মুশফিকুর রহিম।
বাংলাদেশের নাভিশ্বাস উঠিয়ে ছাড়া আফগানিস্তানকে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭ রানে হারিয়ে দেওয়ার নায়ক গত বুধবার রাতে আরও দু’টি অধ্যায় রচনা করেছেন। ওয়ানডে ক্রিকেটে এক ভেন্যুতে উইকেটের সেঞ্চুরি এতদিন ছিল শুধুই পাকিস্তানের দুই বোলার ওয়াসিম আক্রাম এবং ওয়াকার ইউনুসের। সারজায় ৭৭ ম্যাচে ওয়াসিম আক্রামের ১২২ উইকেট এবং একই ভেন্যুতে ৬১ ম্যাচে ওয়াকার ইউনুসের ১১৪ উইকেটের সেই কৃতিত্বের পাশে বুধবার বাংলাদেশের হোম অব ক্রিকেট খ্যাত শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামকে উঠিয়ে এনেছেন সাকিব আল হাসান। ২০০৬ সালের ৮ ডিসেম্বর এই ভেন্যুতেই অভিষেকে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে বাঁ হাতি স্পিনারের প্রথম উইকেট নেন। ওয়ান ডে ক্রিকেটে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের এক দশক পূর্তির ১০০ দিন আগেই সাকিবের বিরল কৃতিত্বের স্বাক্ষী হয়ে থাকল ভেন্যুটি।
বুধবার রাতে আফগান লোয়ার অর্ডার রশিদ খানকে এলবিডব্লু করতেই লাকি ভেন্যুতে ওয়ান ডে কেরিয়ারের উইকেট নেওয়ার সেঞ্চুরি করে ফেললেন এই বাঁ হাতি স্পিনার। মাত্র ৩ দিনের ব্যবধানে তিন তিনটি রেকর্ডে ঢুকে পড়েছেন সাকিব। তৃতীয় রেকর্ডটি আবার বিশ্ব রেকর্ডও বটে। এক ভেন্যুতে তিন ফর্ম্যাটের ক্রিকেট মিলে সর্বোচ্চ রানের মালিক এতদিন ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ৫৪ ম্যাচে ৩৪৬৭ রানের সেই রেকর্ডটি ছাড়িয়ে গত বুধবার রাতে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সাকিব পৌঁছে গিয়েছেন ৯৮তম ম্যাচে ৩৪৮১ রানে!
সাকিবের দারুন বোলিংয়ের (৪/৪৭) রাতে ওয়ান ডে অভিষেকে আলো ছড়িয়েছেন তরুণ অল রাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন। চাপের মুখে ৭ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে খেলেছেন ৪৮ রানের হার না মানা ইনিংস আর দু’টি রান হলেই ফরহাদ রেজা এবং নাসির হোসেনের পর তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ান ডে অভিষেকে ৫০এর গর্বে গর্বিত হতে পারতেন তিনি। তবে অভিষেক বোলিং ইনিংসে প্রথম বলে উইকেটের মুখ দেখেছেন এই অফ স্পিনার। হাসমাত উল্লাহ সিদ্দিকীকে এলবিডব্লু আউট করে ওয়ানডে ইতিহাসে অভিষেক ইনিংসে ২৪তম বোলার হিসেবে এই রেকর্ডে ঢুকে পড়েছেন তিনি। তবে সাকিব, মোসাদ্দেকের কৃতির রাতটা মাটি করে দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। তার একটি স্ট্যাম্পিং মিসেই ২ উইকেটে জিতে সিরিজে ফিরতে পেরেছে আফগানিস্তান। ৪৭ তম ওভারে অফ স্পিনার মোসাদ্দেক হোসেনের ফ্লাইট বুঝতে না পেরে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে হাফ পিচে চলে এসেছিলেন নজিবুল্লাহ জাদরান। আউট হয়েছেন ধরে নিয়ে পিচের উপর ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন জাদরান নিজেও। অথচ অবধাররিত স্ট্যাম্পিংয়ের সেই সুযোগ হাতছাড়া করেছেন মুশফিকুর রহিম।
তবে মুশফিকুরের পাশেই দাঁড়িয়েছেন অধিনায়ক মাশরাফি, ‘‘ওই স্ট্যাম্পিং মিসের জন্য মুশফিককে দোষ দিলে তা অন্যায় হয়ে যাবে। এর থেকে ভাল স্ট্যাম্পিং, ক্যাচ কঠিন পরিস্থিতিতে মুশফিক নিয়েছে। এটাই হারের কারণ নয়। তাই ওর উপর দোষ চাপিয়ে লাভ নেই।’’ তবে মাশরাফি যতোই মুশফিকুরের দোষ ঢাকুক না কেন, গত রবিরার রাতেও কিন্তু বড় অন্যায় করেছিলেন মুশফিকুর। ওই ম্যাচেও ৪৭তম ওভারে ভুলটা করেছেন মুশফিকুর। সাকিবের বলে উইকেটের পেছনে দেওয়া আসগর স্ট্যানিকজাইয়ের সহজ ক্যাচটি মুশফিকুর নিতে ব্যর্থ হন। সেই ম্যাচ বাংলাদেশ ৭ রানে জিতে গিয়েছিল বলে ক্যাচ মিসে অভিযুক্ত হতে হয়নি এই উইকেট কিপারকে।
আরও খবর
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে সব থেকে দামি সাকিব
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy