প্রথমবার আইএসএল জয়ের পর সার্জিও লোবেরার মুম্বই সিটি এফসি। ছবি - আইএসএল
মুম্বই সিটি এফসি-২ (২৯’ তিরি-আত্মঘাতী, ৯০’ বিপিন)
এটিকে মোহনবাগান-১ (১৮’ উইলিয়ামস)
আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের ক্ষমতা থাকলে ১৩ মার্চ দিনটা নিজের জীবন থেকে যত দ্রুত সম্ভব মুছে ফেলতে চাইবেন। প্রশিক্ষক হিসেবে তাঁর কাছে ফাইনাল জয়ের হ্যাটট্রিক করে আইএসএলে বিরল নজির গড়ার মঞ্চ ছিল। বিপক্ষকে ফাইনালের মঞ্চে হারিয়ে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে না খেলার ক্ষত মিটিয়ে ফেলতে পারতেন হাবাস। কিন্তু সেগুলো কিছুই হল না। বরং শেষ মুহূর্তে অরিন্দম ভট্টাচার্য ও সন্দেশ ঝিঙ্গনের ভুলে ২-১ ব্যবধানে হেরে ট্রফি হাতাছাড়া করল সবুজ-মেরুন। একই সঙ্গে হাবাসের বিরুদ্ধে জয়ের হ্যাটট্রিক করে ট্রফি হাতে তুললেন আর এক স্প্যানিশ সার্জিও লোবেরা ও তাঁর মুম্বই সিটি এফসি।
শনিবার ফতোরাদা স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই তাই আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করেছিলেন রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামসরা। তবে মুম্বই ক্ষান্ত ছিল না। ফলে শুরু থেকেই ম্যাচের মেজাজ ছিল বেশ গরম। নর্থ-ইস্টের বিরুদ্ধে গত দুটো সেমি ফাইনালের মত এ বারও দলকে এগিয়ে দেন অজি স্ট্রাইকার ডেভিড উইলিয়ামস। এই গোলেও ছিল ফিজি তারকার অবদান। তবে এর আগে ১০ মিনিটে মুম্বই পেনাল্টি পেতেই পারত। কারণ বক্সের মধ্যে বিপিন সিংহকে ফেলে দেন প্রীতম কোটাল। যদিও রেফারি মুম্বইয়ের পেনাল্টির আবেদনে সাড়া দেননি। এরপর ১৮ মিনিটে মুম্বই রক্ষণের ভুলে গোল করে যান উইলিয়ামস। তাঁর পাস থেকেই দুরন্ত শটে অমরিন্দরকে পরাস্ত করে গোল করেন উইলিয়ামস।
𝐍𝐄𝐖 #HeroISL 𝐂𝐇𝐀𝐌𝐏𝐈𝐎𝐍𝐒 🏆#HeroISLFinal #LetsFootball pic.twitter.com/x5sJGKwVVp
— Indian Super League (@IndSuperLeague) March 13, 2021
তবে এতে লাভ হয়নি। ম্যাচের বয়স তখন ২৯ মিনিট। আমেদ জাহুর দুরপাল্লার শট বাইরে পাঠাতে গিয়ে আত্মঘাতী গোল করে বসেন তিরি। ফলে সমতায় ফিরে আসে লোবেরার দল। এরপর অবশ্য দুটো দল গোল করার একাধিক সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু কেউ ব্যবধান বাড়াতে পারেনি। এর মধ্যে আবার প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে শুভাশিস বসুর সঙ্গে ধাক্কা লেগে মাথায় গুরুতর চোট পান অমেয় রানাওয়াডে। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এমন ঘটনার জন্য বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে।
তবে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ায় লোবেরার দল। মুহুর্মুহু আক্রমণে একটা সময় দিশেহারা হয়ে যায় সবুজ-মেরুন রক্ষণ। কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও ৬১ মিনিটে হাভি হার্নান্ডেজ দুরন্ত ফ্রি-কিকে বল জালে জড়িয়ে দেন। কিন্তু লাভ হয়নি। অফ সাইডের জন্য মোহনবাগানের গোল বাতিল করেন রেফারি তেযশ নাভেঙ্কর। প্রতিবাদে সরব হন রয় কৃষ্ণ ও হাবাস। রেফারির দাবি হাভির ফ্রি-কিক মহম্মদ রকিপের ঊরুতে লেগে জালে ঢুকে গেলেও সেই সময় কৃষ্ণ অফ সাইডে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাই রেফারি গোল বাতিল করে দেন।
এরপরে কেমন যেন ঝিমিয়ে পড়ে হাবাসের দল। আর সেই সুযোগে ৯০ মিনিটে ক্ষণিকের ভুলে গোল করে সবুজ-মেরুনের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেন বিপিন সিংহ। তবে এই গোলটা পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামা ওগবেচের নামেও লেখা থাকতেই পারত। কারণ তিনিই যে তারকা ডিফেন্ডার সন্দেশ ও ‘সোনার গ্লাভস’ পাওয়া অরিন্দমকে মাটি ধরিয়ে দেন। বাগান রক্ষণকে তছনছ করে মাথা একেবারে ঠাণ্ডা রেখে বক্সের মধ্যেই বিপিনের দিকে দেন ছোট্ট একটা টোকা। আর সেখান থেকেই আসে জয়সূচক গোল, যা সাইড লাইনের ধারে দাঁড়িয়ে বিরক্তির সঙ্গে দেখলেন হাবাস। বুঝে যান এ বারের মত তাঁর দলের খেলা শেষ। এর কিছুক্ষণ পরেই জয়ের হ্যাটট্রিক করে মাঠ জুড়ে উচ্ছ্বাস করেন লোবেরা ও তাঁর দলের ফুটবলাররা। কারণ প্রথমবার যে মুম্বই আইএসএল জিতে ইতিহাস গড়ল। শুধু অমেয় রানাওয়াডে দলের সঙ্গে থাকতে পারেননি। তবে তিনি ভাল আছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy