প্রত্যয়ী: নিজেকে প্রমাণ করতে মরিয়া আকাশ। ফাইল ছবি।
গোড়ালিতে চোট পেয়ে সাত ম্যাচের জন্য ছিটকে গিয়েছেন জশ হেজ্লউড। তাঁর পরিবর্ত পেসার হিসেবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর কাকে খেলায়, তা পরিষ্কার হয়ে যাবে আজ, রবিবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ম্যাচে। দায়িত্ব যতই বড় হোক, তার জন্য তৈরি বাংলার পেসার আকাশ দীপ।
আইপিএল শুরু হওয়ার আগে বান্ধবীর সঙ্গে আংটি বদল করে উড়ে গিয়েছেন বেঙ্গালুরু। দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার পর থেকেই মাইক হেসন তাঁর উপরে বড় দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছেন। হেজ্লউডের চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ার খবর শুক্রবার প্রকাশিত হলেও আরসিবি শিবিরের সকলেই নিশ্চিত ছিলেন, প্রথম কয়েকটি ম্যাচে তাঁকে পাওয়া সম্ভব নয়। যার ফলে নিয়মিত রিস টপলি ও আকাশকে বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে অনুশীলনে।
আকাশও বুঝতে পেরেছিলেন, অস্ট্রেলীয় জোরে বোলারকেও হয়তো শুরুর দিকে পাওয়া যাবে না। তাই বেঙ্গালুরু উড়ে যাওয়ার আগে আনন্দবাজারকে আকাশ বলেছিলেন, ‘‘দল কাকে খেলাবে সেটা অবশ্যই তাদের ব্যাপার। তবে আমি সব দিক থেকে তৈরি থাকব।দায়িত্ব নিতে এখন আর ভয় পাই না। আরসিবি দল পরিচালন সমিতি যদি মনে করে আমি প্রথম একাদশে খেলার যোগ্য, তা হলে নিশ্চয়ই খেলব। বাংলার হয়ে দায়িত্ব সামলেছি। এ বার আইপিএলে নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করব।’’
আরসিবি শিবিরে রয়েছেন বিরাট কোহলি, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মতো তারকা। তাঁদের সঙ্গে শেষ মরসুমেও খেলেছেন আকাশ। কিন্তু আরসিবির হয়ে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে খেলার অভিজ্ঞতা আগে হয়নি। আকাশ বলছিলেন, ‘‘বিরাট ভাই থাকলে আত্মবিশ্বাস এমনিতেই বেড়ে যায়। কোনও ক্রিকেটারকে জুনিয়র হিসেবে দেখে না বিরাট ভাই। তার কাছে সকলে সমান। আমার সঙ্গেও ডিনার করতে যেত শেষ মরসুমে।’’
কোহলিতে অভিভূত বঙ্গ পেসার আরও বলে যান, ‘‘বিরাট ভাইয়ের মতো ক্রিকেটারের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ব্যবহার করার মতো সৌভাগ্য সকলের হয় না। এটাই আরসিবির হয়ে খেলার সব চেয়ে উজ্জ্বল দিক।’’ আরও বলেন, ‘‘নেটেও একই রকম ক্ষিপ্রতার সঙ্গে ব্যাট করে বিরাট ভাই। নেট প্র্যাক্টিসকে ম্যাচ হিসেবেই দেখে। ফিল্ডিং পজিশন বলে দিতে হয় আগে থেকে। সেই অনুযায়ী শট খেলে। বোলার হিসেবে আমারও তাতে অনেক সুবিধা হয়ে যায়। ফিল্ডিং অনুযায়ী বল করার অভ্যেস তৈরি হয়ে যায়।’’
ডেল স্টেনের বোলিং দেখে অনুপ্রাণিত আকাশ। আগে ইনসুইংই করাতেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন জোরে বোলারের ভিডিয়ো দেখে আউটসুইংও রপ্ত করে ফেলেছেন। এ বার রঞ্জি ট্রফিতেও তাঁকে আউটসুইং করাতে দেখা গিয়েছে। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের পরিবেশ সুইংয়ের জন্য আদর্শ। উইকেটে পড়ে বল নড়াচড়াও করে। বাউন্সও আদায় করা যায়। সেই পিচে প্রথম ম্যাচ খেলতে উত্তেজিত আকাশ। বলছিলেন, ‘‘ফাঁকা সময়ে ডেল স্টেনের অনেক ভিডিয়ো দেখি। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে বল করার সময় কোন জায়গায় বল রেখে সাহায্য পেতেন, সে সবও শেখার চেষ্টা করেছি। ইনসুইং বরাবরই আমার শক্তি। এখন আউটসুইংও করাতে শুরু করেছি। স্টেনের মতো হয়তো পারি না, কিন্তু আগের চেয়ে বৈচিত্র অনেক বেড়েছে। নাক্ল বলও রপ্ত করেছি। কিন্তু চিন্নাস্বামীর পিচে এই বৈচিত্র কাজে লাগে কি না সেটাই দেখার।’’
বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্লর আশীর্বাদ নিয়ে বেঙ্গালুরু উড়ে গিয়েছেন আকাশ। তাঁর প্রশিক্ষণে বোলিং যে আরও উন্নত হয়েছে, তা বলতে দ্বিধাবোধ করলেন না বঙ্গ পেসার। তাঁর কথায়, ‘‘লক্ষ্মীদা সব সময়ই আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর চেষ্টা করেন। বাংলাকে এ বার হয়তো আমরা রঞ্জি ট্রফি জেতাতে পারিনি, কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা একটা পরিণত এবং সঙ্ঘবদ্ধ দল হয়ে উঠেছি।’’ যোগ করেন, ‘‘ম্যাকোদাও (শিবশঙ্কর পাল) আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। লাইন ও লেংথের সমস্যা একেবারেই কেটে গিয়েছে তাঁর কাছে অনুশীলন করে। এ বার আরসিবির হয়ে মাঠে নিজেকে উজাড় করে দিতে চাই।’’
শেষ মরসুমেও আকাশ নিজের প্রতিভা মেলে ধরেছিলেন আইপিএল মঞ্চে। এ বার আরও পরিণত এবং তীক্ষ্ণ হয়ে ওঠা এক পেসারকে দেখার জন্য অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন আরসিবির সমর্থকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy