-০ হোক বা ৫-৪। যে ভাবেই হোক সেটা করতে হবে।”
তাঁর সুরেই সুর মেলালেন শুভাশিস। বলেছেন, “ঘরের মাঠে সমর্থকদের সামনে খেলা বরাবরই আনন্দের। কালও ওরা মাঠ ভরিয়ে আসুন এবং আমাদের জয়ের সাক্ষী থাকুন, এটাই চাই।”