অভিষেক পোড়েল। —ফাইল চিত্র।
রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নেমেছিলেন অভিষেক পোড়েল। বাংলার তরুণ উইকেটরক্ষককে এমন জায়গায় ব্যাট করতে দেখে অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। সাধারণত নীচের দিকেই ব্যাট করতে দেখা যায় অভিষেককে। আইপিএলে যদিও বিভিন্ন জায়গায় ব্যাট করেছেন তিনি। টপ অর্ডারে এর আগে তিন নম্বরে ব্যাট করেছেন। আবার লোয়ার অর্ডারেও নেমেছেন। কিন্তু অভিষেককে ওপেন করতে দেখে একটু অবাক হননি বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল।
এ বারের সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে অভিষেককে ওপেন করতে পাঠিয়েছিলেন লক্ষ্মী। সেই পরিকল্পনা কাজে লাগে। রান পেয়েছিলেন অভিষেক। অর্ধশতরানও করেছিলেন ভারতের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায়। আনন্দবাজার অনলাইনকে লক্ষ্মী বললেন, “আইপিএলে অভিষেক যে ওপেন করছে, নতুন বলে খেলছে, সেই আত্মবিশ্বাসটা মুস্তাক আলি থেকেই পেয়েছে। বাংলার হয়ে ওপেন করতে পাঠিয়েছিলাম। দাদি (সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়) বলেছিল অভিষেককে এই জায়গায় খেলানোর সিদ্ধান্তটা দুর্দান্ত। দিল্লিতেও অভিষেক সেই জায়গায় খেলার সুযোগ পেয়ে সফল।”
২০২২ সালে বাংলার হয়ে অভিষেক হয় ঈশান পোড়েলের খুড়তুতো ভাইয়ের। দাদা পেস বোলার। ভাই যদিও ব্যাট হাতে বোলারদের শাসন করতে ভালবাসেন। সেই উইকেটরক্ষার দায়িত্ব। ঋদ্ধিমান সাহা বাংলা ছেড়ে ত্রিপুরা চলে গিয়েছেন। শ্রীবৎস গোস্বামী রান পাচ্ছেন না। তিনিও তখন কেরিয়ারের শেষের দিকে। এমন এক সময় আবির্ভাব অভিষেকের। লাল বলের ক্রিকেটে মিডল অর্ডারে ব্যাট করেন তিনি। বাংলার হয়ে রঞ্জিতে ধারাবাহিক ভাবে রান করছেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২৩ ম্যাচে ১০৭২ রান করেছেন অভিষেক। যা বুঝিয়ে দেয় অভিষেক কতটা ধারাবাহিক। এর নেপথ্যে অভিষেকের পরিশ্রমের সঙ্গে রয়েছে কোচ লক্ষ্মীর পরিশ্রমও।
অনুশীলনে নিজে থ্রো ডাউন দেন লক্ষ্মী। বাউন্সার সামলানোর অনুশীলন করান। কাঁধের উপরে বল ছুড়ে যান একের পর এক। আর তা সামলানোর অনুশীলন করেন অভিষেক। এ বারের আইপিএলে বোলারেরা ওভারে দু’টি করে বাউন্সার করার সুযোগ পাচ্ছেন। অভিষেককে তা সামলানোর জন্য তৈরি করে দিয়েছেন লক্ষ্মী। বাংলার কোচের একটি উপদেশ অভিষেককে আরও পরিণত করেছে। লক্ষ্মী বললেন, “অভিষেককে বলেছি মাথা ঠান্ডা রাখতে। যত মাথা ঠান্ডা রাখবে, তত ভাল খেলবে। উইকেটের পিছনে নয়, সামনে খেলতে বলেছি অভিষেককে। তাতেই বদলে গিয়েছে ওর খেলা। যত বেশি উইকেটের সামনে খেলবে, তত বেশি রান করবে।”
অনুশীলনে লক্ষ্মী বার বার সামনে খেলার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন অভিষেককে। লক্ষ্মী একটি করে বল ড্রপ খাওয়াচ্ছেন আর অভিষেক সেই বল সোজা খেলছেন। বাংলার অনুশীলনে এটা খুবই পরিচিত দৃশ্য। আর তাতেই বদলে গিয়েছেন অভিষেক। লক্ষ্মী যদিও এমন অনুশীলন শুধু অভিষেককে করান এমন নয়। বাংলার সব ব্যাটারকেই করান। ২১ বছরের অভিষেক সম্পর্কে লক্ষ্মী বললেন, “ও যদি মাথা ঠান্ডা রেখে খেলে যায়, তাহলে আগামী দিনে অনেক দূর যাবে।” বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরাও সেটাই দেখতে চান। ঋদ্ধিমানের পর ভারতীয় ক্রিকেটে আরও এক উইকেটরক্ষককে দেখতে চাইবেন তাঁরা। তরুণ অভিষেকের সামনে অনেকটা পথ বাকি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy