Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
IPL 2020

রায়ুডুর ৭১, উদ্বোধনী ম্যাচে মুম্বইকে পাঁচ উইকেটে হারাল চেন্নাই

শনিবার উদ্বোধনী ম্যাচে জেতার জন্য চেন্নাইয়ের দরকার ছিল ১৬৩ রান।

আক্রমণাত্মক রায়ুডু। শনিবার আবু ধাবিতে। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া।

আক্রমণাত্মক রায়ুডু। শনিবার আবু ধাবিতে। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া।

সংবাদ সংস্থা
আবু ধাবি শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২৩:৩৬
Share: Save:

মরুশহরে আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে জিতল চেন্নাই সুপার কিংস। শনিবার মহেন্দ্র সিংহ ধোনি দল চার বল বাকি থাকতে জিতল পাঁচ উইকেটে। প্রথম ম্যাচেই হারল গত বারের চ্যাম্পিয়ন রোহিত শর্মার মুম্বই ইন্ডিয়ান্স

টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন সিএসকে নেতা মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের ভিড় ধোনির দলে, ‘ফিনিশার’ হিসেবে ছিলেন স্বয়ং তিনি। সেই কারণেই ‘ক্যাপ্টেন কুল’ মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে আগে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন। শেষের দিকের ওভারে মুম্বই পর পর উইকেট হারানোয় চেন্নাইয়ের সামনে খুব বড় রানের লক্ষ্য ছিলও না। গত বারের আইপিএল ফাইনালের শোধ তোলার জন্য ধোনির দলকে করতে হত ১৬৩ রান। ১৯.২ ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছে গেল চেন্নাই (১৬৩-৫)।

রান তাড়া করতে নেমে চেন্নাইয়ের শুরু ভাল হয়নি। দুই ওভারের মধ্যে ফিরে গিয়েছিলেন দুই ওপেনার শেন ওয়াটসন (৪) ও মুরলী বিজয় (১)। দু’জনেই হন এলবিডব্লিউ। ফেরান যথাক্রমে ট্রেন্ট বোল্ট ও জেমস প্যাটিনসন। এর পর তৃতীয় উইকেটে ফাফ দু’প্লেসি ও অম্বাতি রায়ুডু নির্ভরতা দেন চেন্নাইকে। ১০ ওভারের শেষে দুই উইকেটে ৭০ ছিল সিএসকে-র স্কোর।

সেখান থেকে রায়ুডু-দু’প্লেসি ১১৫ রান যোগ করে ম্যাচকে ক্রমশ একপেশে করে তোলেন। এ বারের আইপিএলে প্রথম পঞ্চাশ করলেন রায়ুডু। তাঁর হাফ সেঞ্চুরি এল ৩৩ বলে। জশপ্রীত বুমরাকে মাঝের ওভারে আক্রমণে এনেও জুটি ভাঙতে পারেননি মুম্বই অধিনায়ক রোহিত শর্মা। পড়ল ক্যাচ। হল মিসফিল্ডও। ৪৮ বলে ৭১ করে রায়ুডু যখন লেগস্পিনার রাহুল চাহারকেই লোপ্পা ফিরতি ক্যাচ দিলেন, তখনও ২৪ বলে ৪২ রান করতে হবে চেন্নাইকে। রায়ুডুর ইনিংসে ছিল ছয়টি চার ও তিনটি ছয়।

আরও পড়ুন: বোলিং ডোবাবে? আনন্দবাজার ডিজিটালের প্রশ্নে কী বললেন নাইট কোচ​

শেষ তিন ওভারে চেন্নাইয়ের প্রয়োজন ছিল ২৯ রান। হাতে ছিল সাত উইকেট। ক্রুণাল পান্ড্য ১৮তম ওভারের প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ করেন জাডেজাকে (১০)। কিন্তু ধোনি নন, ক্রিজে আসেন বাঁ-হাতি স্যাম কারেন। তাঁর দাপটে শেষ ১২ বলে দরকার ছিল ১৬ রান। বুমরার বলে কারেন (ছয় বলে ১৮) ফেরার পর নামেন ধোনি। কিন্তু প্রথম বলেই তাঁকে কট বিহাইন্ড দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান এমএসডি। ডিআরএস যে কেন অনেকের কাছে ‘ধোনি রিভিউ সিস্টেম’ তা ফের প্রতিফলিত হল এই ম্যাচে।

শেষ ওভারে চেন্নাইয়ের প্রয়োজন ছিল পাঁচ রান। ট্রেন্ট বোল্টের দ্বিতীয় বলেই খেলায় দাঁড়ি টেনে দেন ডি’ভিলিয়ার্স (৪৪ বলে অপরাজিত ৫৮)। তাঁর পঞ্চাশ এল ৪২ বলে। এদিকে, খাতা খুলতেই হল না ধোনিকে। দুই বলে তিনি কোনও রান না করে অপরাজিত থাকলেন।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের শুরুটা খারাপ হয়নি। রোহিত শর্মা ও কুইন্টন ডি কক ওপেন করতে নেমেছিলেন। দীপক চহারের প্রথম বলটাই বাউন্ডারিতে পাঠান ‘হিটম্যান’। মনেই হয়নি যে করোনাভাইরাসের জন্য প্রায় মাস ছয়েক অনুশীলন করতে পারেননি রোহিত। সঙ্গী কুইন্টন ডি ককও ছন্দে ছিলেন। চার ওভারের শেষে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের রান ছিল বিনা উইকেটে ৪৫।

ফাস্ট বোলাররা কাজে আসছেন না দেখে পীযূষ চাওলাকে ডেকে নিয়েছিলেন ধোনি। আর তাতেই বাজিমাত। পীযূষ চাওলা বল করতে এসেই ফিরিয়ে দেন রোহিতকে। ১০ বলে ১২ রান করে ফেরেন মুম্বই অধিনায়ক। স্যাম কারেনের পরের ওভারেই আউট হন কুইন্টন ডি কক (২০ বলে ৩৩)। ৪৮ রানে পড়েছিল মুম্বইয়ের দ্বিতীয় উইকেট। তৃতীয় উইকেট পড়ল ৯২ রানে। দীপক চাহারের বলে ফিরলেন সূর্যকুমার যাদব (১৭)। চতুর্থ উইকেট পড়ল ১২১ রানে। ৩১ বলে ৪২ করে ফিরলেন সৌরভ তিওয়ারি। বাঁ-হাতির ইনিংসে ছিল তিনটি চার ও একটি ছয়। রবীন্দ্র জাডেজার সেই ওভারেই ফিরলেন হার্দিক পান্ড্য (১০ বলে ১৪)। কয়েক বল পরেই সৌরভ-হার্দিককে ফিরিয়ে চেন্নাইকে ম্যাচে ফেরালেন ‘স্যর’ জাডেজা।

আরও পড়ুন: এ বার কি আইপিএলে চার-ছয় কমবে? তেমনই প্রশ্ন উঠছে তিন স্টেডিয়াম দেখে

১৫ ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে মুম্বই তুলেছিল ১২৬ রান। ওই অবস্থায় ভরসা ছিলেন কিয়েরন পোলার্ড। কিন্তু, তিনি ১৮ রানের বেশি করতে পারলেন না। পোলার্ডের পর ক্রুণাল পান্ড্য (৩), জেমস প্যাটিনসনকেও (১১) ফেরালেন এনগিডি। ৩৮ রানে তিন উইকেট নেওয়া প্রোটিয়া পেসারই দলের সফলতম। তাঁর দাপটেই ডেথ ওভারে ক্রমাগত উইকেট হারাল মুম্বই। দীপক চাহার ও রবীন্দ্র জাডেজা নিলেন দুটো করে উইকেট।

গত বারের ফাইনালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সএর কাছে ১ রানে হেরে গিয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংসকে। সেই হারের মধুর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ এ দিন ছিল ধোনির দলের সামনে। এই ম্যাচে ক্রিকেটভক্তদের চোখ ছিল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দিকে। গত বছর ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে শেষ বার তাঁকে দেখা গিয়েছিল খেলতে। মার্টিন গাপ্টিলের থ্রোয়ে রান আউট হওয়ার এতদিন পর ধোনি নামলেন প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর ৩৪ দিন পর ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগে নামা ‘ক্যাপ্টেন কুল’ নিলেন দুটো ক্যাচ। আইপিএলে তাঁর ক্যাচের সংখ্যা স্পর্শ করল ১০০।

উদ্বোধনী ম্যাচের আগে মনোবল বাড়ানোর জন্য মুম্বই অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং চেন্নাই অধিনায়ক ধোনিকে শুভেচ্ছাবার্তা জানিয়েছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিক শাহরুখ খান। টুইটে ‘কিং খান’ লিখেছিলেন, ‘‘আজকের ম্যাচের জন্য চেন্নাই সুপার কিংস ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে শুভেচ্ছা জানাই। সব প্লেয়াররা সুস্থ থেকে নিজেদের সেরাটা যাতে তুলে ধরতে পারে, সেই আশাই রাখি। দারুণ একটা ম্যাচ হোক। ছ’ফুটের দূরত্ব বজায় রেখে রোহিত শর্মা ও এমএস ধোনি তোমাদের আলিঙ্গন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE