Advertisement
E-Paper

নিজেদের ওষুধ নিজেরা উপহার পেল জার্মানি

স্তাদ দ্য ফ্রান্স যেন সত্যিই দিনে দিনে আতঙ্ক হয়ে দাঁড়াচ্ছে জার্মানির কাছে। প্যারিসের এই স্টেডিয়ামেই সেই বোমাতঙ্কের মুখে জার্মানরা পড়েছিল ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ফ্রেণ্ডলি খেলতে নেমে।

সুব্রত ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৬ ০৯:৩৬
জার্মান রক্ষণে যে ভাবে বারবার আটকে গেলেন লেভানডস্কিরা।

জার্মান রক্ষণে যে ভাবে বারবার আটকে গেলেন লেভানডস্কিরা।

জার্মানি-০

পোল্যান্ড-০

স্তাদ দ্য ফ্রান্স যেন সত্যিই দিনে দিনে আতঙ্ক হয়ে দাঁড়াচ্ছে জার্মানির কাছে।

প্যারিসের এই স্টেডিয়ামেই সেই বোমাতঙ্কের মুখে জার্মানরা পড়েছিল ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ফ্রেণ্ডলি খেলতে নেমে। বিভিন্ন কাগজ, ইন্টারনেটে দেখছিলাম যে জার্মান প্লেয়াররা এখানে বৃহস্পতিবার ইউরো খেলার আগেও ঘটনাটা নিয়ে বলাবলি করেছে। তখনও বুঝিনি যে, ফ্রান্সের এক নম্বর স্টেডিয়ামে আতঙ্ক শব্দটা জার্মানদের এত দিন পরেও তাড়া করবে।

সোজাসুজি বলছি, জার্মানি আজ হেরে যেতে পারত।

এক-আধটা নয়, অন্তত দু’গোলে হেরে যেতে পারত পোল্যান্ডের মিলিক ওই অবিশ্বাস্য মিসগুলো না করলে। অবাক হয়ে দেখছিলাম, অসহ্য চাপের মুখে পড়ে কেমন যেন ছন্নছাড়া হয়ে গেল জার্মানি। ওজিল, মুলার, খেদিরা— সবাই অদ্ভুত ভাবে মিস পাস করতে শুরু করে দিল। শুনতে খারাপ লাগবে, কিন্তু এই ম্যাচটা পোল্যান্ডেরই ম্যাচ ছিল। ওরা জিতলেই বোধহয় সুবিচার হত।

আসলে নিজেদের ওষুধ নিজেরাই উপহার পেলে যে সমস্যাটা হয় আর কী। প্রথম মিনিট থেকে একটা অদ্ভুত জিনিস দেখছিলাম। জার্মান ফুটবল বলতে আমরা কী বুঝি? মারাত্মক গতি প্লাস পাসিং পারফেকশন। মানে, প্রচণ্ড গতিতে উঠে এসে একদম নিখুঁত পাসে গোলের দরজা খুলে দিয়ে চলে যাবে। সঙ্গে থাকবে দুর্দান্ত ওভারল্যাপিং। একজন প্লেয়ার বল নিয়ে উঠলে তার চারপাশে আরও কয়েক জন সাপোর্টিং প্লেয়ার উঠে আসবে। চাপে দিয়ে-দিয়ে পুরো খেলাটাকেই টেনে আনবে বিপক্ষের হাফে, একটা সময় দমবন্ধ অবস্থায় পড়ে গোল হজম করতে যারা বাধ্য হবে। টনি ক্রুজ, টমাস মুলার, মেসুট ওজিলদের তো এত দিন এটাই করতে দেখেছি। আশ্চর্য হয়ে দেখলাম যে, পোল্যান্ড আচমকা আজ ঠিক সেটা করতে শুরু করল!

ম্যাচ শুরু আগে টানেলের ছবি-টবি দেখলে প্লেয়ারদের মনোভাবের একটা আন্দাজ পাওয়া যায়। সেখানে দেখলাম, মাঠে নামার আগে পোল্যান্ডের রবার্ট লেভানডস্কি খোশমেজাজে আড্ডা দিচ্ছে বায়ার্ন মিউনিখ সতীর্থদের সঙ্গে। পরে মনে হচ্ছিল, জার্মানদের এমন বেকায়দায় ফেলার মাস্টারমাইন্ড লেভানডস্কিই নয় তো? পোল্যান্ড স্ট্রাইকারই টিমমেটদের বলেনি তো যে, জার্মানদের বিরুদ্ধে চলো ওদের স্ট্র্যাটেজিটাই আমরা তুলে আনি? ও নিজে বার্য়ানে খেলে। যেখানে প্রায় অর্ধেকের বেশি জার্মানি টিমটা খেলে। মাঠে মুলাররা কী করতে পারে না পারে, কী ভাবে চাপ দিতে পারে, খুব ভাল জানা আছে লেভানডস্কির। তা ছাড়া বায়ার্ন মিউনিখ স্ট্রাইকার এ দিন অসাধারণ নেতৃত্বও দিয়েছে। কখনও জার্মান ডিফেন্সকে চাপে ফেলেছে, কখনও নীচে নেমে এসে ডিফেন্স করেছে। কখনও আবার স্রেফ চেঁচিয়ে টিমমেটদের উৎসাহ দিয়ে গিয়েছে।

পোল্যান্ড শুধু জার্মানির ফুটবল স্ট্র্যাটেজিটা কপি-পেস্ট করে স্তাদ দ্য ফ্রান্সে বসাচ্ছিল না, জার্মানদের চেয়ে বেশি গতিতে সেটা করে যাচ্ছিল। আক্রমণে যেমন চার-পাঁচ জন একসঙ্গে দ্রুত গতিতে উঠে বোয়াতেংদের ঝামেলায় ফেলে দিচ্ছিল, ঠিক তেমনই প্রচণ্ড গতিতে ডিফেন্স করতে নেমেও আসছিল। পজিটিভ ফুটবল খেলেছে। ডিফেন্স করার সময় কভারিং, ট্র্যাঙ্গুলার কভারিং নিখুঁত ছিল। সেখানে জার্মানরা খেলতে পারল কোথায়? একমাত্র বোয়াতেং ছাড়া কাউকে তো নব্বই মিনিটে চোখে পড়ল না।

ছবি: এপি।

germany poland euro cup 2016
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy