Advertisement
০৬ মে ২০২৪
ব্যাটিংয়েও এখন বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন কুলদীপ

অশ্বিনদের ছিটকে দিইনি, সুযোগ কাজে লাগিয়েছি

ভারতীয় স্পিনাররা এখন যে ভাবে বল করছেন, তাতে খুশি কুলদীপ। প্রথম ওয়ান ডে-তে এই চায়নাম্যান বোলার নিয়েছিলেন দু’উইকেট। জাডেজা উইকেট না পেলেও রান আটকে রেখেছিলেন। কুলদীপ বলছেন, ‘‘সত্যি কথা বলতে কী, আমি, চহাল আর জাড্ডু ভাই ভালই বল করছি। তাই চিন্তার কিছু নেই।’’

নজরে: দ্বিতীয় ওয়ান ডে-তে ভারতের অন্যতম অস্ত্র কুলদীপ। ফাইল চিত্র

নজরে: দ্বিতীয় ওয়ান ডে-তে ভারতের অন্যতম অস্ত্র কুলদীপ। ফাইল চিত্র

কৌশিক দাশ
নাগপুর শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৯ ০৪:২৭
Share: Save:

আধুনিক সীমিত ওভারের ক্রিকেটে রিস্ট স্পিনারদের সামনে আস্তে আস্তে ম্লান হয়ে যাচ্ছেন ফিঙ্গার স্পিনাররা। এই প্রবাদ মেনে কি বলা যায়, আর অশ্বিন, রবীন্দ্র জাডেজাদের মতো ফিঙ্গার স্পিনারদের দলে ফেরার রাস্তা ক্রমে বন্ধ করে দিচ্ছেন আপনাদের মতো রিস্ট স্পিনাররা? অশ্বিন তো পুরোপুরি ছিটকেই গিয়েছেন সীমিত ওভারের দল থেকে। জাডেজা দলের তৃতীয় স্পিনার।

সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে কুলদীপ যাদব বলে উঠলেন, ‘‘না, না সে রকম ব্যাপার নয়। আমরা কাউকে দল থেকে ছিটকে দিইনি। কাউকে বাইরে পাঠাইনি। ব্যাপারটা হল, আমরা সুযোগ পেয়ে সেটা কাজে লাগিয়েছি। আমি আর (যুজবেন্দ্র) চহাল যখনই সুযোগ পেয়েছি, ভাল খেলার চেষ্টা করেছি। দলকে জিততে সাহায্য করেছি। এতে আমরাও খুশি।’’ কুল-চা জুটিকে দেখা যেতে পারে নাগপুরে। চহালকে এই ম্যাচে জাডেজার জায়গায় খেলানোর একটা হাল্কা ভাবনা আছে।

এর পরে কুলদীপ আরও বলেন, ‘‘অ্যাশ (অশ্বিন) আর জাড্ডু ভাই (জাডেজা) এখনও টেস্ট খেলছে। আমরা ওদের থেকে অনেক কিছু শিখছি। আমি যখন টেস্ট দলে থাকি, ওদের অভিজ্ঞতা থেকে শেখার চেষ্টা করি।’’ ভারতীয় স্পিনাররা এখন যে ভাবে বল করছেন, তাতে খুশি কুলদীপ। প্রথম ওয়ান ডে-তে এই চায়নাম্যান বোলার নিয়েছিলেন দু’উইকেট। জাডেজা উইকেট না পেলেও রান আটকে রেখেছিলেন। কুলদীপ বলছেন, ‘‘সত্যি কথা বলতে কী, আমি, চহাল আর জাড্ডু ভাই ভালই বল করছি। তাই চিন্তার কিছু নেই।’’

এমন কোনও বিশেষ ব্যাটসম্যান আছে, যাকে বল করার সময় তিনি একটু চাপে পড়ে যান? কুলদীপের জবাব, ‘‘আমার এমন কারও কথা মনে পড়ছে না। কয়েক জন আছে, যারা হয়তো আমার বিরুদ্ধে ভাল খেলেছে। কিন্তু আমি মার খেতে ভয় পাই না। আমি মনে করি, ব্যাটসম্যান যখন আমার বিরুদ্ধে বড় শট খেলবে, তখন আমারও উইকেট নেওয়ার সুযোগ বাড়বে।’’

কোহালিদের অস্ট্রেলিয়া সফরে দেখা গিয়েছিল এক জন ব্যাটসম্যান এই চায়নাম্যান বোলারকে খুব সামলেছেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার বাঁ হাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান শন মার্শ। যিনি সম্ভবত মঙ্গলবারের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম একাদশে ফিরতে চলেছেন। মার্শ প্রসঙ্গ উঠতেই কুলদীপ বলেন, ‘‘স্পিন বোলিং খুব ভাল খেলে মার্শ। অস্ট্রেলিয়ায় আমার বিরুদ্ধে খুব ভাল খেলেছিল। এর পরে টিম ম্যানেজমেন্ট আমাকে কয়েকটা ম্যাচে বিশ্রাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।’’

মার্শের সঙ্গে আবার তাঁর লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কুলদীপের কথা মতো, এ বার তিনি সে জন্য তৈরি। যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী গলায় এই বাঁ হাতি স্পিনার বলেন, ‘‘আমি এর পরে মার্শের ব্যাটিং খুব মন দিয়ে দেখেছি। এটা দেখেছি, যে ও ফ্রন্টফুটে এসে বেশি খেলে। এতে ও সফল হয়েছে। এ বার দেখা যাক, ওর বিরুদ্ধে কী করা যায়।’’

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১২টি ওয়ান ডে ম্যাচ খেলা হয়ে গেল কুলদীপের। কেউ কেউ মনে করছেন, অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানেরা আস্তে আস্তে কুলদীপ-ধাঁধাটা সমাধান করছেন। যা নিয়ে কুলদীপ বলছেন, ‘‘দু’বছর ধরে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেও অনেক ম্যাচ খেলে ফেলেছি। এখন তো আবার ভিডিয়ো অ্যানালিস্টরা আছে। যারা সব কিছু বিশ্লেষণ করে দেখে। তাই আমাকেও বোলিংয়ে বৈচিত্র আনতে হবে।’’

এই সিরিজ শুরুর আগে কুলদীপ যাঁর কাছে কয়েক দিন অনুশীলন করে এসেছেন, তাঁর সেই ছোটবেলার কোচ কপিল দেব পাণ্ডে কানপুর থেকে ফোনে বলছিলেন, ‘‘কব্জি দেখে বল বোঝা অত সোজা নয়। তা ছাড়া গতির হেরফের করেও ব্যাটসম্যানকে সমস্যায় ফেলা যায়।’’ জানা যাচ্ছে, কুলদীপ একটু জোরের ওপর স্পিন করানোর চেষ্টা করছেন। ‘‘বলের গতিটা একটু বেশি হলে ব্যাটসম্যান স্ট্রোক খেলার সময়টা আরও কম পাবে,’’ বলছিলেন কুলদীপের কোচ। পাশাপাশি তিনি এও বলে দিলেন, ‘‘তবে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, স্পিন বোলিংয়ের মূল তিনটি মন্ত্র ঠিক রাখা। এক, ফ্লাইট। দুই, টার্ন। তিন, লাইন-লেংথ। এই তিনটে জিনিস ঠিক রাখলেই আপনি সাফল্য পাবেন।’’

বোলিংয়ের পাশাপাশি কুলদীপ আরও একটা ব্যাপারে জোর দিচ্ছেন। সেটা হল, ব্যাটিং। নিউজ়িল্যান্ড থেকে ফিরে দু’দিন শুধু কপিল পাণ্ডের কাছে কানপুরে ব্যাটিং অনুশীলন করেছিলেন তিনি। এ দিন বললেন, ‘‘এখন ব্যাটিংটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে ওয়ান ডে আর টি-টোয়েন্টিতে। টেল এন্ডারদের থেকেও টিম আশা করে প্রয়োজনে ওরা রান করে দেবে। সে কথা মাথায় রেখে আমি ব্যাটিংয়ে নজর দিচ্ছি।’’ ঠিক কী করছেন কুলদীপ? ‘‘প্রতিটা নেট সেশনে আমি মিনিট কুড়ি করে ব্যাট করছি। সঞ্জয় বাঙ্গার স্যরের সঙ্গে ব্যাটিং নিয়ে কথা হচ্ছে। উনি নানা পরামর্শ দিচ্ছেন। প্রয়োজনে যাতে হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচগুলোয় শেষ দিকে রান করে দলকে জেতাতে পারি, সেটাও মাথায় রাখছি।’’ দেখা যাচ্ছে, কুলদীপ শুধু বোলিংয়েই নয়, ব্যাটিংয়েও ভরসা হয়ে উঠতে চান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE