আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
প্রশ্ন: দীর্ঘ দিন তো আপনি মেলবোর্ন প্রবাসী। এই মাঠটাকে অনেকের চেয়ে ভাল চেনেন। ম্যাচটা কেমন মনে হচ্ছে?
আমিনুল: হ্যাঁ চোদ্দো মাস হল মেলবোর্নের বেরউইকে চলে এসেছি। আর বহু বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় নিয়মিত যাতায়াত করি। এমসিজি মাঠের প্রতিটি ইঞ্চি আমার চেনা। আমার মনে হচ্ছে ভারত এই রকম বিগ স্টেজে খেলে অভ্যস্ত। ধোনির কথাই শুধু ভাবুন। কী এক্সপিরিয়েন্স তার! প্লাস ব্যাটিংটা যে কত স্ট্রং আমরা এই মাঠে সাউথ আফ্রিকা ম্যাচে দেখেছি। জিততে জিততে ইন্ডিয়ান টিমটাও এখন অনেক বেশি কনফিডেন্ট। আমার কাছে বাংলাদেশের ভয়ের কারণ ভারতীয় ব্যাটিং। জিম্বাবোয়ে ম্যাচের দিন ওরা আবার প্রমাণ করে দিয়েছে যে, টুর্নামেন্টের বেস্ট ব্যাটিং লাইন আপ ওদেরই। এমসিজি হল ব্যাটিং উইকেট। সেটা ওদের সুবিধে দেবে কারণ ইন্ডিয়া দ্রুত অ্যাডজাস্ট করতে পারবে।
প্র: তা হলে কি কোয়ার্টার ফাইনালে ভারত পরিষ্কার ফেভারিট?
আমিনুল: সেটা বলব না। কারণ নকআউট ম্যাচে একটা আধ ঘণ্টা ম্যাচের রং বদলে দিতে পারে। সেটা কোহলির কয়েকটা স্ট্রোক যেমন হতে পারে। তেমন রুবেলের একটা স্পেলও হতে পারে। এই সব ম্যাচে আগাম বলা যায় না। তা ছাড়া আমাদের এই টিমটা অনেক ম্যাচিওর্ড। অনেক ম্যাচ খেলেছে এক-এক জন। বড় কিছু ম্যাচ জিতেওছে। আর বিশেষ করে এই টুর্নামেন্টে যেমন খেলছে, তাতে একটা জিনিস প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশ কারও দয়ায় এখানে আসেনি।
প্র: বাংলাদেশের ম্যাচে প্লাস ফ্যাক্টর কী?
আমিনুল: মিডল অর্ডার ব্যাটিংটা খুব ভাল। মাহমুদউল্লাহ আছে। মুশফিকুর আছে। এরা চাপ সামলাতে জানে। বোলিংটাও অ্যাসেট। একটা শৃঙ্খলা রয়েছে বোলিংয়ে। অফস্টাম্প আর তার বাইরে বাইরে রেখে যাচ্ছে। আমি বলব অস্ট্রেলিয়ান লেংথে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের বোলাররা রপ্ত হতে পেরেছে।
প্র: বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিক তা হলে ভাল কাজ করেছেন বলুন!
আমিনুল: নিশ্চয়ই।
প্র: শোনা যায় বাংলাদেশ টিম আপনাকেও সহকারী কোচ হওয়ার অফার দিয়েছিল। কিন্তু আপনি না করে দেন যে, মুখ্য কোচ না করা হলে আপনি অসম্মত।
আমিনুল: একেবারে বাজে কথা। আমাকে কেউ অফার করেনি। আমি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের ক্রিকেট ডেভেলপমেন্ট অফিসার হয়ে রয়েছি এত বছর। বিভিন্ন দেশে কোচিং করাচ্ছি। লেভেল থ্রি কোচিং কোর্স করেছি। আজও দেশের হয়ে ডাক পাব বলেই তো উদগ্রীব হয়ে বসে আছি। আমার তো মনে হয় আমি বাংলাদেশ টিমের কাজে আসব।
প্র: অনেকে বলছেন ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঘিরে বাংলাদেশের কোনও কোনও অংশে উত্তেজনার সঙ্গত কারণ রয়েছে। ভারতীয় বোর্ড যে ভাবে আইসিসিতে দাদাগিরি করছে, ভারতকে বাড়তি সুবিধে দিচ্ছে, সেটা অনেক দেশেরই পছন্দ নয়। বাংলাদেশও নাকি তাই।
আমিনুল: আমার মনে হয় না এটা সঙ্গত বলে। বাংলাদেশকে টেস্ট মর্যাদা পেতে সবচেয়ে সাহায্য তো করেছে ভারত আর পাকিস্তান। ভারতের মাধ্যমে তো বাংলাদেশ ক্রিকেট প্রচারও পেয়েছে। আইপিএলে এখনকার ছেলেরা ক্রিকেটিং স্কিল শিখছে। স্টার টিভি এসে বাংলাদেশের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স আরও প্রচার করছে। এগুলো তো সবই লাভ।
এ বারের মাশরফির বাংলাদেশ অনেক পরিণত, মনে করছেন তাঁর দুই পূর্বসূরি। । মেলবোর্নে সোমবার। ছবি: দেবাশিস সেন
প্র: সিধু বা রামিজের বিরুদ্ধেও তো প্রচুর অসন্তোষ, বাংলাদেশে শুনলাম রামিজের কমেন্ট্রি নিষিদ্ধ করার দাবিও উঠেছে।
আমিনুল: আমার মনে হয় না ক্রিকেটকে যারা ভালবাসে তারা এ ভাবে দেখছে বলে। ক্রিকেটমহল কখনও এ ভাবে ভাবে না। এগুলো রাজনৈতিক দেখার ধরন। নইলে সিধু এক জন নামী টেস্ট ক্রিকেটার। রামিজ হল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন টিমের সদস্য। তারা কমেন্ট্রিতে কিছু মনে হয়েছে, বলেছে। আমার তো মনে হয় ওদের যদি জবাব দিতে হয়, বাইশ গজ হল সেরা জায়গা, মুখ বন্ধ করতে হলে সেটা পারফরম্যান্স দিয়েই করা ভাল— জোর জবরদস্তি করে নয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy