Advertisement
E-Paper

রাগবিতে জাতীয় স্তরে গজলডোবা

রাগবি খেলার হাত ধরে এর আগেই উত্তরবঙ্গে পরিচিতি পেয়েছিল গজলডোবা উচ্চ বিদ্যালয়। এ বারে আন্তঃরাজ্য প্রতিযোগিতায় ছাত্রীদের সাফল্যে রাগবিতে জাতীয় স্তরে পরিচিতি পেল ডুয়ার্সের প্রত্যন্ত গ্রামের এই স্কুল।

সব্যসাচী ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৫ ০২:২৪
রাগবিতে জয়ের পরে গজলডোবার পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।

রাগবিতে জয়ের পরে গজলডোবার পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।

রাগবি খেলার হাত ধরে এর আগেই উত্তরবঙ্গে পরিচিতি পেয়েছিল গজলডোবা উচ্চ বিদ্যালয়। এ বারে আন্তঃরাজ্য প্রতিযোগিতায় ছাত্রীদের সাফল্যে রাগবিতে জাতীয় স্তরে পরিচিতি পেল ডুয়ার্সের প্রত্যন্ত গ্রামের এই স্কুল।

জুলাই মাসে আন্তঃরাজ্য রাগবি টুর্নামেন্টে পুরুষ এবং মহিলা বিভাগে দ্বিতীয় স্থান পায় পশ্চিমবঙ্গ। এদের মধ্যে মেয়েদের ১২ সদস্যের দলে ৮ জনই গজলডোবা স্কুলের পড়ুয়া এবং সরস্বতীপুর চা বাগানের বাসিন্দা। বাংলা রাগবি দলের অধিনায়ক এবং সহ অধিনায়কও গজলডোবার দুই ছাত্রী। বৃহস্পতিবার বাংলা দলের কোচ গজলডোবার আট পড়ুয়া খেলোয়াড়কে নিয়ে ট্রফি সঙ্গে করে স্কুলে আসেন। এর পরেই উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙে গজলডোবা উচ্চ বিদ্যালয়ে। স্কুলটি থেকে স্বপ্না ওরাওঁ, সন্ধ্যা রাই, কৃষ্ণা ওরাওঁ, সুমন ওরাওঁ, পুনম ওরাওঁ, চন্দা ওরাওঁ, লক্ষ্মী ওরাওঁ, মেনকা কারোয়ারা বাংলা দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। স্বপ্না বাংলা দলের অধিনায়ক, সন্ধ্যা সহ অধিনায়ক। এই দলের বেশির ভাগই দশম থেকে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া।

বাংলা দলের কোচ কলকাতার বাসিন্দা রোশন খাখা জানান, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত এবং উত্তরবঙ্গের গজলডোবা স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে জুলাই মাসের গোড়ায় কলকাতার পার্কস্ট্রিটে একটি বেসরকারি রাগবি প্রসার সংস্থার মাঠে বাংলা দলের ক্যাম্প আয়োজিত হয়। সেখানেই বাংলা মহিলা রাগবি দলের প্রথম ১২ জনের চূড়ান্ত দল তৈরি করা হয়। সেই দলে ওই আট ছাত্রী স্থান পেয়ে যায়। এর পর গত ২৪, ২৫ এবং ২৬ জুলাই পটনার পাটলিপুত্র স্পোর্টস কমপ্লেক্সে বিহার রাগবি অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আন্তঃরাজ্য প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়। এখানে মহারাষ্ট্রকে ১২-৫ ট্রাইতে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে পৌঁছয় বাংলা দল। কিন্তু ফাইনালে ওড়িশার কাছে পরাজিত হয়ে দ্বিতীয় স্থান পায় বাংলা মহিলা রাগবি দল। ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, তামিলনাড়ু, কেরালার মতো মোট ১০টি রাজ্য টুর্নামেন্টে অংশ নেয়।

এ দিন স্কুলে পৌঁছেই প্রধান শিক্ষক দিলীপকুমার রায়ের হাতে বিরাট ট্রফি ধরিয়ে দেন পড়ুয়ারা। স্বপ্না, মেনকা বলেন, ‘‘দু’বছর ধরে রাগবি খেলছি। তার আগে খেলার নিয়ম কিছুই জানতাম না, এখন খেলাটা এত ভাল লেগে গিয়েছে যে, এই খেলা আঁকড়েই বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখছি।’’ প্রধান শিক্ষক দিলীপকুমার রায় এবং রাগবিতে উৎসাহী শিক্ষক চিরঞ্জীব নাথ জানান, একটি সর্বভারতীয় বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গত দু’বছর আগে স্কুলের ছেলে মেয়েদের মধ্যে রাগবি খেলার প্রসার ঘটায়। আমাদের উৎসাহে অনেকেই এই নতুন খেলা শুরু করে। তবে ছেলেদের ছাপিয়ে মেয়েরাই খেলায় নিজেদের বেশি প্রতিষ্ঠিত করছে বলে দাবি তাঁদের।

গজলডোবা থেকে ছেলেরাও এ বার রাজ্য স্তরের বাছাই পর্বে কলকাতায় গেলেও কেউই চূড়ান্ত তালিকায় আসতে পারেনি। সেখানে মেয়েরাই বাজিমাত করেছে। বাংলা দলের কোচ রোশন খাখার কথায়, ‘‘সামনেই গোয়ায় জাতীয় রাগবি চ্যাম্পিয়ানশিপের আসর বসবে। সেখানে যদি ওরা একই রকম ফল ধরে রাখতে পারে, তা হলে গজলডোবার অনেক মেয়েরাই জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেতে পারবে। আর্থিক পুরস্কারের পাশাপাশি ভবিষ্যতে বিদেশে গিয়ে খেলার সুযোগও তখন খুলে যাবে।’’ মেয়েরা রাগবির মতো বিদেশি একটা খেলা শিখে এত বড় জায়গায় পৌঁছেছে দেখে খুশি মুনু, শ্যামের অভিভাবকেরাও। ওঁদের কথায়, ‘‘স্কুল আর রাগবি শেখানোর কোচেদের জন্যেই এই দিন আমরা দেখতে পেলাম।’’

sabyasachi ghosh gajaldoba school national rugby championship gajaldoba rugby champion gajaldoba school student saraswati tea garden
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy