যুযুধান দু’ দলের দুই কোচ। সৌমিক ও কিবু। —ফাইল চিত্র।
নতুন ইনিংস শুরু করেছেন ইস্টবেঙ্গলের ঘরের ছেলে বলে পরিচিত সৌমিক দে। দিন দু’য়েক হল রেনবো এফসি-র রিমোট কন্ট্রোল হাতে তুলে নিয়েছেন তিনি। রবিবার মোহনবাগানের বিরুদ্ধে কোচ হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটতে চলেছে ইস্টবেঙ্গলের বহু যুদ্ধের এই সৈনিকের।
নিজের ফুটবল জীবনে পঞ্চাশটারও বেশি ডার্বি ম্যাচ খেলেছেন সৌমিক। ২০০৭-এ তাঁর গোলেই সবুজ-মেরুনকে হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। রবিবার তাঁর কাজ কতটা কঠিন? প্রশ্নটা শুনে এক মুহূর্তও না ভেবে সৌমিক বললেন, ‘‘কোচিং লাইসেন্স করার সময়েই বুঝেছি কোচ হিসেবে কাজটা সত্যিই কঠিন। আগে নিজে মাঠে নেমে খেলতাম। এখন ইচ্ছা করলেও আমি মাঠে নেমে খেলতে পারব না। কোচ হিসেবে মাঠের বাইরে থেকে আমি ছেলেদের পরামর্শ দেব। সেই মতো ওদের খেলতে হবে। কোচ হিসেবে আমার সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’’ কোচ হিসেবে যেমন সীমাবদ্ধতা রয়েছে সৌমিকের, তেমনই কলকাতা লিগে তাঁর দল রেনবো মোটেও ভাল জায়গায় নেই। ৬ ম্যাচ খেলে মাত্র ৬ পয়েন্ট নিউ ব্যারাকপুরের দলটির। সৌমিক হাতে পাচ্ছেন মাত্র পাঁচটি ম্যাচ।
খেলোয়াড় জীবনেও লড়েছেন বহু কঠিন লড়াই। ভয়-ভীতি তাঁর অভিধানে ছিল না। আরও একটা কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়ানো সৌমিক বলছেন, ‘‘হাতে খুবই কম সময় পেয়েছি। কোচিং লাইসেন্স করার পরে কোচিংয়েই আসতাম। একটা প্ল্যাটফর্মের দরকার ছিল। রেনবো কর্তাদের ধন্যবাদ। ওঁরা আমাকে সুযোগ দিয়েছেন। রেনবো দলটাকে দেখে আমার বেশ ভালই লেগেছে। ছেলেরা বেশ চনমনে। বাঙালি ছেলেদের বেশ ভাল লাগল। তবে লিগে এই মুহূর্তে ভাল জায়গায় নেই দলটা। সেটাই আমাকে অবাক করেছে। এত ভাল টিম অথচ রেজাল্ট পাচ্ছে না। আমার কাজটা কঠিন। তবে দয়িত্ব যখন নিয়েছি, তখন ছেড়ে দেব না।’’
আরও পড়ুন: টক্করে বিরাট-রোহিত, ধর্মশালায় একাধিক রেকর্ডের সামনে ভারতের সেরা দুই
আরও পড়ুন: ‘প্রতিভাবান, কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই বিপদ পন্থের’ বললেন লান্স ক্লুজনার
কিবু ভিকুনার মোহনবাগান আগের ম্যাচ হেরে গিয়েছে এরিয়ানের কাছে। রবিবাসরীয় ম্যাচে মরিয়া হয়ে ঝাঁপাবেন বেইতিয়া, ফ্রান গঞ্জালেসরা। সবুজ-মেরুনকেও তো ফিরতে হবে লিগের লড়াইয়ে। লিগ তালিকায় বাগান এখন পাঁচ নম্বরে। সৌমিক বলছেন, “মোহনবাগান শেষ ম্যাচটা হেরে গিয়েছে। হেরে যাওয়া দল যখন মাঠে নামে, তখন তার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দু’দিকই থাকে। নেতিবাচক দিক হল, দলকে নড়বড়ে দেখায়। আর ইতিবাচক দিক হল, জয়ের রাস্তায় ফেরার জন্য মরিয়া থাকে। মোহনবাগানও আমাদের বিরুদ্ধে ঝাঁপাবে। ছেলেদের বুঝিয়েছি তা। ওদের বলেছি, সহজ সরল ফুটবল খেলো। অতিরিক্ত কিছু করে দেখানোর দরকার নেই।’’
ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে সহজ-সরল ফুটবলই খেলতেন সৌমিক। ২০০৫ সালে লাল-হলুদে সই করেছিলেন তিনি। ১১ বছর কাটানোর পরে ইস্টবেঙ্গলে তিনি হয়ে গিয়েছিলেন ঘরের ছেলে। এই ২০১৯-এ এসে বদলে গিয়েছে তাঁর ভূমিকা, বদলে গিয়েছে ক্লাবের নাম। কিন্তু, সৌমিকের হৃদয়ে ইস্টবেঙ্গল এখনও ঝড় তোলে। হৃদয়ে যে নাম লেখা হয়ে যায়, সেই নাম কি আর মোছা যায়! সবার কাছে রবিবারের ম্যাচটা রেনবোর সঙ্গে মোহনবাগানের। সৌমিকের কাছে ম্যাচটা যেন সেই ইস্ট-মোহনের চিরন্তন লড়াই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy