Advertisement
E-Paper

নারীদিবসে ‘মোহন-ভারতীতে’ ঢল মহিলা সমর্থকদের, গোয়া ম্যাচের আগেই উৎসবের পরিবেশ

শনিবার আন্তর্জাতিক নারীদিবস। সে দিনই মোহনবাগান বনাম গোয়ার ম্যাচ। সবুজ-মেরুনের শিল্ড হাতে তোলার রাত। সেই উপলক্ষেই স্টেডিয়ামে দেখা গেল প্রচুর মহিলা সমর্থককে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৫ ১৯:৪৪
football

মোহনবাগানের মহিলা সমর্থকেরা। ছবি: সমাজমাধ্যম।

বাইপাসের ধারে একটি বিলাসবহুল হোটেলের পাশের রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসছিলেন তাঁরা। গায়ে সবুজ-মেরুন জার্সি। হাতে হাত রেখে মুখে স্লোগান, ‘জয় মোহনবাগান’। জিজ্ঞাসা করতে জানা গেল, সদ্যবিবাহিত ওই দম্পতি হলেন রিম্পা এবং শুভম হালদার। আসছেন মধ্যমগ্রাম থেকে। প্রথম বার স্টেডিয়ামে এসে মোহনবাগানের খেলা দেখার আনন্দে উত্তেজনা তর সইছে না রিম্পার। বললেন, “এ রকম একটা স্মরণীয় মুহূর্তের সাক্ষী থাকার লোভ কেউ সামলাতে পারে! এখনও হানিমুনে যাইনি। তার আগেই চলে এসেছি মোহনবাগানের খেলা দেখতে।”

রিম্পা একাই নন, শনিবার মোহনবাগানের সঙ্গে গোয়ার ম্যাচ শুরুর আগে স্টেডিয়ামের বাইরে এ রকম অসংখ্য খণ্ড খণ্ড চিত্র দেখা গেল। এ দিন আন্তর্জাতিক নারী দিবস। একই সঙ্গে মোহনবাগানের শিল্ড হাতে তোলার রাত। এই যুগলবন্দি কেউ ছাড়তে চাননি। শনিবার বিকেল থেকে যুবভারতী হয়ে গেল ‘মোহন-ভারতী’। ম্যাচ শুরুর আগে থেকেই দেখা গেল প্রচুর মহিলা সমর্থককে। কেউ এসেছেন স্বামীর সঙ্গে। কেউ প্রেমিকের সঙ্গে। কেউ দাদা বা ভাইয়ের সঙ্গে।

মুর্শিদাবাদ থেকে আসা বছর পঞ্চাশেকের মহিলা সমর্থক সুতপা অধিকারীকে দেখা গেল যুবভারতীর এক নম্বর গেটের বাইরে। স্বামী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে খেলা দেখতে এসেছেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভাইও। বললেন, “এত দূরে থাকি। বহু দিন ধরে স্বপ্ন থাকলেও কোনও দিন মোহনবাগানের খেলা মাঠে এসে দেখতে পারিনি। এ বার ভাই জোর করেছিল, একটা খেলা মাঠে এসে দেখতেই হবে। সেটাও হচ্ছিল না। কিন্তু আজকের ম্যাচের থেকে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আর হয়! তার উপর আজ আন্তর্জাতিক নারীদিবস। থাকতে পারলাম না বাড়িতে। সকালেই মুর্শিদাবাদ থেকে এসেছি। আর এখন মাঠে।”

কিছু দূর এগিয়ে পাওয়া গেল ঘোষ দম্পতিকে। একমাত্র সন্তানকে নিয়ে খেলা দেখতে এসেছেন সোনারপুর থেকে। ১৯১১ সালে ঐতিহাসিক আইএফএ শিল্ড জয়ের ম্যাচে যার গোলে ম্যাচ জিতেছিল মোহনবাগান, সেই অভিলাষ ঘোষের নামানুসারেই নিজের ছেলের নাম রেখেছেন। অভিলাষের বাবা সুদীপ ঘোষ বললেন, “আমি ছোট থেকেই মোহনবাগানের সমর্থক। পদবিও ঘোষ। আগে থেকেই ঠিক রেখেছিলাম যদি ছেলে হয়, নাম রাখব অভিলাষ। সেটাই করেছি।” সুদীপের স্ত্রী মণিমালার শোনালেন অন্য এক গল্প। বললেন, “লাল-হলুদ রংয়ে ওর সাংঘাতিক অ্যালার্জি। বিয়ের পর একটা লাল-হলুদ শাড়ি কিনেছিলাম। ওর চাপাচাপিতে সেটা এক আত্মীয়কে দিয়ে দিতে হয়েছে।” পাশে থাকা সুদীপের মুখে তখন লাজুক হাসি।

সবাই কি শুধুই খেলা দেখতে এসেছেন? তেমনটা একেবারেই নয়। দু’নম্বর গেটের বাইরেই দেখা হল শ্যামলী সরকারের সঙ্গে। নিউ ব্যারাকপুর থেকে আসা শ্যামলী এক টানা চিৎকার করছিলেন, “একটা দেড়শো, জোড়া আড়াইশো।” সামনে বিভিন্ন রকমের জার্সির মেলা। ম্যাচ শুরুর আগে তাঁকে ছেঁকে ধরেছেন মোহনবাগান সমর্থকেরা। হু হু করে বিকোচ্ছে জার্সি। তাঁর ফাঁকেই শ্যামলী মুখে হাসি রেখেই বললেন, “হাজার চারেক টাকার জার্সি বিক্রি করে ফেলেছি। এখনও অনেক রয়েছে। আশা করি দশ হাজার টাকার বিক্রি হয়ে যাবে।”

রিম্পা, সুতপা, মণিমালা নয়, নারীদিবসে মোহনবাগান হাসি ফোটাল শ্যামলীর মুখেও।

Mohun Bagan ISL 2024-25 FC Goa
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy