Advertisement
E-Paper

গোয়ার সমুদ্রতট থেকে স্বপ্নের উড়ানে

এক সময় নিজের পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে শুটিং প্র্যাকটিস করতেন। বাবাকে দেখেই উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন ফুটবল খেলতে। ডিফেন্ডার হলেও তাঁর পছন্দের ফুটবলার লিওনেল মেসি।

সোহম দে

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:২৪
মিলিয়ন ডলার কিক ফাইনালে রাজু। -নিজস্ব চিত্র

মিলিয়ন ডলার কিক ফাইনালে রাজু। -নিজস্ব চিত্র

এক সময় নিজের পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে শুটিং প্র্যাকটিস করতেন।

বাবাকে দেখেই উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন ফুটবল খেলতে।

ডিফেন্ডার হলেও তাঁর পছন্দের ফুটবলার লিওনেল মেসি।

কিন্তু এই উঠতি ফুটবলারের জীবন আর কয়েক দিনের মধ্যেই পাল্টাতে চলেছে। ফুটবলের পোস্টের জায়গায় জীবনে আসতে চলেছে ফিল্ড গোল। বল ওড়ানোর জায়গায় তাঁকে মারতে হবে পঞ্চান্ন গজের কিক। কয়েক দিনের মধ্যে বছর বাইশের রাজু হালভাঙ্কর পাড়ি দিতে চলেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তবে ফুটবলার হিসেবে নয়। ‘আমেরিকান’ ফুটবলার হিসেবে। ‘মিলিয়ন ডলার কিক’ বলে একটি প্রতিযোগিতা জিতেছেন রাজু। গোয়ার বাইশ বছরের ছেলে এ বার সুযোগ পাবেন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত লিগ এনএফএল-এর দলে ট্রায়াল দেওয়ার। অথচ, ‘মিলিয়ন ডলার কিক’ জয়ী রাজু কয়েক দিন আগে পর্যন্ত আমেরিকান ফুটবল সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। আনন্দবাজারকে ফোনে রাজু বলছেন, ‘‘হ্যাঁ আমি কিছুই জানতাম না। কয়েকটা হলিউড সিনেমায় দেখেছিলাম। শুধু জানতাম খেলাটায় খুব শারীরিক সক্ষমতা লাগে। নিয়ম সম্পর্কে জানতাম না। প্রতিযোগিতায় বলা হয়েছিল, বলটা যতদূর সম্ভব পাঠাও। দূরে পাঠাতে পেরেছিলাম বলেই জিতেছি।’’

বিভিন্ন শহরে উঠতি প্রতিভাদের নতুন পথ দেখাতেই এই অভিনব প্রয়াস। টুর্নামেন্টের জয়ী যাবেন ‘কিকার’ হিসেবে এনএফএলের কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজিতে ট্রায়াল দিতে। কিকার অর্থাৎ আমেরিকান ফুটবলে যাঁদের কাজ ফিল্ড গোলের সময় বা দলকে একস্ট্রা পয়েন্ট দিতে কিক মারা। রাজু বললেন, ‘‘আমি ডিফেন্ডার। রাইট ব্যাকও খেলি। তাই অনেক সময় ক্লিয়ারেন্স করতে হয়। ছোটবেলা থেকেই আমি পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে শ্যুটিং প্র্যাকটিস করতাম। দূরে দূরে টার্গেটে মারতাম। সেটাই আমায় সাহায্য করল এটা জিততে।’’ রাজু ছাড়াও টুর্নামেন্টে ভাল পারফর্ম করা আরও পাঁচজনকেও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। ফাইনালে ৫৫ গজের কিক মেরে জিতেছিলেন রাজু। প্রতিযোগিতা জেতার অনুপ্রেরণা হিসেবে প্রাক্তন ডেম্পো ও ইস্টবেঙ্গলে খেলা ফুটবলার ক্লাইম্যাক্স লরেন্সের নামও উঠে আসছে। ‘‘ক্লাইম্যাক্স ভাই আমাকে খুব উদ্বুদ্ধ করেছেন। গোয়ার ছেলে হওয়ায় এমনিতেই ক্লাইম্যাক্সের বড় ফ্যান। আমাকে সব সময় উদ্বুদ্ধ করেছেন,’’ বলছেন রাজু।

আরও পড়ুন: ডার্বিতে গোল না পেলেও আমার সময়ে কিন্তু মোহনবাগানের দু’টো ট্রফি আছে

রাজুর পৃথিবী কয়েক দিন আগে পর্যন্ত সীমিত ছিল ফুটবলের মধ্যেই। সালগাওকর জুনিয়র দলে খেলেছেন। গত মরসুমে গোয়ার ক্যালাঙ্গুটে ছিলেন তিনি। রাজুর দাবি, এ বার চার্চিল ব্রাদার্সেও ট্রায়াল দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দল আগেভাগেই তৈরি হয়ে যাওয়ায় ভাগ্য খোলেনি। কয়েক বছর আগেও ‘মিলিয়ন ডলার কিক’-এর আদলেই হয়েছিল ‘মিলিয়ন ডলার আর্ম’। যেখানে উঠতি ক্রিকেটারদের দিয়ে বেসবল পিচিং করানোর প্রতিযোগিতা হয়। যেটা নিয়ে হলিউডের ছবিও হয়েছে। খেলা পাল্টে গেলেও তাঁর বড় কোনও স্পোর্টসম্যান হওয়ার জেদটা এখনও অটুট। ‘‘অনেক বিখ্যাত ক্রীড়াবিদ আছে যারা খেলা পাল্টেও সফল হয়েছে। আমাকেও নিজের সেরাটা দিতে হবে। বাকিটা ভাগ্যের উপর,’’ বলছেন রাজু। মার্কিন মুলুকের স্বপ্নের উড়ান ধরার অপেক্ষায় তিনি!

Vasudev Haldankar Raju Goa NFL
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy