একতা। রাজকোটে টিম কোহালি। ছবি: পিটিআই
লোঢা কমিশন বনাম বোর্ড যুদ্ধে একটা সময় সিরিজই বানচাল হওয়ার উপক্রম ঘটা!
বাংলাদেশের মতো দুর্বল দলের হাতে শেষ টেস্টে হেরে ইংল্যান্ডের ভারতে আগমন!
চাপ কাটাতে নিজেদের আন্ডারডগ বলে সিরিজ শুরুর আগে ভারতের বিরুদ্ধে মাইন্ডগেম চালু ইংরেজ অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুকের!
পাঁচ টেস্টের ম্যারাথন সিরিজ শুরুর দিন তিনেক আগে পর্যন্তও এগুলোকে যেন দেখাচ্ছিল লড়াইয়ের টিআরপি। তা-ও কিনা যখন এ দেশে ইংল্যান্ড পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলতে নামছে ৮৪-৮৫’র পর এই প্রথম!
কিন্তু রাজকোটে প্রথম টেস্টের বল পড়ার আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে আচমকা সব পিছনের সারিতে। তার জায়গায় উঠে এল আসন্ন সিরিজের ডিআরএস রুল!
কেন? ডিআরএস বা ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম বাকি টেস্টখেলিয়ে দেশের কাছে যতই পরিচিত হোক না কেন, ক্রিকেটের বিশ্ববাজারকে চালনা করা ভারতের কাছে একেবারে নতুন! ডিআরএস মানি না, মানি না করতে করতে শেষমেশ এই সিরিজে পরীক্ষামূলক ভাবে ডিআরএস চালু করতে রাজি হয়েছে ভারতীয় বোর্ড।
কিন্তু ভারতের সিরিজে ডিআরএস! তা-ও আবার ভারতের মাটিতে!
ইংল্যান্ড ও ভারত— দু’শিবিরেই সোমবারের সেরা চর্চিত বিষয় তাই ডিআরএস। রাজকোটে সাংবাদিকদের সামনে অজিঙ্ক রাহানে যদি বলে দেন, ‘‘ডিআরএসের নিয়মে মাঠে কী ভাবে আম্পায়ারের কাছে রিভিউ চাইব তা নিয়ে প্ল্যান কষা হয়ে গিয়েছে।’’ তা হলে উল্টো ড্রেসিংরুমের গলাতেও এ দিন ডিআরএস। স্টুয়ার্ট ব্রড সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বলেন, ‘‘ডিআরএস রেফারেলের ব্যাপারে ভারতে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ সিরিজটা হবে ভারতের ঘূর্ণি উইকেটে। যেখানে সিম, সুইং কম।’’
ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক রাহানের কথায়, ‘‘এটা আমাদের কাছে সম্পূর্ণ নতুন এক ধারণা, নতুন প্রযুক্তি। ইংল্যান্ড সিরিজে এটা চালু হবে জানার পরে আমরা নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকেই এটা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছিলাম। তবে এখনও এটার পিছনে আমাদের আরও সময় দিতে হবে। টিমের কাছে ব্যাপারটাকে আরও পরিষ্কার করতে হবে। প্রত্যেককে আরও বোঝানো দরকার কী ভাবে ডিআরএস কাজ করে। কী ভাবে আমরা এটা কাজে লাগাব, এ সব।’’ বলে অবশ্য রাহানে যোগ করেন, ‘‘তবে আমাদের আসল ফোকাস থাকবে ভাল, আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলা।’’ পরক্ষণেই অবশ্য তিনি ডিআরএস প্রসঙ্গে ফিরে যান। এবং যেটা বলেন তাতে পরিষ্কার, এই সিরিজে টিম কোহালির ফিল্ডিংয়ের সময় ভারতের রেফারেল চাওয়া, না-চাওয়ার অনেকটা নির্ভর করবে এক বঙ্গসন্তানের মতামতের উপর।
তিনি— ভারতীয় দলের উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা।
রাহানে বলে দিয়েছেন, ‘‘ফিল্ডিং টিমের ডিআরএস নেওয়ার ক্ষেত্রে উইকেটকিপারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তার সঙ্গে কিছুটা প্রথম স্লিপেরও। কারণ, উইকেটকিপার আর ফার্স্ট স্লিপই বলের লাইনের এমন জায়গায় ফিল্ড করে যে, তারা অধিনায়ক এবং সংশ্লিষ্ট বোলারকে সঠিক মতামত দিতে পারে, রেফারেল চাওয়াটা ন্যায্য হবে কি না!’’ আর যখন ভারত ব্যাট করবে, তখন রাহানের মতে স্ট্রাইকিং ব্যাটসম্যানকে রেফারেল চাওয়া, না-চাওয়ার ব্যাপারে সেরা পরমর্শ দিতে পারে সেই মুহূর্তে নন-স্ট্রাইকার।
ইংরেজ পেসার-অলরাউন্ডার ব্রড আবার ভারতের সিরিজে প্রথম বার ডিআরএস ব্যবহার নিয়ে সম্পূর্ণ অন্য ভাবনায় নিমজ্জিত। তাঁর মতে ইংল্যান্ড, এমনকী বাংলাদেশেও রেফারেল প্রযুক্তি আর ভারতীয় পরিবেশে একই প্রযুক্তির ব্যবহারে পার্থক্য থাকবে। ‘‘বাংলাদেশে আমরা প্রচুর রেফারেলের সাহায্য নিয়েছি। ওখানে এই প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে টিভি আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নেওয়াটা অপেক্ষাকৃত সহজ। যে-হেতু ওখানে বল স্পিন করার চেয়ে বেশি সিম বা সুইং করে। ভারতের ঘূর্ণি উইকেটে ডিআরএসে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা তুলনায় কঠিন,’’ বলেন ব্রড। আর মূলত সে কারণে ভারতের পিচে রেফারেল বাড়তি ভাবনাচিন্তা করেই যে ইংল্যান্ড চাইবে, সেটাও সাফ বলে দিচ্ছেন ব্রড। যিনি সুযোগ পেলে এই সিরিজেই একশো টেস্টের মাইলস্টোন ছোঁবেন।
ব্রড অবশ্য দাবি করছেন, তাঁদের অধিনায়কের একটা সহজাত ক্ষমতা আছে যে, ফিল্ডিংয়ের সময় কোন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রেফারেল চাইলে সফল হবেন! ‘‘কুক ওর এই অদ্ভুত ক্ষমতাটা অনেক বার দেখিয়েছে। এখানেও আশা করছি দেখাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy