Advertisement
০৫ মে ২০২৪

শামি-ইশান্তের আগুনে জয়ের দিকে ভারত

বৃষ্টি আর স্যাঁতসেঁতে উইকেট থেকেই যেন আগুন পেয়ে গেলেন মহম্মদ শামি। সাবাইনা পার্কে তাঁর হাত থেকে লাল ডিউকস নয়, যেন আগুনের গোলা বেরোচ্ছিল। ইশান্ত শর্মাও প্রায় একই মেজাজে।

চতুর্থ দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপেনার রাজেন্দ্র চন্দ্রিকাকে বোল্ড করার পর ইশান্ত শর্মা।ছবি:এএফপি

চতুর্থ দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপেনার রাজেন্দ্র চন্দ্রিকাকে বোল্ড করার পর ইশান্ত শর্মা।ছবি:এএফপি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৬ ০৪:৫৭
Share: Save:

বৃষ্টি আর স্যাঁতসেঁতে উইকেট থেকেই যেন আগুন পেয়ে গেলেন মহম্মদ শামি। সাবাইনা পার্কে তাঁর হাত থেকে লাল ডিউকস নয়, যেন আগুনের গোলা বেরোচ্ছিল। ইশান্ত শর্মাও প্রায় একই মেজাজে। মঙ্গলবার চলতি টেস্টের বৃষ্টিবিঘ্নিত চতুর্থ দিনের লাঞ্চেই তাঁরা বুঝিয়ে দিলেন, কোনও অঘটন না ঘটলে বা বৃষ্টিতে কিংসটন না ভাসলে ফের টেস্ট জয়ের দিকে এগোচ্ছেন তাঁরা। পর পর দুই টেস্টে জয়ের যে খরা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজে, সেই খরা শামি-শর্মার বিধ্বংসী বোলিংয়েই বোধহয় কাটতে চলেছে।

আশির দশকে ক্যারিবিয়ান দ্বীপে যে ভাবে ত্রাস হয়ে উঠতেন ম্যালকম মার্শাল, মাইকেল হোল্ডিংরা। যে ভাবে তাঁদের কবলে পড়ে কাঁপতেন ব্যাটসম্যানরা, সেই মূর্তিতেই এ দিন দেখা গেল ভারতীয় পেসারদের।

কমেন্ট্রি বক্সে পাশপাশি বসে এই দৃশ্য দেখতে দেখতে যে বিরক্ত হয়ে ওঠেন ভিভিয়ান রিচার্ডস, সুনীল গাওস্কররা, তা তাঁদের লাঞ্চের আড্ডাতেই স্পষ্ট বোঝা যায়। প্রথম ইনিংসে ৩০৪ রানে পিছিয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে যখন ৪৮-৪, তখন ভিভ বলছিলেন, ‘‘এক সময় যে মাঠে আমরা মস্তানি করেছি, যে মাঠে রানের ফোয়ারা ছুটিয়েছি, সেই মাঠে আমার দেশের ব্যাটসম্যানদের এই বেহাল দশা দেখে খুব কষ্ট হচ্ছে।’’

গাওস্কর নিজের দেশের পেসারদের সাফল্য দেখে যতটা না খুশি, তার চেয়ে বেশি হতাশ ক্যারিবিয়ানদের এই ব্যাটিং দুর্দশা দেখে। বলেন, ‘‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ আমার সেকেন্ড হোমের মতো। ক্রিকেটে তো কম রোমাঞ্চ অনুভব করিনি। এই দেশের ক্রিকেটে হৃদয় আছে। সেই হৃদয়টাই এখন খুঁজে পাচ্ছি না। এদের হলটা কী?’’

আগের দিন ৫০০-৯-এ বিরাট কোহালি ডিক্লেয়ার করার পর সেই যে বৃষ্টি নামে কিংসটনে, আর বিকেল পর্যন্ত থামেনি। মঙ্গলবার চতুর্থ দিনও সকালে ঘন্টা খানেক বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকার পর যখন ব্যাট করতে নামেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপেনাররা, তখন থেকেই আগ্রাসনের চরমে দুই পেসার শামি ও ইশান্ত। তৃতীয় ওভারেই চন্দ্রিকার স্টাম্প ছিটকে দেন ইশান্ত। এর পর হানা দেন শামি। তার পর ড্যারেন ব্র্যাভো ও স্থানীয় তারকা মার্লন স্যামুয়েলস শামির বলে কাত। দু’জনেই ১৪০-এর উপর গতিতে বল ছোটাচ্ছিলেন। যাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা। সানি বলতে বাধ্য হন, ‘‘এ কাদের দেখছি! এদের শরীরের ভাষাতেই কোনও লড়াই নেই। যেন হারার জন্য প্রস্তুত। ফুটওয়ার্ক নেই, উপস্থিত বুদ্ধি নেই। ভিভকে এই সব বসে বসে দেখতে হচ্ছে বলে আরও খারাপ লাগছে।’’ ভারতীয় কিংবদন্তি ওপেনারের বক্তব্য, ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই দলে পরিবর্তন না হলে এই সিরিজে ওদের লড়াইয়ে ফেরা সম্ভব নয়। রবিবার ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ফাইনাল, সেখানে খেলা কয়েকজন ক্রিকেটারকে এই দলে আনা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

লাঞ্চের পর ফের বৃষ্টি নামায় দিনের খেলার সম্ভাবনা আরও কমে যায়। বৃষ্টির সঙ্গে আকাশও ছিল বেশ কালো। এই অবস্থার পর খেলা শুরু হলে শামি, ইশান্তরা যে আরও সাহায্য পেয়ে যাবেন এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

India-West Indies
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE