Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
IPL 2020

বাটলারের ৭০, চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে দাপটে ৭ উইকেটে জিতল রাজস্থান

আইপিএলে এটা ছিল ধোনির ২০০তম ম্যাচ। সেই ম্যাচ তিনি স্মরণীয় করে রাখুন, এমনই চাইছিলেন ভক্তরা। কিন্তু, তা হল না। হারল চেন্নাই। ব্যাট হাতেও চেনা ছন্দে দেখা গেল না ধোনিকে।

আক্রমণাত্মক বাটলার। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে সোমবার। ছবি: আইপিএল।

আক্রমণাত্মক বাটলার। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে সোমবার। ছবি: আইপিএল।

সংবাদ সংস্থা
আবু ধাবি শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২০ ১৯:২৯
Share: Save:

১২৬ রানের জয়ের লক্ষ্য তাড়া করে শুরুটা ভাল হয়নি রাজস্থান রয়্যালসের। ২৮ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল তারা। যা ম্যাচে ফিরিয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংসকে। কিন্তু, রয়্যালস অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ ও জোস বাটলারের জুটি বাধা হয়ে উঠল চেন্নাইয়ের সামনে। অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেটে দু’জনে কঠিন পরিস্থিতি থেকে ১৭.৩ ওভারে জিতিয়ে ফিরলেন রাজস্থানকে (১২৬-৩)। ১৫ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটে দাপটে জিতল স্মিথের দল। জিতে ১০ ম্যাচে ৮ পয়েন্টে তালিকায় পাঁচে উঠে এল রাজস্থান। অন্য দিকে, ১০ ম্যাচে ৬ পয়েন্টে সবার শেষে চলে গেল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই।

রান তাড়া করে ২৬ রানে প্রথম উইকেট হারিয়েছিল রাজস্থান। তৃতীয় ওভারে দীপক চাহারের বলে বোল্ড হয়েছিলেন বেন স্টোকস (১১ বলে ১৯)। পরের ওভারে জোশ হ্যাজলউডের বলে ধোনিকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছিলেন রবিন উথাপ্পা (৯ বলে ৪)। ২৮ রানেই উথাপ্পার পর সঞ্জু স্যামসনকে হারিয়েছিল রাজস্থান। পঞ্চম ওভারে চাহারের বলে স্যামসনের ক্যাচ অসাধারণ দক্ষতায় লেগ সাইডে ঝাঁপিয়ে ধরেছিলেন ধোনি। আইপিএলে কিপার হিসেবে ধোনির শিকার সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১৫০।

উইকেটের খোঁজে মরিয়া ধোনি রাজস্থান ইনিংসের ৯ ওভারের মধ্যে দুই পেসার দীপক চাহার ও জোশ হ্যাজলউডের কোটা শেষ করে দিয়েছিলেন। দীপকের গড় ছিল ৪-১-১৮-২। হ্যাজলউডের গড় ছিল ৪-০-১৯-১। কিন্তু, এই দুই পেসারের পর সে ভাবে চাপ ধরে রাখতে পারলেন না সিএসকে বোলাররা।

রাজস্থান অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ ও জোস বাটলার অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেটে টানলেন দলকে। দু’জনের জুটিতে ৪৩ বলে উঠেছিল পঞ্চাশ। তার মধ্যে বাটলারেরই ছিল ৪০। শেষ পর্যন্ত দু’জনে ১৩ ওভারে যোগ করলেন ৯৮ রান। আর এই জুটিই তফাত গড়ে গেল। বাটলারের পঞ্চাশ এল ৩৭ বলে। ৫টি চার ও ১টি ছয়ের সাহায্যে। পীযূষ চাওলাকে চার মেরে হাফ সেঞ্চুরিতে পৌঁছলেন তিনি। পরের দুই বলেও মারলেন বাউন্ডারি। তাঁর ৪৮ বলে ৭০ রানের ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ২টি ছয়। উল্টো দিকে, স্মিথ ধীরে ধীরে গতি বাড়ালেন। ৩৪ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকলেন তিনি।

এটা ছিল আইপিএলে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ধোনির ২০০তম ম্যাচ। কিন্তু, ব্যাট হাতে বড় রান পাননি তিনি। ২৮ বলে ২৮ করে রান আউট হয়েছিলেন। চেন্নাইও হারল। আইপিএলের প্লে-অফে যাওয়ার রাস্তা দুর্গম হয়ে উঠল সিএসকে-র সামনে। বাকি ম্যাচগুলোর প্রতিটাতে জিতলে তাদের পয়েন্ট পৌঁছবে ১৪-তে। যা মোটেই প্লে-অফ নিশ্চিত করছে না।

প্রথমার্ধে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে চেন্নাই তুলেছিল ১২৫। এ বারের আইপিএলে প্রথমে ব্যাটিং করে এটাই সর্বনিম্ন স্কোর। প্রথম থেকেই চাপে ছিল চেন্নাই ইনিংস। যা কখনই গতি পায়নি। উইকেটে স্পিন ছিল ঠিকই, কিন্তু সিএসকে ব্যাটসম্যানরা খুব একটা আক্রমণাত্মকও ছিলেন না। ১০ ওভারের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল ৪ উইকেট। ফিরে গিয়েছিলেন ফাফ দু’প্লেসি (৯ বলে ১০), শেন ওয়াটসন (৩ বলে ৮), স্যাম কারেন (২৫ বলে ২২) ও অম্বাতি রায়ুডু (১৯ বলে ১৩)। জোফ্রা আর্চার, কার্তিক ত্যাগী, শ্রেয়স গোপাল ও রাহুল তেওয়াটিয়া— প্রত্যেকেই নিয়েছিলেন উইকেট। শ্রেয়স ও তেওয়াটিয়া, দুই স্পিনারের ৮ ওভারে ওঠেনি রানও। তাঁরা দিলেন মাত্র ৩২ রান।

কেরিয়ারের ২০০তম আইপিএল ম্যাচে রান তাড়া নয়, রাজস্থানের বিরুদ্ধে টস জিতে প্রথমে ব্য়াট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। চেন্নাই সুপার কিংস অধিনায়কের ধারণা ছিল, পিচ ক্রমশ আরও মন্থর হয়ে পড়বে। কিন্তু, তাঁর দলের ইনিংসও যে এত মন্থর গতিতে এগোবে, তা নিশ্চয় ভাবতে পারেননি তিনি। পাওয়ারপ্লে-র ৬ ওভারে উঠেছিল ৪৩ রান। ১০ ওভারের পর রান ছিল ৫৬। ১৫ ওভারের পর সেটাই দাঁড়িয়েছিল ৮৯।

আরও পড়ুন: ধোনিকে ‘ম্যাচ ফিট’ মনে করছেন না মিয়াঁদাদ, দিলেন নিদানও

আরও পড়ুন: ‘সুপার ওভারে শামি ৬টাই ইয়র্কার দিতে চেয়েছিল’​

এরই মধ্যে ধোনি আইপিএলে ৪০০০ রান পূর্ণ করে ফেলেছিলেন। পাঁচ নম্বরে যখন নেমেছিলেন তখন স্কোরবোর্ডে উঠেছিল ৫৩। সেই পরিস্থিতি থেকে রবীন্দ্র জাডেজার সঙ্গে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেছিলেন তিনি। পঞ্চম উইকেটে দু’জনে ৫১ রান যোগও করেছিলেন। তবে তা এসেছিল ৪৬ বলে। এবং, দু’জনে বাউন্ডারি মারতেও পারেননি। এর পরই ঘটেছিল ছন্দপতন। দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়েছিলেন ধোনি। ১০৭ রানে পড়েছিল চেন্নাইয়ের পঞ্চম উইকেট।

এদিন সাত নম্বরে নেমেছিলেন কেদার যাদব। কেন খেলানো হচ্ছে তিনি, তা নিয়ে চর্চা চলছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু, তিনিও বড় শট নিতে পারেননি। ৭ বলে অপরাজিত থাকলেন ৪ রানে। তার মধ্য়েই পেয়েছিলেন জীবনদান। লং অফে জোফ্রা আর্চার ফেলেছিলেন তাঁকে। চেন্নাইকে ১২৫ রানে পৌঁছে দিয়েছিল জাডেজার লড়াই। তিনি ৩০ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।

প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে ২০০তম ম্যাচ ধোনি স্মরণীয় করে রাখুন, এমনই চাইছিলেন ভক্তরা। কিন্তু এ দিনও মনে রাখার মতো স্কোর এল না তাঁর ব্যাটে। এ বারের আইপিএলে ৮ ইনিংসে একবারও পঞ্চাশের গণ্ডি পার করতে পারেননি তিনি। চেনা মেজাজে ম্যাচ জিতিয়ে ফিরতেও পারছিলেন না। তবে ধোনি ২০০তম ম্যাচ নিয়ে যথারীতি নির্বিকার ছিলেন। টস জিতে তিনি বরং পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলেন, “১৯০ ও ২০০ ম্যাচের মধ্যে কী তফাত?”

এই ম্য়াচে চেন্নাই দলে এসেছিলেন জোস হ্যাজলউড ও পীযূষ চাওলা। চোট পাওয়া ডোয়েন ব্র্যাভো ও কর্ণ শর্মা খেলেননি। একটি পরিবর্তন হয়েছিল রাজস্থান দলে। জয়দেব উনাদকাটের জায়গায় এসেছিলেন অঙ্কিত রাজপুত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

IPL 2020 Chennai Super Kings Rajasthan Royals
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE