Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
দেশে ফিরে সাক্ষীর প্রকল্পে ‘বেটি খিলাও’

‘এই পদকটার জন্য আমি পাগলের মতো খেটেছি’

‘এ বার নিজের ঘর, নিজের দেশে ফিরছি।’ রিও থেকে নয়াদিল্লির উড়ান ধরার আগে টুইট করেছিলেন সাক্ষী মালিক। এ বারের অলিম্পিক্সে ভারতের পদক খরা কাটানো ব্রোঞ্জ-কন্যা সঙ্গে ছবিও টুইট করেছিলেন।

ব্রোঞ্জ-কন্যার দেশে ফেরা। বাবা-মা, ভাইয়ের সঙ্গে নয়াদিল্লির বিমানবন্দরে।

ব্রোঞ্জ-কন্যার দেশে ফেরা। বাবা-মা, ভাইয়ের সঙ্গে নয়াদিল্লির বিমানবন্দরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৩০
Share: Save:

‘এ বার নিজের ঘর, নিজের দেশে ফিরছি।’

রিও থেকে নয়াদিল্লির উড়ান ধরার আগে টুইট করেছিলেন সাক্ষী মালিক। এ বারের অলিম্পিক্সে ভারতের পদক খরা কাটানো ব্রোঞ্জ-কন্যা সঙ্গে ছবিও টুইট করেছিলেন। ব্রেকফাস্ট টেবলে সাজানো খাবার নিয়ে বসে আছেন। লিখেছিলেন, ‘কত দিন আমার প্রিয় খাবারগুলো ছুঁয়ে দেখিনি। উফ কী যে আনন্দ এখন!’

‘আনন্দের সাক্ষী’ দেশের মাটিতে পা রাখলেন বুধবার কাকভোরে। সেখানে তখন অভ্যর্থনা জানাতে উচ্ছ্বাসের জটলা। তবে হরিয়ানার মন্ত্রীদের হম্বিতম্বি বেশি। রোহতক আখড়ার মহিলা কুস্তিগিরদের কাঁধে চেপে তুমুল হর্ষধ্বনির মধ্যে ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখলেন। ভিড়ের মধ্যে নিজের ব্রোঞ্জ পদক উপরে তুলে ভিআইপি লাউঞ্জে ঢুকেই মা সুদেশকে দেখতে পেয়ে এক ছুটে এসে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন। মা-মেয়ের দুজনের চোখেই তখন জলের ধারা। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বাবার চোখেও আনন্দাশ্রু।

পরে একটু ধাতস্থ হয়ে সাক্ষী বললেন ‘‘রিওতে একের পর এক ইভেন্টে ভারতীয় অ্যাথলিটরা যখন ব্যর্থ হচ্ছিলেন, নিজের উপর প্রচণ্ড চাপ বেড়ে গিয়েছিল। আমার ইভেন্টের সময় ঠিক করে ফেলি শেষ পর্যন্ত সেরাটা দেব। তার পর ভাগ্যে যা আছে হবে। তবে রিওর পদকেই গল্প শেষ হবে না। এটা শুরু।’’

উপরে রিও থেকে ফেরার বিমানে। নীচে সংবর্ধনায় প্রথাগত পাগড়ি পরে। বুধবার।

গলায় ঝোলান পদকে চুমু খেয়ে সাক্ষীর আরও প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার এই পদক জয়ের পিছনে রয়েছেন আমার কোচেরা, আমার পরিবার, আমার সতীর্থ ও গোটা দেশবাসীর আশীর্বাদ। আর কুস্তিগিরদের মধ্যে সুশীলকুমার, যোগেশ্বর দত্তরা প্রেরণা দিয়েছেন। এখানে এত লোক দেখে আমি আপ্লুত। আমার জন্য যারা প্রার্থনা করেছেন তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’’ আবেগে ভাসতে ভাসতে সাক্ষী আরও জানাচ্ছেন, ছোটবেলা থেকেই অলিম্পিক্স পদক জয়ের স্বপ্ন দেখতেন। মনের জোর অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছিল গীতা ফোগতের অলিম্পিক্সে যোগ্যতা অর্জন। ‘‘মনে হয়েছিল গীতা যদি পারে তা হলে অন্য ওজন গ্রুপে আমিই বা পারব না কেন? বিশ্বাস করুন, এই পদকটার জন্য বহু দিন পাগলের মতো খেটেছি।’’

তুমুল হর্ষধ্বনির মধ্যেই বিমানবন্দর থেকে সাক্ষীকে নিয়ে গাড়ি রওনা হয়ে যায় রোহতকের উদ্দেশ্যে। ঝাজ্জর জেলার বাহাদুরগড়ে তাঁকে সাদরে গ্রহণ করেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাত্তর। সেখানেও দেওয়া হয় বিশাল সংবর্ধনা। লোকজন হাতে গাঁদা ফুলের মালা নিয়ে লাইন নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। অনেক মালা গেঁথেছিলেন নগদ টাকা দিয়ে। সাক্ষী কাউকেই ফিরিয়ে দেননি। হিড়িক পড়ে যায় তাঁর সঙ্গে সেলফি তোলার। মুখ্যমন্ত্রী সাক্ষীর হাতে তুলে দেন আড়াই কোটি টাকার চেক। সেই সঙ্গে তাঁকে ‘বেটি বাঁচাও-বেটি পড়াও’ প্রকল্পের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করা হলে সাক্ষী যোগ করেন ‘বেটি খিলাও’ ভাবনা। বাহাদুরগড়ে তাঁকে পরানো হয় চিরাচরিত হরিয়ানভি প্রথায় রংচঙে পাগড়ি। সংবর্ধনা শেষ হতে গাড়ি ছোটে তাঁর গ্রাম মোখরার দিকে। সেখানেও ব্রোঞ্জ-কন্যাকে ঘিরে চলল একই রকম উন্মাদনা।

ছবি: পিটিআই ও টুইটার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sakshi Malik Rio Olympics Bronze Medal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE