কিংস ইলেভেন পঞ্জাবকে হারানোর পরে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সামনে এ বার মিশন মুম্বই। মোহালিতে পঞ্জাবকে হারিয়ে ওঠার পরে ম্যাচের নায়ক শুভমন গিলের চোখে এখন ওয়াংখেড়ে জয়ের স্বপ্ন।
শুক্রবার আইপিএলে জীবনের প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচ সম্মান পাওয়া শুভমন বলেছেন, ‘‘জানতাম, এখানে ভাল রান পাব। মোহালি আমার ঘরের মাঠ। এই মাঠটা হাতের তালুর মতো চিনি। তাই নিশ্চিত ছিলাম, প্রথম দিকে দ্রুত রান করতে না পারলেও পরে স্ট্রাইক রেট বাড়িয়ে নিতে পারব।’’
আরও একটা ব্যাপারে নিশ্চিত শুভমন। যে, রবিবারের ম্যাচে মুম্বইকে হারিয়ে দিতে পারবে কলকাতা নাইট রাইডার্স।
আরও পড়ুন: জিতলেই প্লে অফ, মুম্বই ম্যাচে দলে কি একটি পরিবর্তন করছে কেকেআর?
পঞ্জাব ম্যাচের পরে কেকেআরের টুইটারে পোস্ট করা এক ভিডিয়ো সাক্ষাৎকারে শুভমন বলেছেন, ‘‘আমরা জানি, মুম্বই এই ম্যাচটা জিততে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাবে। কারণ, আগের ম্যাচে ইডেনে আমরা ওদের ভাল মতো হারিয়েছিলাম। কিন্তু আমি আত্মবিশ্বাসী, দল হিসেবে আমরা যে রকম ছন্দে আছি, তাতে এ বারও মুম্বইকে হারিয়ে দিতে পারব।’’ রোহিত শর্মারা ইতিমধ্যেই প্লে-অফে উঠে গিয়েছেন। কেকেআরের ভাগ্য ঠিক হবে মুম্বই ম্যাচের পরেই।
পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ছেলের ইনিংস ভিআইপি বক্সে বসে উপভোগ করেন শুভমনের বাবা-মা। শুভমন বাউন্ডারি মারতেই দেখা গিয়েছে তাঁর বাবা লখীন্দর সিংহ বক্সে উঠে দাঁড়িয়ে নাচ শুরু করে দিয়েছেন। যা নিয়ে ম্যাচের পরে টুইটও করেন শাহরুখ খান। কেকেআর মালিক লেখেন, ‘‘এই রাত পাপার।’’
এই পরিবেশে এ রকম একটা ইনিংস খেলে কী রকম লাগছে? শুভমনের জবাব, ‘‘বাবা-মার সামনে এ রকম ইনিংস খেলার অনুভূতিটাই আলাদা। আর শুধু বাবা-মা নয়, অন্যন্য আত্মীয়, গ্রামের বাড়ির লোক— অনেকেই মাঠে এসেছিল আমার খেলা দেখতে। মাঠে নামার সময় কেউ যদি বুঝতে পারে, তার জন্য গ্যালারিতে এত সমর্থন আছে, তা হলে সে এমনিতেই তেতে যাবে। আমি জানতাম, ওদের সামনে আমার সেরাটা দিতে হবে। এই সমর্থনটাই আমাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে।’’
ছোটবেলা থেকে মোহালিতে খেলেছেন। এই মাঠে আপনার ভাল ভাল অনেক ইনিংস আছে। পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নামার সময় সে সব কি আপনার মাথায় ছিল? প্রশ্নের জবাবে এই তরুণ নাইট বলেন, ‘‘কোনও একটা জায়গা আপনি যদি ভাল করে চেনেন, তবে সেটা খুব বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। গত ১০-১১ বছর থেকে আমি এই মাঠে খেলছি। জানতাম, কী পরিস্থিতিতে কী রকম খেলতে হয়। মোহালির আউটফিল্ড খুব দ্রুত, এখানে বেশি করে এক-দুই রান নেওয়া যায়। নিশ্চিত ছিলাম, প্রয়োজনে নিজের ইনিংসের স্ট্রাইক রেট বাড়িয়ে নিতে পারব। আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, এখানে বড় রান করতে পারব। কারণ, মোহালি আমার ঘরের মাঠ।’’
গত মরসুমের মতো এ বারের আইপিএলেও শুরু থেকে শুভমনকে ওপেনে নামাতে তৈরি ছিল না কেকেআর। নাইট অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক মাঝে এমনও বলেছিলেন, ‘‘শুভমন পরের দিকেই ব্যাট করবে। ওকে দিয়ে ওপেন করানোর পরিকল্পনা আমাদের নেই।’’ সেই সময় কেকেআর ইনিংস শুরু করতেন ক্রিস লিন এবং সুনীল নারাইন। কিন্তু নারাইন সে ভাবে রান না পাওয়ায় শুভমনকে ওপেনে তুলে আনে নাইট ম্যানেজমেন্ট। তার পর থেকে দুরন্ত ছন্দে পঞ্জাবের এই তরুণ।
শুধু দলকে ভাল শুরু দেওয়াই নয়, এখন ম্যাচ শেষ করেও আসছেন তিনি। যা নিয়ে শুভমন বলেছেন, ‘‘সেটাই এক জন ওপেনারের কাজ। দল সেটাই চায় এক জন ওপেনারের থেকে। ইনিংস শুরু করতে নেমে একেবারে ম্যাচ শেষ করে আসা। আমি সেটা করারই চেষ্টা চালাচ্ছি।’’