Advertisement
E-Paper

জামব্রোতার সঙ্গে সেই ফাইনাল নিয়ে কথা হয় না

চেলসির ইতিহাসে অন্যতম সেরা উইঙ্গার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে প্রিমিয়ার লিগ। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের প্রতিটা বড় ট্রফিই রয়েছে তাঁর ক্যাবিনেটে। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফ্রান্সকে বিশ্বকাপ ফাইনালে তুলেছিলেন। হিউম থেকে পোগবা। আটলেটিকো থেকে চেলসি। প্রতিটা বিষয় শুক্রবার শহরে টিম হোটেলের কাফেটেরিয়ায় বসে আনন্দবাজার-কে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন দিল্লি ডায়নামোসের মার্কি ফুটবলার ফ্লোরেন্ট মালুদা। চেলসির ইতিহাসে অন্যতম সেরা উইঙ্গার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে প্রিমিয়ার লিগ। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের প্রতিটা বড় ট্রফিই রয়েছে তাঁর ক্যাবিনেটে। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফ্রান্সকে বিশ্বকাপ ফাইনালে তুলেছিলেন। হিউম থেকে পোগবা।

সোহম দে

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:২৭
টিম হোটেলে মালুদা।-নিজস্ব চিত্র

টিম হোটেলে মালুদা।-নিজস্ব চিত্র

প্রশ্ন: আইএসএলে এটা আপনার দ্বিতীয় মরসুম। অভিজ্ঞতা কী রকম?

মালুদা: খুবই ভাল। গত বারও দিল্লিতে খেলেছিলাম। তাই এ বার সব কিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে সুবিধে হচ্ছে। দিল্লি দলের অধিকাংশ লোককে আমি ব্যক্তিগত ভাবে জানি। সেটা আমায় সাহায্য করছে।

প্র: গত মরসুমে রবের্তো কার্লোস। এ বার জিয়ানলুকা জামব্রোতা। দুই কোচের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?

মালুদা: জামব্রোতা আর কার্লোসের কোচিং স্টাইল একদম আলাদা। জামব্রোতা অনেক বেশি ট্যাকটিক্যালি ডিসিপ্লিনড। প্রতিটা বিপক্ষের খুঁটিনাটি নিয়ে আলাদা করে পড়াশুনো করে।

প্র: আটলেটিকো দে কলকাতার বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচ। দিল্লির মতো কলকাতাও অপরাজিত। আপনার মতে কে এগিয়ে?

মালুদা: (মুখ গম্ভীর করে) দুটো দলই জিততে মরিয়া। আমাদের মতো ওদেরও পয়েন্ট দরকার। লড়াইটা সমানে সমানে হবে। কলকাতা যথেষ্ট ভাল দল। আর আমাদেরও জয়ে ফিরতে হবে।

প্র: কলকাতা তো মার্কিহীন! তাতেও কলকাতা সমানে সমান?

মালুদা: গত মরসুমেও তো পস্টিগা অনেক ম্যাচ খেলতে পারেনি। তাতেও কলকাতা দারুণ খেলেছিল। ওদের দলে আরও অনেক ফুটবলার আছে যারা গ্রেট ট্যালেন্ট।

প্র: যেমন?

মালুদা: ইয়ান হিউমকেই ধরুন। খুব ভাল নেতৃত্ব দিতে পারে দলকে। গত বার এগারোটা গোল করেছিল। বোরহাও আছে। ভাল প্লেয়ার। কলকাতা দলটা খুব ব্যালান্সড।

প্র: এ বার তো সবাই বলছে আইএসএলের বাজার খুব খারাপ। কারও কোনও আগ্রহ নেই!

মালুদা: না না মোটেই নয়। দলের সংখ্যা কম। তাই প্রত্যেক ম্যাচে লড়াইও জমে যাচ্ছে। কারণ খুব দ্রুত পয়েন্ট তুলতে হয়। গত বার তো রাউন্ড রবিনের শেষ ম্যাচ পর্যন্তও কেউ জানত না কোন দল সেমিফাইনালে যাবে।

প্র: ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে চেলসিতে ছ’বছর কাটিয়েছেন। প্রতিটা ট্রফিই জিতেছেন। এখনও মনে পড়ে সেই দিনগুলো?

মালুদা: (হাসতে হাসতে) হ্যাঁ, মনে আবার পড়বে না? আমার সেরা খেলাটা তো চেলসিতেই খেলেছি। উফ, সেই সব দিন! দ্রোগবা, ল্যাম্পার্ড, চেক...। আমরা একসঙ্গে কত স্মরণীয় সমস্ত মুহূর্ত উপভোগ করেছি। আজও মনে পড়লে ভাবি চেলসির ইতিহাসে একটা অধ্যায়ের অংশ ছিলাম।

প্র: মোরিনহো আপনাকে সই করান। কিন্তু কার্লো আন্সেলোত্তির অধীনেই সেরা ফুটবলটা খেলেছেন। চেলসিতে থাকাকালীন আন্সেলোত্তিই কী আপনার সেরা কোচ?

মালুদা: হ্যাঁ। আন্সেলোত্তির সঙ্গে খুব ভাল সম্পর্ক ছিল আমার। আন্সেলোত্তির সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে প্লেয়ারদের আগলে রাখেন। দলের মধ্যে জয়ের মানসিকতা ভরে দিয়েছিলেন। দলের প্রতিটা প্লেয়ারই গোল করছিল। আমিও অনেক গোল করেছিলাম। রেকর্ড গোল করে প্রিমিয়ার লিগ জিতেছিলাম। বিধ্বংসী যাকে বলে।

প্র: আর মিউনিখের সেই স্মরণীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাতটা নিয়ে কী বলবেন?

মালুদা: (কফিতে চুমুক দিয়ে) ২০০৮-এ মস্কোর ফাইনালে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে হারের পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার জেদটা আরও বাড়ে। ২০১২-তে ভাগ্য হয়তো আমাদের সহায় ছিল। নাপোলির সঙ্গে প্রথম লেগে ১-৩ হেরেও ঘরের মাঠে ৪-১ জয়। গুয়ার্দিওলার বার্সেলোনার বিরুদ্ধে ন্যু কাম্পে ২-২ করে ফাইনাল। ফাইনালে আবার বায়ার্নকে তাদের মাঠেই হারানো। এখনও মনে আছে লন্ডনের রাস্তায় বাসের উপর সেই ট্রফি প্যারে়ড!

প্র: ফ্রান্সের হয়ে খেলার সুবাদে জিনেদিন জিদানের সঙ্গে খেলেছেন। ড্রেসিংরুমের জিদান কী রকম ছিলেন?

মালুদা: জিদান অবসর ভেঙে ফ্রান্স টিমে ফেরার পর আমি খুব খুশি হয়েছিলাম। ট্রেনিংয়ে শুধু মুগ্ধ হয়ে দেখতাম জিদানকে। প্রতিটা পাস নিঁখুত। বল কন্ট্রোল দুর্দান্ত। ভাবতাম এত পারফেক্টও কোনও ফুটবলার হতে পারে? কোনও দিন উঁচু গলায় কথা বলতে দেখিনি। এ রকম ফুটবলার খুব কম এসেছে। অনায়াসে বলা যায় আমার দেখা সেরা।

প্র: ফ্রান্সের নতুন প্রজন্মে পোগবাকে নিয়ে খুব হইচই হচ্ছে। কিন্তু ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে এসে সে রকম কিছুই তো করতে পারছেন না?

মালুদা: (মুখ গম্ভীর করে) দাঁড়ান। ধৈর্য ধরুন। এত কম বয়সে তো সেরি ‘এ’ জিতেছে। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড বলে বেশি চাপ হচ্ছে। তার উপর এত পাউন্ড দিয়ে সই করেছে ওকে। কিন্তু আমার বিশ্বাস পোগবা খুব প্রভাবশালী ফুটবলার হবে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের জন্য।

প্র: মেসির বিরুদ্ধে খেলেছেন। রোনাল্ডোরও। কাকে সামলানো বেশি কঠিন?

মালুদা: রোনাল্ডো! ও কমপ্লিট ফুটবলার। দু’পা-ই সমান। হেডিং দারুণ। সেট পিস থেকে ভয়ঙ্কর। মেসিও ওর দিনের দিনে গোটা বিপক্ষকে ড্রিবল করে ছেড়ে দেবে। কিন্তু আমার মতে রোনাল্ডো।

প্র: ট্রফি যে রকম জিতেছেন, আবার হারের যন্ত্রণারও ভুক্তভোগী। বিশেষ করে ২০০৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে হার। কষ্টটা কতটা?

মালুদা: কষ্টটা গোটা জীবন রয়ে যাবে। একটা বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠার পিছনে অনেক সাধনা করতে হয়। বিশ্বকাপ মানেই তো স্পেশ্যাল একটা টুর্নামেন্ট। প্রতিটা প্লেয়ার স্বপ্ন দেখে জেতার। তার অত কাছে পৌছেও অত দূর! ইস, মাত্র একটুর জন্য...।

প্র: বার্লিনের সেই রাতে আপনি হারলেও জামব্রোতার স্বপ্নপূরণ হয়েছিল। জামব্রোতার ইতালি চ্যাম্পিয়ন হল। তাঁর কোচিংয়েই খেলছেন এখন। দু’জনের মধ্যে কথা হয়েছে সেই ফাইনাল নিয়ে?

মালুদা: না, না। আমি শ্রদ্ধা করি জামব্রোতাকে। ইতালি সেই রাতে দারুণ খেলেছিল। শুধু জামব্রোতা কেন? রবের্তো কার্লোসের বিরুদ্ধেও খেলেছিলাম সেই বিশ্বকাপে। ওরা গ্রেট ফুটবলার। জয়-হার তো খেলার অঙ্গই।

Maluda ISL2016
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy