Advertisement
০৪ মে ২০২৪

ইনদওরে মহড়ায় আবিষ্কার হল, বাউন্সও সামলাতে হবে পুজারাদের

তিনটি বল গুড লেংথ থেকে এমন অসমান বাউন্স করল যে, কোনও রকমে মাথা বাঁচালেন ভারতের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান পুজারা। থ্রো-ডাউনের বিরুদ্ধেই যে রকম সুইং করছে, তা দেখে আন্দাজ করাই যায় ম্যাচেও খুব একটা পার্থক্য হবে না। 

প্রস্তুতি: ইনদওরে গোলাপি বলে অনুশীলন পুজারা, (ডান দিকে) অশ্বিনদের।

প্রস্তুতি: ইনদওরে গোলাপি বলে অনুশীলন পুজারা, (ডান দিকে) অশ্বিনদের।

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত
ইনদওর শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:০৭
Share: Save:

ভারতের প্রথম দিনরাতের টেস্টের আগে চালকের আসনে ভারত। ইনদওরে বাংলাদেশকে ইনিংস ও ১৩০ রানে হারিয়ে সিরিজ শুরু করেছে ভারত। বিপক্ষ শিবিরে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে কোহালি-ব্রিগেড। কিন্তু গোলাপি বলের বিরুদ্ধে ব্যাটসম্যানেরা ক্রিজে যে খুব একটা স্বস্তিতে সময় কাটাবেন না, তার আন্দাজ পাওয়া গেল রবিবার গোলাপি বলে ভারতের প্রথম দিনের ঐচ্ছিক অনুশীলনে।

প্রথম টেস্টের প্রথম একাদশের মাত্র তিন জন এ দিন প্রস্তুতি নিলেন গোলাপি বলের বিরুদ্ধে। আর অশ্বিন আগে কখনও গোলাপি বলের বিরুদ্ধে খেলেননি। তাই স্থানীয় বোলার ও থ্রো-ডাউনে ব্যাট করলেন। রবীন্দ্র জাডেজাও বল করেননি। তিনিও অশ্বিনের মতো শুধু ব্যাট করলেন। গোলাপি বলের বিরুদ্ধে সব চেয়ে বেশি পরীক্ষা নেওয়া হল চেতেশ্বর পুজারার। থ্রো-ডাউন নেওয়ার সময় সুইংয়ে তো পরাস্ত হচ্ছিলেনই। সমস্যা দেখা যাচ্ছিল বাউন্সের বিরুদ্ধেও। লাল বলের চেয়ে অনেক বেশি বাউন্স করে গোলাপি বল। তিনটি বল গুড লেংথ থেকে এমন অসমান বাউন্স করল যে, কোনও রকমে মাথা বাঁচালেন ভারতের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান পুজারা। থ্রো-ডাউনের বিরুদ্ধেই যে রকম সুইং করছে, তা দেখে আন্দাজ করাই যায় ম্যাচেও খুব একটা পার্থক্য হবে না।

ভারত অধিনায়ক আগেই সতর্ক করেছিলেন, ‘‘লাল বলের চেয়ে গোলাপি বলে অনেক বেশি সুইং করে। কারণ, গোলাপি বলে ল্যাকারের মাত্রা বেশি। তা ব্যাটসম্যানদের সামনে বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়াতে পারে।’’ সঙ্গে যোগ করেছিলেন, ‘‘পুরনো বলও সে রকম রিভার্স সুইং করে না। সে ক্ষেত্রে পেসাররা কী রকম বল করে সেটাও দেখার।’’

ইডেনে সম্প্রতি যে রকম উইকেট তৈরি করা হচ্ছে, তাতে গোলাপি বল ভয়ঙ্কর নড়াচড়া করতে পারে। তিন দিন ম্যাচ হওয়া উইকেটেই যদি এ ধরনের বাউন্স হয়, ঘাসে ভরা ইডেনের বাইশ গজে নৈশালোকে ব্যাটসম্যানদের রাতের ঘুম কেড়ে নিতে পারে এই গোলাপি বল।

দলীয় সূত্রে খবর, বিরাট কোহালি, রোহিত শর্মা ও অজিঙ্ক রাহানে শনিবার রাতেই ইনদওর থেকে নিজেদের বাড়ি চলে দিয়েছেন। ১৯ নভেম্বর কলকাতায় দলের সঙ্গে তাঁরা যোগ দেবেন। রবিবার সকালে কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছেন ঋদ্ধিমান সাহা। ভারতীয় পেস ত্রয়ীও এ দিন অনুশীলনে আসেননি। পুজারা, জাডেজা ও অশ্বিনের সঙ্গে প্রস্তুতি নিতে দেখা গেল শুভমন গিল, হনুমা বিহারী ও ঋষভ পন্থকে।

ভিন্ন মেজাজে ছিলেন আর অশ্বিন। ডান-হাতের পরিবর্তে বাঁ-হাতে কয়েকটি বল করলেন তিনি। প্রাক্তন শ্রীলঙ্কা অলরাউন্ডার সনৎ জয়সূর্যের ডেলিভারিও নকল করতে দেখা গেল তাঁকে। সেই ভিডিয়ো তুলিয়ে অশ্বিন ছুটলেন বাংলাদেশ নেটে ড্যানিয়েল ভেত্তোরিকে দেখাতে। ভারতীয় অফস্পিনারের সেই বোলিংয়ের ভিডিয়ো দেখে মুচকি হেসে পিঠ চাপড়ে দিলেন বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ। ভারতীয় দলের হেড কোচ রবি শাস্ত্রীকেও বাঁ-হাতে বল করার ভিডিয়ো দেখালেন অশ্বিন। তিনিও তৃপ্ত অফস্পিনারের প্রয়াসে।

ভারত ঐচ্ছিক অনুশীলন করলেও বাংলাদেশ কিন্তু পুরো দমে প্রস্তুতি নিল। বিশেষ জোর দেওয়া হল মুস্তাফিজুর রহমানের উপরে। যা ইঙ্গিত, তাতে ইডেনে গোলাপি বলের টেস্টে প্রথম একাদশে ফেরানো হতে পারে বাঁ-হাতি পেসারকে। ভারতীয় অধিনায়ক প্রথম টেস্ট শুরু হওয়ার আগেই বলে দিয়েছিলেন, ‘‘বাঁ-হাতি পেসারদের বিরুদ্ধে বরাবরই আমরা একটু সমস্যায় পড়েছি। তার অন্যতম কারণ, আমাদের দলে বাঁ-হাতি পেসার নেই। ওদের বিরুদ্ধে নিয়মিত খেলা হয় না আমাদের। তাই মুস্তাফিজুর অবশ্যই আমাদের পরীক্ষায় ফেলতে পারে।’’ কোহালি এ কথা বললেও প্রথম টেস্টে খেলানো হয়নি ফিজ়কে। তবে ইডেনে ঘাসে ভরা উইকেটে তাঁকে খেলিয়ে দেখে নেওয়া হতে পারে। বাংলাদেশের দলীয় সূত্রে খবর, সৌম্য সরকারকে উড়িয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে দ্বিতীয় টেস্টের আগে। তাঁদের এক সদস্য বলছিলেন, ‘‘কলকাতা থেকে আধ ঘণ্টার দূরত্ব। দল পরিচালন সমিতি চাইলে সৌম্যকে উড়িয়ে আনা হতে পারে। টি-টোয়েন্টিতে যথেষ্ট ভাল পারফরম্যান্স। তাই এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’’ ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি মিডিয়াম পেসও করতে পারেন সৌম্য। তাই ইডেনে গোলাপি বলের টেস্টে তাঁকে সুযোগ দেওয়া হয় কি না, সেটাই দেখার।

শনিবার ৬৪ রান করার পরে এ দিন নেটে নিজেকে উজাড় করে দিলেন মুশফিকুর রহিম। আল আমিন হোসেন ও মুস্তাফিজুরের বিরুদ্ধেই বেশিক্ষণ ব্যাট করলেন। ইমরুল কায়েস ও শাদমান ইসলাম বেশ কয়েক বার আউট হলেন দুই পেসারের বিরুদ্ধে। কায়েসের উইকেটও ছিটকে দিলেন মুস্তাফিজুর। বাংলাদেশ জানিয়েছে, ফিজ় নিজের সেরা ছন্দে নেই। তাই প্রথম টেস্টের একাদশে তাঁকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। হারানো ছন্দেই যদি দেশের অভিজ্ঞ ওপেনারকে একাধিক বার আউট করেন। তা হলে শামি, উমেশ যাদব ও ইশান্ত শর্মাকে কী ভাবে সামলাবেন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE