Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
IPL 2021

চূড়ান্ত ব্যর্থ বোলিং, মিডল অর্ডার তথৈবচ, ৩৮ রানে হার মর্গ্যানদের, শীর্ষে কোহলীরা

আরসিবি-র দুই ব্যাটসম্যান জয়ের জন্য যতটা দায়ী, ততটাই অবদান রয়েছে মর্গ্যানের ভুল অধিনায়কত্ব এবং কেকেআরের খারাপ ফিল্ডিংয়ের।

আমরা একে। এটাই বোঝাচ্ছেন কোহলী?

আমরা একে। এটাই বোঝাচ্ছেন কোহলী? ছবি আইপিএল

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২১ ১৯:৩৪
Share: Save:

একা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলে রক্ষা নেই, সুগ্রীব হয়ে দেখা দিলেন এবি ডিভিলিয়ার্স। দু’জনের ইনিংসে ভর করে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ৩৮ রানে হারিয়ে আইপিএল-এ জয়ের হ্যাটট্রিক হল বিরাট কোহলীর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের। আরসিবি-র ২০৪/৪-এর জবাবে কেকেআর থামল ১৬৬/৮-এ।

আরসিবি-র দুই ব্যাটসম্যান জয়ের জন্য যতটা দায়ী, ততটাই অবদান রয়েছে মর্গ্যানের ভুল অধিনায়কত্ব এবং কেকেআরের খারাপ ফিল্ডিংয়ের। প্রথম ওভারে কোহলীর মতো ব্যাটসম্যানের উইকেট নেওয়া সত্ত্বেও তিনি বরুণ চক্রবর্তীকে আনলেন না। ছন্দে থাকা ম্যাক্সওয়েলের সামনে এমন বোলারদের আনলেন, যাঁদের খেলতে পছন্দ করেন অজি ব্যাটসম্যান। ফল যা হওয়ার তাই হল। ম্যাক্সওয়েল দাপট চালালেন আগাগোড়া।

দ্বিতীয় ওভারটা শুরু হয়েছিল স্বপ্নের মতো। দ্বিতীয় বলেই বিরাট কোহলী আউট। ছক্কা মারার চেষ্টা করতে গিয়ে বল ব্যাটের কানায় লেগেছিল। পিছন দিকে অনেকটা দৌড়ে কপিলদেবকে মনে করিয়ে ক্যাচ নিলেন রাহুল ত্রিপাঠি। যে কোনও দলের কাছে কোহলীকে ম্যাচের অষ্টম বলে ফেরানো স্বপ্নের মতো ব্যাপার। বরুণ চক্রবর্তী সেটাকেই সম্ভব করে দেখালেন।

এখানেই থামেননি। ওভারের শেষ বলে বরুণ সরাসরি উইকেট ভেঙে দিলেন রজত পতিদারের। এক ওভারে দুটি উইকেট পেয়ে তখন আত্মবিশ্বাসে ফুটছেন বরুণ। অবাক করা ব্যাপার, তারপরে তো আনাই হল না তাঁকে। আগেরদিনই দেখা গিয়েছিল ছন্দে থাকা দীপক চাহারকে দিয়ে টানা চার ওভার করিয়ে নিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। রবিবার সামনে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মতো ব্যাটসম্যান থাকা সত্ত্বেও মর্গ্যান আনার প্রয়োজনই মনে করলেন না বরুণকে। যখন আনলেন, তখন বরুণের আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকেছে। উল্টোদিকে ম্যাক্সওয়েল ফুটছেন।

কলকাতার কোনও বোলারকেই মনে হয়নি ম্যাক্সওয়েলকে থামাতে পারেন। শাকিব, কামিন্স, প্রসিদ্ধ— অনেককে দিয়েই চেষ্টা করেছিলেন মর্গ্যান। কিন্তু ম্যাক্সওয়েল যেদিন ফর্মে থাকেন সেদিন লাইন-লেংথ কিছুই খাটে না। আর সঙ্গে এবি ডিভিলিয়ার্স থাকলে তো কথাই নেই। এই দু’জনই দুঃস্বপ্ন হয়ে গেলেন কেকেআরের কাছে। কোহলীর ব্যর্থতার দিনে তাঁর দলের অন্যতম দুই সতীর্থ দায়িত্ব তুলে নিলেন।

ম্যাক্সওয়েল ফেরার পরেও থামতে দেখা যায়নি ডিভিলিয়ার্সকে। উল্টে তাঁকে আরও মারার সুযোগ করে দেন মর্গ্যান, রাসেলকে বোলিং আক্রমণে এনে। আগেরদিন পাঁচ উইকেট পাওয়া রাসেল যেন রবিবার শিক্ষানবিশ। লোপ্পা বল করে ডিভিলিয়ার্সকে রান তোলার সুযোগ করে দিচ্ছিলেন একাই। রাসেলের বোলিংয়ে না ছিল লাইন, না ছিল লেংথ। ডিভিলিয়ার্স সেই সুযোগ ভালই কাজে লাগালেন। তাঁর মারের জন্যেও দুশোর গন্ডি পেরোল আরসিবি।

দশের উপর আস্কিং রেট থাকায় উইকেটে থিতু হওয়ার কোনও সুযোগই ছিল না কেকেআরের ব্যাটসম্যানদের কাছে। তাই শুরু থেকেই হাত চালাতে থাকেন শুভমন গিল। কাইল জেমিসনকে জোড়া ছক্কা মেরেছিলেন। কিন্তু অতি উত্তেজিত হয়ে ভুল শট খেলে নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনলেন। পরবর্তী ব্যাটসম্যান রাহুল ত্রিপাঠিও প্রথম থেকেই চালাতে শুরু করেছিলেন। তাঁকেও ফিরতে হল ভুল শটে। অভিজ্ঞতার অভাব প্রকট হয়ে দেখা দিল বারবার।

এ অবস্থায় দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল দীনেশ কার্তিক এবং মর্গ্যানের। কার্তিক ২ রানে ফিরলেন। মর্গ্যান তবু একটা চেষ্টা করেছিলেন বটে। কিন্তু ২৯-এর বেশি এগোতে পারলেন না। শেষ আশা-ভরসার একটাই নাম ছিল। আন্দ্রে রাসেল। দু’বছর আগে আরসিবি-র বিরুদ্ধে তাঁর দলকে জেতানোর স্মৃতি এখনও টাটকা। রবিবারও সে রকমই ছন্দ দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছিল বিরাট, যা পেরোতে গেলে আরও আগে থেকেই হাত খুলতে হত।

ফলে জয়ের হ্যাটট্রিক থেকে রোখা গেল না কোহলীর আরসিবি-কে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE