Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
ISL 2020

জন্মাতে দেখেছেন, নিজের হাতে গড়া সেই স্কটকে ডার্বিতে খুঁজবেন মর্গ্যান

ব্রিসবেন রোয়ার থেকে এসসি ইস্টবেঙ্গলে সই করা স্কট নেভিলকে ফুটবলার হওয়ার আগে থেকেই চিনতেন মর্গ্যান। ইস্টবেঙ্গলে সই করার আগে স্কট নেভিল দ্বারস্থ হয়েছিলেন মর্গ্যানের।

মর্গ্যানের কোচিংয়ে খেলেছেন ইস্টবেঙ্গলের স্কট। -ফাইল চিত্র।

মর্গ্যানের কোচিংয়ে খেলেছেন ইস্টবেঙ্গলের স্কট। -ফাইল চিত্র।

কৃশানু মজুমদার
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২০ ১৪:১১
Share: Save:

এক সময়ে ইস্টবেঙ্গল গ্যালারিতে তাঁর নামে জয়ধ্বনি উঠত। বহু ডার্বি ম্যাচের ফলাফল গড়ে দিয়েছিল তাঁর ক্ষুরধার মস্তিষ্ক। সেই ট্রেভর জেমস মর্গ্যান শুক্রবারের ডার্বির অপেক্ষায়। অস্ট্রেলিয়ায় থাকলেও তাঁর মনপ্রাণ পড়ে থাকবে গোয়ায়।

তার পিছনে অবশ্য একাধিক কারণ রয়েছে। পুরনো ক্লাব ইস্টবেঙ্গল আইএসএল-এ নামছে। প্রথম ম্যাচটাই আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে। এগুলো যেমন তাঁর কৌতূহল বাড়িয়ে দিচ্ছে, তেমনই ইস্টবেঙ্গলের নতুন বিদেশি স্কট নেভিল কেমন খেলেন, তা দেখতে চান বহু যুদ্ধের সৈনিক মর্গ্যান।

ব্রিসবেন রোয়ার থেকে এসসি ইস্টবেঙ্গলে সই করা স্কট নেভিলকে ফুটবলার হওয়ার আগে থেকেই চিনতেন মর্গ্যান। ইস্টবেঙ্গলে সই করার আগে স্কট নেভিল দ্বারস্থ হয়েছিলেন মর্গ্যানের। তাঁর কাছে এ দেশ এবং ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে জানতে চান ইস্টবেঙ্গলের নতুন বিদেশি। মর্গ্যানের পরামর্শ পেয়ে স্কট স্থির করেন ইস্টবেঙ্গলেই সই করবেন। পারথ থেকে ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচ মর্গ্যান আনন্দবাজার ডিজিটালকে বললেন, “ইস্টবেঙ্গলের প্রস্তাব পাওয়ার পরে স্কট আমাকে ইস্টবেঙ্গল ও ভারত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিল। আমি ওর প্রশ্নের উত্তর দিই। আমার জবাবে সন্তুষ্ট হয়েই স্কট ইস্টবেঙ্গলে খেলার সিদ্ধান্ত নেয়। ওর জন্য শুভেচ্ছা রইল।”

আরও পড়ুন: রক্তে ভেজা মাথা নিয়ে আইএসএল জেতান, প্রীতমদের নিয়ে উচ্ছ্বসিত এটিকে-র প্রাক্তনী

স্কটের বাবা স্টিভের সঙ্গে খেলেছেন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন সাহেব কোচ। মর্গ্যানের সহকারী হিসেবে কাজও করেছেন স্কট নেভিলের বাবা। ফুটবলার জীবনে ৪-৪-২ সিস্টেমে স্টিভ ও মর্গ্যান স্ট্রাইকার হিসেবে খেলতেন। অনেক ম্যাচে স্টিভকে গোলের গন্ধ মাখা বল বাড়িয়েছেন প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গল কোচ। ফেলে আসা দিনের স্মৃতিচারণ করে মর্গ্যান বলছিলেন, “স্কটকে জন্মাতে দেখেছি। ওর বাবা স্টিভের সঙ্গে আমি একসঙ্গে খেলতাম এক্সেটার সিটি ও সাউথ চায়নায়। পারথের ক্লাব সোরেন্টোর কোচ ছিলাম আমি। স্টিভ আমার সহকারী ছিল। আমার দুই ছেলে জেমস ও অ্যালেক্সের সঙ্গে স্কটও আমার কোচিংয়ে সোরেন্টোতে খেলেছে। অনূর্ধ্ব ৭ থেকে সমস্ত বয়সভিত্তিক গ্রুপেই দ্রুত উন্নতি করে স্কট। যার জন্য এ লিগের দল পারথ গ্লোরিতে সই করে। ওর পেশাদার ফুটবল জীবন শুরু হয় তখনই।”

পরে রবি ফাওলারের কোচিংয়ে রাইট ব্যাক পজিশনে ব্রিসবেন রোয়ারে খেলেন স্কট। কিন্তু ফুটবল জীবনের শুরুর দিকে মাঝমাঠই সামলাতেন স্কট। মর্গ্যান বলছিলেন, “আমার কোচিংয়ে স্কট মাঝমাঠেই খেলত। মাঠের ভিতরে খুবই ছটফটে ও। গোটা মাঠ জুড়ে খেলতো। অনুশীলনে ফাঁকি দিত না। ফুটবলের প্রতি চিন্তাভাবনাই অন্য রকমের ছিল। তখন ওর বয়স ছিল ১৭। পরে নিজের পজিশন বদলে রাইট ব্যাকে চলে আসে স্কট।”

ইস্টবেঙ্গলের কোচ হয়ে এসেই মোহনবাগানকে হারিয়ে ফেডারেশন কাপ জিতেছিলেন মর্গ্যান। তাঁর কোচিংয়ে মেহতাব হোসেন, পেন ওরজিরা মাঠে ফুল ফোটাতেন। দেশের প্রায় সমস্ত ট্রফি জিতলেও আই লিগ অধরা ছিল মর্গ্যানের। দ্বিতীয় ইনিংসে লাল-হলুদে ফিরে তেমন সাফল্য অবশ্য পাননি। সাহেব কোচকে ছাড়তে হয় লাল-হলুদ। তার পরে ইস্টবেঙ্গলে শুরু হয় স্প্যানিশ জমানা। এ বার কোচের রিমোট কন্ট্রোল উঠেছে কিংবদন্তি রবি ফাওলারের হাতে। প্রাক্তন কোচ বলছেন, “রবি ফাওলার নিজের মতো করেই সব গুছিয়ে নেবেন। ইস্টবেঙ্গলের জন্য শুভেচ্ছা রইল।”

আরও পড়ুন: ময়দানের তৃতীয় ডিভিশনের ক্লাবেও সুযোগ হয়নি, সেই সন্দেশই এখন ভরসা দিচ্ছেন এটিকে-মোহনবাগান রক্ষণকে

শুক্রবার আইএসএলে অভিযান শুরু করছে ইস্টবেঙ্গল। অগুনতি লাল-হলুদ সমর্থকদের মতোই মর্গ্যানও তাকিয়ে থাকবেন ইস্টবেঙ্গলের দিকে। টিভির পর্দায় তাঁর চোখ খুঁজবে স্কটকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE