Advertisement
E-Paper

আ মরি বাংলা ভাষা! লাল-হলুদের পর যুবভারতীতে ব্যানার ওড়াল সবুজ-মেরুন

ইস্টবেঙ্গলের পথে হাঁটল মোহনবাগান। ডুরান্ড কাপে লাল-হলুদের ম্যাচে যুবভারতীর গ্যালারিতে বাংলা ভাষার ‘অবমাননা’ নিয়ে ব্যানার দেখা গিয়েছিল। সবুজ-মেরুনের ম্যাচেও সেই ছবি দেখা গেল।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৫ ২০:৩৪
football

মোহনবাগান গ্যালারিতে দেখা গেল একের পর এক ব্যানার। ছবি: সংগৃহীত।

তিন দিন আগে বাংলা ভাষার ‘অবমাননা’ নিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা। যুবভারতীর লাল-হলুদ গ্যালারিতে দেখা গিয়েছিল ব্যানার। সে দিন থেকেই বাংলার মানুষের নজর ছিল শনিবারের দিকে। সে দিন যুবভারতীতে ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাবের বিরুদ্ধে খেলা ছিল মোহনবাগানের। সবুজ-মেরুন গ্যালারিতেও সেই ছবি দেখা যায় কি না, সেই জল্পনা চলছিল। দেখা গেল। একটা ব্যানার নয়। অন্তত পাঁচটা। আ মরি বাংলা ভাষা নিয়ে সোচ্চার হলেন সবুজ-মেরুন সমর্থকেরা। আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর দুই প্রধানের সমর্থকেরা একসঙ্গে পথে নেমেছিলেন নির্যাতিতার ন্যায়বিচারের দাবিতে। আরও একটা ইস্যুতে এক হলেন তাঁরা।

শনিবারের ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে নিজের সমাজমাধ্যমের পাতায় যুবভারতীতে লাগানো একটা ব্যানারের ছবি দেন মোহনবাগানের নতুন সচিব সৃঞ্জয় বসু। সেখানে লেখা, “শহিদের রক্ত, কবির নোবেল। ভারতের মুকুটে বাংলা জুয়েল।” নেপথ্যে বাজছিল স্বর্গীয় প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া “আমি বাংলায় গান গাই।” এই ব্যানার থেকে স্পষ্ট, কী বোঝাতে চেয়েছেন বাগান সমর্থকেরা। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে বহু বাঙালি শহিদ হয়েছেন। নোবেল পুরস্কার পেয়ে দেশের মান বাড়িয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাই বাংলাকে ভারতের মুকুট বলে উল্লেখ করেছেন তাঁরা।

ঘটনাচক্রে ডুরান্ডের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মোহনবাগান যে ডায়মন্ড হারবারের মুখোমুখি সেই ক্লাবের মালিক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বাংলা ভাষার ‘অবমাননা’ নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। সংসদে তাঁর নেতৃত্বেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলেছে তৃণমূল-সহ সব বিরোধী দল। সেই অভিষেকের দলের বিরুদ্ধে ম্যাচের সময়ই ব্যানার দেখা গেল মোহনবাগান গ্যালারিতে। বাগান জনতা বুঝিয়ে দিল, মাঠে যতই অভিষেকের দলের বিরুদ্ধে লড়াই হোক না কেন, মাঠের বাইরে বাংলা ভাষার ‘সম্মান রক্ষার’ লড়াইয়ে তাঁরা তৃণমূল সাংসদের সঙ্গেই রয়েছেন।

শনিবার যুবভারতীর গ্যালারিতে যে কয়েকটা ব্যানার দেখা গেল, তার একটাই লেখা, “জন গণ মন বন্দেমাতরম। বাংলা ভাষা মায়ের সমান।” আর একটা ব্যানারে লেখা, “বাংলা আমার মায়ের ভাষা, আমার ধাত্রীভূমি। আমরা মোহনবাগানী।” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার দুটো লাইনও দেখা গেল গ্যালারিতে। সেখানে লেখা, “বাঙালির পণ, বাঙালির আশা, বাঙালির কাজ, বাঙালির ভাষা..সত্য হউক, সত্য হউক, সত্য হউক, হে ভগবান।” এই রাজ্যের মাটিতে যে জাতপাতের খেলা হবে না, সেই হুঁশিয়ারিও দিয়ে দিয়েছে মোহন জনতা। ব্যানারে লেখা হয়েছে, “দেশটা কারও বাপের নয়, নয়কো জাতের খেলা। এই বাঙালিই ঘুচিয়েছিল পরাধীনতার জ্বালা।” ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালিদের অবদান মনে করিয়ে দিতেই সেই ব্যানার লাগানো হয়েছে যুবভারতীতে। প্রতিটা ব্যানারে স্পষ্ট, বাংলা ও বাঙালি আবেগ।

গত বছর আরজি করের ঘটনার পরে যৌথ প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকেরা। ওই ঘটনার পরে নাগরিক বিক্ষোভের আবহে এই ডুরান্ড কাপেরই ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ বাতিল করেছিল প্রশাসন। সেই বাতিল ম্যাচের দিনেও অঝোর বৃষ্টি উপেক্ষা করে যুবভারতীর আশেপাশে জড়ো হয়েছিলেন দুই প্রধানের সমর্থকেরা। যোগ দিয়েছিলেন কলকাতা ময়দানের তৃতীয় প্রধান মহমেডান ক্লাবের সমর্থকেরাও। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাস। সে দিনের সেই প্রতিবাদে যোগ দিয়েছিলেন মোহনবাগানের অধিনায়ক শুভাশিস বসু। সবুজ-মেরুন ভক্তের কাঁধে দেখা গিয়েছিল লাল-হলুদ সমর্থককে। স্লোগান উঠেছিল, ‘আমাদের বোনের বিচার চাই।’ কলকাতা লিগের বিভিন্ন ম্যাচে গোলপোস্টের পিছনের গ্যালারিতে প্রতিবাদী ব্যানার-টিফো দেখা গিয়েছিল। তাতে লেখা থাকত, ‘তিলোত্তমার রক্ত চোখ, আঁধার রাতে মশাল হোক’।

ঘটনাচক্রে, শনিবারই আরজি করের ঘটনার এক বছর পূর্ণ হয়েছে। কলকাতার রাস্তায় একের পর এক মিছিল হয়েছে। ঠিক সেই সময় অন্য এক প্রশ্নে প্রতিবাদের মঞ্চ হয়ে উঠল ফুটবল মাঠের গ্যালারি। সেখানে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান একই দিকে।

Mohun Bagan Durand Cup 2025
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy