ডায়মন্ড হারবারকে দাঁড়াতেই দিল না মোহনবাগান। ডুরান্ড কাপে গ্রুপের শেষ ম্যাচে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে ৫-১ গোলে হারাল তারা। শীর্ষে থেকেই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেল সবুজ-মেরুন। শুধু বিদেশিরা নয়, গোল পেলেন স্বদেশিরাও। মোহনবাগানের হয়ে গোল করেন অনিরুদ্ধ থাপা, জেমি ম্যাকলারেন, লিস্টন কোলাসো, সাহাল সামাদ এবং জেসন কামিংস। ডায়মন্ড হারবারের একমাত্র গোল লুকা মায়সেনের।
চলতি মরসুমে আই লিগে খেলবে ডায়মন্ড হারবার। সে কারণে শক্তিশালী দলও তৈরি করেছে তারা। পঞ্জাব এফসি থেকে মায়সেনকে আনার পাশাপাশি ক্লেটন সিলভেইরার মতো বিদেশিকেও সই করিয়েছে। ডুরান্ডে বিএসএফ-কে আট গোল দেওয়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন, মোহনবাগানের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করবে তারা। তবে দিনের শেষে ম্যাচ একপেশে হয়ে গেল। দেশের সেরা দলের সঙ্গে তাদের ফারাক কতটা, সেটা বুঝে গেল ডায়মন্ড হারবার। পাঁচটি গোলই তারা হজম করেছে রক্ষণের দোষে। তা-ও মোহনবাগান খেলেছে পুরো শক্তি ছাড়াই। চোট-আঘাতের জন্য অনেক খেলোয়াড়ই বাইরে ছিলেন।
এ দিন ম্যাচের শুরুটা ডায়মন্ড হারবারই ভাল করেছিল। বলের দখল নেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে তারা। মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা প্রথম একাদশে রেখেছিলেন ম্যাকলারেনকে। শুরুর কয়েক মিনিট মোহনবাগান প্রতিপক্ষকে মেপে নিয়ে ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেরোতে শুরু করে। ১৫ মিনিটের মাথায় একটা ভাল সুযোগ নষ্ট করেন ম্যাকলারেন। সামনে বিপক্ষ গোলকিপারকে পেয়েও তাঁর গায়ে মারেন।
১৯ মিনিটে প্রথম গোল পায় মোহনবাগান। নিজেদের মধ্যে পাস খেলতে গিয়ে বল হারান ডায়মন্ড হারবারের ফুটবলারেরা। সাহাল সেই বল কেড়ে নিয়ে পাস দেন থাপাকে। দূর থেকে নিখুঁত শটে গোল করেন থাপা। পাঁচ মিনিট পরেই সমতা ফেরায় ডায়মন্ড হারবার। মোহনবাগানের রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে গোল করেন মায়সেন। কিছু করার ছিল না বিশাল কায়েথের।
প্রথমার্ধেই এগিয়ে যায় মোহনবাগান। ডায়মন্ড হারবার ফুটবলারদের ভুল পাসের সুযোগ নিয়ে গোল করেন। বাকি সময়টা দুই দলই গোল করার ভাল সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাকলারেনের পরিবর্তে নামেন জেসন কামিংস। শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যে পেনাল্টি পায় মোহনবাগান। লিস্টনকে বক্সের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবারের নরেশ। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে লাল কার্ড দেখান। পেনাল্টি থেকে গোল করেন লিস্টনই। ডুরান্ডের তিনটে ম্যাচেই গোল করলেন তিনি।
এর পর শুধু মোহনবাগানই দাপট দেখাতে থাকে। মাঝমাঠও নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে তারা। দশ জনে হয়ে যাওয়ায় ডায়মন্ড হারবারের খেলার মধ্যেও সেই ঝাঁজ হারিয়ে যায়। সুযোগের সদ্ব্যবহার করে আরও দুটো গোল করে মোহনবাগান। ৬৪ মিনিটে ৪-১ করেন সাহাল। বাঁ দিক থেকে কামিংসের পাসে পা ছোঁয়াতে পারেননি কেরলের ফুটবলার। কিন্তু পাশে থাকা ডায়মন্ড হারবারের এক ফুটবলারের পায়ে লেগে সেই বল আসে সাহালেরই কাছে। হালকা স্পর্শে বল জালে জড়ান তিনি।
আরও পড়ুন:
ডায়মন্ড হারবারের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেন কামিংস। খেলা শেষের দশ মিনিট আগে ডান দিক থেকে পাস পেয়ে সময় নিয়ে বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে গোল করেন কামিংস।
এই ফলাফলের পরে ডায়মন্ড হারবার দ্বিতীয় স্থানে নেমে গেল। তাদের পয়েন্ট ছয় হলেও গোলপার্থক্য কমল অনেকটাই। এখন দেখার, সেরা দ্বিতীয় দল হয়ে তারা নকআউটে যেতে পারে কি না।