— ফাইল চিত্র।
প্রতিযোগিতা যা-ই হোক, কলকাতা ডার্বি মানেই অন্য যুদ্ধ। ট্রফি জেতা হোক না হোক, মোহনবাগান বা ইস্টবেঙ্গল, কোনও দলই এই ম্যাচে হারতে চান না। যে কোনও মূল্যে জয় চাই। আর জিততে গেলে গোল করতে হবে। সেই গোল করার মতো ফুটবলার বেছে নেওয়া যে কোনও দলের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
গত আটটি ডার্বি জিতেছে মোহনবাগান। শনিবারেও স্বাভাবিক ভাবেই এগিয়ে তারাই। আগের বারের থেকেও দল শক্তিশালী করেছে তারা। তরুণ ফুটবলারদের যেমন নিয়েছে, তেমনই অভিজ্ঞরাও রয়েছেন। ইস্টবেঙ্গলের অবস্থাও আগের থেকে ভাল। অতীতে যেমন শেষ মুহূর্তে কোনও মতে দল গড়তে হয়েছে, এ বার তেমন নয়। বরং ট্রান্সফার ফি দিয়ে অন্য ক্লাব থেকে নিয়ে আসা হয়েছে ফুটবলারদের। দুই ক্লাবের আক্রমণ ভাগ কেমন, তা বিশ্লেষণ করল আনন্দবাজার অনলাইন।
মোহনবাগান
গত বারের ফুটবলারেরা তো রয়েছেনই, এ বার আক্রমণ ভাগ আরও শক্তিশালী করতে নিয়ে আসা হয়েছে কাতার বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলা জেসন কামিংসকে। সই করানো হয়েছে আর্মান্দো সাদিকুকে। এ ছাড়া গত বার খেলা মনবীর সিংহ তো রয়েছেনই। তবে এঁরা কেউ নন, মোহনবাগানের এ বারের আবিষ্কার হয়তো হতে চলেছেন সুহেল ভাট।
মোহনবাগানের যুব দলে অনেক দিন ধরেই রয়েছেন তিনি। এ বারই কলকাতা লিগে নিয়মিত খেলতে শুরু করেছেন। প্রথম থেকেই সমর্থকদের মন জয় করে নিয়েছেন কাশ্মীর থেকে উঠে আসা ফুটবলার। কলকাতা লিগে এখনও পর্যন্ত আটটি গোল করেছেন তিনি। ডুরান্ডেও দু’টি গোল হয়ে গিয়েছে দু’ম্যাচে। তরুণ ফুটবলারকে নিয়ে মুগ্ধ কোচ জুয়ান ফেরান্দোও। ডার্বিতে সম্ভবত শুরু থেকেই সুহেলকে খেলাবেন তিনি। কলকাতা লিগে আগের ম্যাচে সুহেলকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। ফলে ডার্বিতে তাঁর খেলার সম্ভাবনা প্রবল।
সুহেল ছাড়াও ডার্বিতে প্রথম একাদশে রাখা হতে চলেছে দিমিত্রি পেত্রাতোসকে। আইএসএলের ফাইনালে মোহনবাগানকে জেতাতে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনিই। গত মরসুমে তাঁকে নেওয়া হয়েছিল। প্রথম থেকেই গোল করাটা অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছিলেন। অল্পের জন্যে আইএসএলের সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়া হয়নি তাঁর।
মনবীরকে সম্ভবত ফরোয়ার্ড হিসাবে খেলানো হবে না। তিনি রাইট উইং থেকে খেলতে পারেন। অতীতে ডার্বিতে তাঁর গোল করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই ধরনের ম্যাচে খেলে অভ্যস্ত। চাপটা জানেন। ফেরান্দোর তুরুপের তাস হতে পারেন তিনি। এ ছাড়া বাঁ দিকে খেলা লিস্টন কোলাসোও গোল করতে অভ্যস্ত।
প্রশ্ন রয়েছে কামিংস এবং সাদিকুকে নিয়ে। ফেরান্দো কখনওই নিজের ভাবনা আগে থেকে বুঝতে দেন না। দুই ফুটবলারেরই রেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্রথম একাদশে থাকার সম্ভাবনা একটু হলেও কম। তবে দুই খেলোয়াড়ই পরের দিকে নামতে পারেন।
ইস্টবেঙ্গল
মোহনবাগানের ফরোয়ার্ডদের তালিকা শেষ হবে না। সেখানে ইস্টবেঙ্গলের ফরোয়ার্ডদের সংখ্যা খুঁজতে গেলে ঘাম হতে বাধ্য। দলের তারকা ফরোয়ার্ড ক্লেটন সিলভা শনিবারই কলকাতায় আসছেন। তাঁকে খেলানো হবে না সেটা ধরেই নেওয়া যায়। এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে, কেন দলের এমন গুরুত্বপূর্ণ এক জন ফুটবলারকে এত দেরি করে নিয়ে আসা হল?
ক্লেটন অবশ্য গত বারের মতো একা নন। এ বার তাঁর পাশে থাকবেন জেভিয়ার সিভেরিয়ো। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে অভিষেক এবং প্রথম গোল পেয়ে গিয়েছেন ডুরান্ডের প্রথম ম্যাচেই। কিন্তু দলকে জেতাতে পারেননি। ইস্টবেঙ্গলকে সাফল্য এনে দিতে গেলে প্রাক্তন দল হায়দরাবাদের থেকেও বেশি পরিশ্রম করতে হবে সিভেরিয়োকে। তবে বয়স কম, এটা তাঁর পক্ষে যেতে পারে।
এ ছাড়া ফরোয়ার্ড বলতে ইস্টবেঙ্গল দলে রয়েছেন ভিপি সুহের। কিন্তু তিনি গোল কতটা চেনেন, সেটা নিয়ে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদেরই সন্দেহ রয়েছে। প্রচুর সহজ গোল মিস্ করেছেন তিনি। কেন তাঁকে দলে রাখা হয়েছে এটাই বড় প্রশ্ন।
ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে আশার কথা, মিডফিল্ডার বোরজা হেরেরা এবং নাওরেম মহেশের মতো ফুটবলারেরাও গোল করতে পারেন। ফলে পিছন থেকে উঠে এসে গোলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy