Advertisement
E-Paper

লঙ্কাকাণ্ড বাধানোর দিনে ভারত পাওয়ার প্লে-তেও সুপার পাওয়ার

‘ফাস্টেস্ট সিক্স থাউজ্যান্ড’-এর সঙ্গে সঙ্গে দেখা গেল ফার্স্ট লেডিকেও! বিরাট কোহলি পঞ্চাশ পূর্ণ করার সময় তিনি নন, সবার নজর জায়ান্ট স্ক্রিনে ফার্স্ট লেডির দিকে। সরকারি ভাবে না হলে কী হবে, বেসরকারি ভাবে তো তিনি ফার্স্ট লেডি বটেই। যত দিন বিরাট কোহলির মাথায় ক্যাপ্টেনের টুপিটা থাকে আর কী! ৩-০ জিতে ফেলা সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে ধোনির দলে ফেরার সম্ভাবনা কম। রবিবার উপ্পল স্টেডিয়ামে থাকা চার নির্বাচকের একজন জানালেন, ধোনি রাত পর্যন্ত তাঁদের দলে ফেরার কথা জানাননি। প্রশ্ন হল, ধোনির দলে আসার ইচ্ছা হলে তাঁদের কি আর জানাবেন?

রাজীব ঘোষ

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৪ ০২:১২

‘ফাস্টেস্ট সিক্স থাউজ্যান্ড’-এর সঙ্গে সঙ্গে দেখা গেল ফার্স্ট লেডিকেও! বিরাট কোহলি পঞ্চাশ পূর্ণ করার সময় তিনি নন, সবার নজর জায়ান্ট স্ক্রিনে ফার্স্ট লেডির দিকে।

সরকারি ভাবে না হলে কী হবে, বেসরকারি ভাবে তো তিনি ফার্স্ট লেডি বটেই। যত দিন বিরাট কোহলির মাথায় ক্যাপ্টেনের টুপিটা থাকে আর কী!

৩-০ জিতে ফেলা সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে ধোনির দলে ফেরার সম্ভাবনা কম। রবিবার উপ্পল স্টেডিয়ামে থাকা চার নির্বাচকের একজন জানালেন, ধোনি রাত পর্যন্ত তাঁদের দলে ফেরার কথা জানাননি। প্রশ্ন হল, ধোনির দলে আসার ইচ্ছা হলে তাঁদের কি আর জানাবেন? জানাবেন একেবারে বোর্ডের টপ ফ্লোরে। যদিও সেখানে এখন মুদগল রিপোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের শুনানি নিয়ে হাজারো কচকচানি। কিন্তু ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, হয়তো একেবারে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েই মাঠে নামবেন ক্যাপ্টেন কুল। আর তেমন হলে অনুষ্কার ‘ফার্স্ট লেডি’ হয়ে থাকার মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়ল।

ইডেনেও থাকবেন? “সিরিজ তো জেতা হয়েই গেল। আবার ইডেনে যাব কেন? তবু দেখি। যেতেও পারি।” ভক্তবেষ্টনী সামলে বলতে বলতে বেরিয়ে গেলেন বিরাট-প্রেমিকা। আনন্দে এতই ডগমগ, যেন নিজেই মাঠ থেকে জিতে নিয়ে যাচ্ছেন সিরিজটা। একেই বোধহয় বলে ‘রব নে বনা দি জোড়ি’। আর তিনি মাঠে আসতেই যে হাফ সেঞ্চুরিটা হল? বলে দিলেন, ‘‘দ্যাটস মাই প্লেজার।’’ হাফ সেঞ্চুরি করলে যে ছ’হাজার হয়ে যাবে, তা জানতেন বিরাট। কিন্তু সেটা যে দ্রুততম, ভিভ রিচার্ডসকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো, তা জানতেন না। বললেন, “মাঠে যা করা দরকার ছিল, তাই করেছি। স্যর ভিভের চেয়ে কত পিছিয়ে ছিলাম, জানতাম না।”

অনুষ্কা অপেক্ষা করছিলেন বলে কি না কে জানে, সিরিজজয়ী ক্যাপ্টেন তো সাংবাদিক বৈঠকেই এলেন না। ৩৫ বল বাকি থাকতে ছ’উইকেটে ম্যাচ জিতে ওঠার পর পুরস্কার নিতে গিয়ে বললেন, “দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। একটা বোলার কম নিয়েই ছেলেরা কেমন লড়ে গেল বলুন। ছ’টা ওভার তো পার্ট টাইমারদের দিয়েই করালাম। তাও ওদের ২৪২-এ আটকে রাখাটা চমত্‌কার ব্যাপার।”

পাওয়ার প্লে-র শুরুতে শ্রীলঙ্কার স্কোরবোর্ড বলছিল ১৩৮-৩। এই সময়ে অক্ষর পটেলের তিন ওভারে তোলা তিনটি উইকেটই তাদের মেরুদন্ড ভেঙে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। পাওয়ার প্লে-র শেষে শ্রীলঙ্কা ১৫৪-৬। কে বলে, ভারতীয় বোলাররা পাওয়ার প্লে-তে ভাল বোলিং করতে পারেন না? গোটা সিরিজ ধরেই পাওয়ার প্লে-তে ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে বোলাররাও দাপট দেখিয়ে আসছে। পাওয়ার প্লে ও ডেথ বোলিং নিয়ে ধোনির দুশ্চিন্তা বোধহয় অনেকটাই মেটার দিকে। এই সিরিজ থেকে অন্তত আত্মবিশ্বাসটা বাড়িয়ে নিয়ে যেতে পারছেন ভারতীয় বোলাররা।

তবে ব্যাটিং নিয়ে যে তেমন চিন্তা নেই, তার ইঙ্গিত দিয়েই রাখলেন, ধবন, কোহলি, রাহানেরা। মোতেরার পর ঘরের মাঠেও বড় রানের দিকে রায়ডু এগোচ্ছিলেন। কিন্তু ধবনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে বিশ্রী ভাবে রান আউট হয়ে গেলেন। বল হাতে দিলশানকে ফিরিয়েছিলেন। একটা পঞ্চাশ করতে পারলে হায়দরাবাদকে খুশি করতে পারতেন। কিন্তু সে সুযোগ দিলেন না ধবন। সেই সময় উপ্পল স্টেডিয়ামে তিনিই ভিলেন নাম্বার ওয়ান। ৯১ রান করে গ্যালারির মান ভাঙাতে হল তাঁকে।

কিন্তু ভারতীয় ক্যাপ্টেনকে কে বোঝাবে যে এক তারা অচেনা শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে। যে দলটাকে চিনতে কষ্ট হচ্ছে স্বয়ং তাদের ক্যাপ্টেনেরও। ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথেউজ বিস্ময়ের সুর গলায় নিয়ে বললেন, “কী জানি! আমরা সেই একই ভুল করে গেলাম, যা আমরা আগের ম্যাচগুলোতেও করেছি। কিছুতেই কোনও বিভাগে উন্নতি করতে পারলাম না!” ভিতর থেকে চাপা ক্ষোভটা যেন উগরে বেরিয়ে এল, “পুরো প্রস্তুতি নিয়ে এসেই ভারতকে ভারতের মাটিতে হারাতে কষ্ট হয়। আমরা তো অর্ধেক তৈরি হয়ে এসেছি।” সব মিলিয়ে ২৪২। তার মধ্যে এক অঙ্কের স্কোর সাত জনের। এই ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়েও যেন পিতামহ ভীষ্মের ভূমিকায় জয়বর্ধনে। ১১৮। দিলশান ৫৩। টেল এন্ডার প্রসন্ন টেনেটুনে ২৯। অতিরিক্ত ১৬। বাকিদের অবদান ৩৬!

যিনি সিরিজ শুরুর আগেই বেঁকে বসেছিলেন, সেই কুমার সঙ্গাকারা নাকি বলেই দিয়েছেন, অনেক হয়েছে, আর নয়। এ বার চললাম। ইডেন ও রাঁচিতে দল গেলেও তিনি এখান থেকেই দেশে ফেরার বিমানে উঠবেন। সঙ্গে আরও তিনজন। রনদিভ, ধামিকা, থরঙ্গা। প্রথম দু’জনকে এ দিন খেলানোও হল না। তাঁদের জায়গায় উড়িয়ে আনা হচ্ছে থিরামান্নে, চান্ডিমল, অজন্তা মেন্ডিস ও শামিন্দা এরঙ্গাকে। ক্যাপ্টেন অবশ্য সাফাই দিলেন, “সঙ্গকারাকে বিশ্রাম দেওয়া হবে, এটা আগেই ঠিক ছিল।”

সঙ্গাকারার যে মন বাড়ির দিকেই, সে তো মেঘলা দুপুরে তাঁর আউট দেখেই বোঝা গেল। যে বলটা তাঁর শরীর ছাড়িয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল, তা খেলতে গিয়ে খোঁচা দিলেন স্লিপে অশ্বিনকে। তাতে উমেশের উল্লাস দেখে কে? ম্যাচের পর বলছিলেন, “সঙ্গকারার মতো একজন কিংবদন্তি ব্যাটসম্যানকে ফেরালাম। আনন্দ হবে না? আজ সারা দিন বল করেই বেশ আনন্দ পেয়েছি।” উমেশের আনন্দের দিনে আবার ইশান্তের নিরানন্দ। ফের পিঠের ব্যথা শুরু হয়ে গিয়েছে তাঁর। যার জন্য চার ওভারের বেশি বলই করতে পারলেন না। দলীয় সূত্রে জানা গেল, বাকি দুটো ম্যাচে বিশ্রাম পেতে পারেন। তবে তা ঠিক হবে সোমবার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা ২৪২ (জয়বর্ধনে ১১৮, দিলশান ৫৩, উমেশ ৪-৫৩)
ভারত ২৪৫-৪ (ধবন ৯১, কোহলি ৫৩)।

sri lanka series series win Virat Kohli anushka sharma rajib ghosh hyderabad sports news online sports news India Vs Srilanka win series team india
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy