পুজোর ঠিক আগেই ক্রিকেট উৎসব ইডেনে। ভারত-নিউজিল্যান্ড টেস্ট। উৎসাহ, উন্মাদনার বিচারে কে কাকে হারাতে পারে, এই প্রশ্নটা আসেই না। তাই ঠিক পুজোর আগে বছরের একমাত্র ইডেন টেস্ট নিয়ে আদৌ কতটা উৎসাহ থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। টেস্ট চলবে সেপ্টেম্বরের ৩০ থেকে অক্টোবরের ৪ তারিখ পর্যন্ত।
হাজার ষাটেকের গ্যালারির কতটা ভরবে ওই পাঁচ দিন, তা নিয়েই এখন দুশ্চিন্তায় সিএবি-র শীর্ষকর্তারা। যুগ্মসচিব অভিষেক ডালমিয়া যেমন বলছেন, ‘‘ওই সময় গ্যালারি ভরা মুশকিল ঠিকই। তবে অর্ধেক ভরবেই। কারণ, এ বার দর্শকদের জন্য আমরা আরও নানা বিনোদনের প্যাকেজ রাখছি।’’
কী সেই বিনোদনের প্যাকেজ?
ফ্যান পার্ক, কিডস জোন, কাফেটেরিয়া, ইনিংস বিরতিতে তিন ওভারের কর্পোরেট ক্রিকেট— এই সমস্ত পরিকল্পনা রয়েছে সিএবি-র। ভারতীয় বোর্ড থেকেই এ বার প্রতিটি টেস্ট আয়োজক কেন্দ্রকে বাড়তি বিনোদন প্যাকেজের ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। এই প্যাকেজগুলির খরচও দেবে বোর্ড।
এল ব্লকে কিডস জোনে খুদে দর্শকরা গিয়ে ক্রিকেট সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে। এমনকী তাদের প্রিয় ক্রিকেটারের মতো চুলের ছাঁটও দিতে পারে তারা। ইডেনের মধ্যে ফ্যান পার্কে গিয়ে বাছাই করা ক্রিকেটারদের সঙ্গে দেখা করা, কথা বলার সুযোগও পেতে পারেন দর্শকরা। সব কিছুই সপ্তাহখানেকের মধ্যেই চূড়ান্ত হয়ে যাবে বলে সিএবি সূত্রের খবর।
ইডেন টেস্ট
• ৩০ সেপ্টেম্বর-৪ অক্টোবর।
দুর্গা পুজো
• ৮ অক্টোবর-১১ অক্টোবর
তাই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আশাবাদী, ‘‘কলকাতা ক্রিকেটপ্রেমীদের শহর। আমার বিশ্বাস, যতই পুজো থাকুক, টেস্টের টানে ইডেনে সবাই আসবেই।’’
কিন্তু বাঙালির বর্ষসেরা পার্বণের চূড়ান্ত প্রস্তুতির মধ্যে ইডেনে টেস্ট ম্যাচের জন্য সময় বা উৎসাহ কতটা থাকবে, এই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে খোদ সৌরভের ক্রিকেট সংসারেই। সিএবি কর্তারাই ভেবে পাচ্ছেন না, কী ভাবে সামলাবেন দু’দিক। বিভিন্ন পুজো কমিটির সঙ্গে যুক্ত কর্তার সংখ্যা নেহাত কম নয় বঙ্গ ক্রিকেটের অন্দরমহলে। তাঁরাই এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এমনই একজনের বক্তব্য, ‘‘সারা বছর সিএবি করি। পুজো তো বছরে একবারই। সেই পুজো ছেড়ে টেস্টের নানা কাজ কী করে করব, ভেবে পাচ্ছি না।’’ সিএবি কর্তাদেরই যখন এই অবস্থা, তখন সাধারণ মানুষের টানটা কোন দিকে থাকবে, তার আঁচ পেতে সমস্যা হয় না।
এখানেই শেষ নয়। দুশ্চিন্তা আরও আছে। যেমন মাঠ, উইকেট, আবহাওয়া। আবহাওয়া সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে, টেস্টের পাঁচ দিনই দিনের বেলা ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা আছে। তা ছাড়া বৃষ্টির মরসুমে উইকেট তৈরি করতেই কালঘাম ছুটে যাচ্ছে কিউরেটর ও মাঠকর্মীদের। ইডেনের আউটফিল্ডে কোরিং করে তার জলনিকাশি ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি আনা হলেও বৃষ্টিতে উইকেট তৈরির কাজ ব্যাহত হচ্ছে ভালরকমই। কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘টানা চার-পাঁচ দিন রোদ না পেলে ভাল উইকেট দেওয়া মুশকিল হবে। সেটা আর পাওয়া যাচ্ছে কই। উইকেটের কাজ ৫০ শতাংশ হয়েছে। বাকিটা শেষ করতে রোদ চাই।’’