মাঠের মধ্যে পরিস্থিতি সামলাতে এ ভাবেই পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়। —ফাইল চিত্র
প্রিয় দলের খেলা থাকলে মাঠে না গিয়ে থাকতে পারতেন না ইন্দোনেশিয়ার যুবক অ্যান্ডি হারিয়ান্তো। সে দিনও গিয়েছিলেন। কিন্তু ভাবতে পারেননি, সেই যাওয়া তাঁর শেষ যাওয়া হবে। আর কোনও দিন মাঠে যাওয়া তো দূর, ফুটবলই দেখবেন না অ্যান্ডি। কারণ, প্রিয় ফুটবল তাঁর জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে। বেঁচে গিয়েছেন তিনি ও ছোট্ট ছেলে। এখনও আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার ৪০ বছরের যুবককে।
গত শনিবার ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল লিগে জাভার দুই ক্লাব আরেমা এবং পার্সিবায়া সুরাবায়ার মধ্যে খেলা ছিল। সেই ম্যাচেই সমর্থকদের মধ্যে সঙ্ঘর্ষ হয়। অনেক মানুষ প্রাণ হারান। সেই তালিকায় রয়েছেন অ্যান্ডির স্ত্রী ও দুই মেয়ে।
ঠিক কী হয়েছিল সে দিন? অ্যান্ডি বলেন, ‘‘আমরা গ্যালারিতেই ছিলাম। হঠাৎ পুলিশ গ্যালারিতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ল। মুহূর্তের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গেল। ছেলে আমার কোলে ছিল। কিন্তু বাকিরা আলাদা হয়ে গেল। ওদের বাঁচাতে পারলাম না।’’
পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পরে মেয়েদের দেহ দেখতে পান অ্যান্ডি। তিনি বলেন, ‘‘যখন পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হল তখন আমার স্ত্রী ও মেয়েদের খোঁজ শুরু করি। মৃতদেহের স্তূপের মধ্যে মেয়েদের দেহ পাই। কিন্তু স্ত্রীকে পাচ্ছিলাম না। পরে জানতে পারি, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ওকে। সেখানে গিয়ে ওর মৃতদেহ দেখতে পাই।’’
ফুটবল অতীত। এখন শুধু ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে চান অ্যান্ডি। তিনি বলেন, ‘‘আর কোনও দিন ফুটবল দেখব না। এখন শুধু ছেলের কথা ভাবতে চাই। ওকে কী ভাবে বড় করব সে কথাই ভাবছি। আর কিছু নয়।’’
শনিবারের সেই ম্যাচে আরেমা ২-৩ ব্যবধানে হেরে যায়। এর পরেই দু’দলের সমর্থকরা সঙ্ঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সেই ঘটনায় এক সরকারি আধিকারিক ১৭৪ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিলেন। ১৮০ জনের আহত হওয়ার কথাও জানান তিনি। পরে ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভা প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা ১২৫। শহরের ১০টি হাসপাতালের মিলিত তথ্যের ভিত্তিতেই এই সংখ্যা। এই ঘটনার কারণে আরেমাকে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৩ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন শৃঙ্খলা কমিটির আধিকারিক এরউইন টবিং। আরেমা ক্লাবের দুই আধিকারিককে আজীবন নির্বাসিত করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy