Advertisement
E-Paper

‘উইকেটের পিছনে রিভার্স শটে চমকে দিচ্ছেন কার্তিক’

কেকেআর এবং পঞ্জাব— দু’টো দলের শরীরী ভাষায় আকাশ-পাতাল তফাত দেখলাম। আগের ম্যাচটা ১০০ রানেরও বেশি ব্যবধানে হারার পরে নাইটরা যেন শপথ করে নেমেছিলেন, ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়বেন।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৮ ০৩:৫০
অধিনায়কোচিত: এ ভাবে রিভার্স সুইপ মেরে গেলেন কার্তিক। ছবি: পিটিআই

অধিনায়কোচিত: এ ভাবে রিভার্স সুইপ মেরে গেলেন কার্তিক। ছবি: পিটিআই

এমন একটা পিচে শনিবারের ম্যাচটা হল, যেখানে দু’ইনিংস মিলিয়ে উঠল ৪৫৯ রান। তথ্য ঘেঁটে দেখছি, আইপিএলের ইতিহাসে এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। ইনদওরের এই হোলকার স্টেডিয়ামের মাঠটা খুব ছোট। কোনও কোনও দিকে তো ৫৪-৫৫ মিটার গেলেও বল ছয় হয়ে যাচ্ছিল। কলকাতা নাইট রাইডার্স ২৪৫ রান তুললেও কিংস ইলেভেন পঞ্জাব রানটা তাড়া করেছিল। এমনকী দু’শোর ওপরে স্কোরও নিয়ে যায়। কিন্তু ১২০ বলে ২৪৬ রান ছোট মাঠেও করা খুবই কঠিন। বিশেষ করে রান তাড়া করতে নেমে।

কেকেআর এবং পঞ্জাব— দু’টো দলের শরীরী ভাষায় আকাশ-পাতাল তফাত দেখলাম। আগের ম্যাচটা ১০০ রানেরও বেশি ব্যবধানে হারার পরে নাইটরা যেন শপথ করে নেমেছিলেন, ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়বেন। আমি জানি না, দলের লড়াকু মানসিকতার সমালোচনা করে শাহরুখ খান যে টুইট করেছিলেন, সেটাই তাতিয়ে দিয়েছিল কি না দলকে। যদি দেয়, অবাক হব না। পঞ্জাবকে দেখে আবার মনে হচ্ছিল, দলটা যেন খেই হারিয়ে ফেলেছে। শুধু দু’জন ব্যতিক্রম। এক, অ্যান্ড্রু টাই। যিনি চার উইকেট নিলেন। দ্বিতীয় জন, কে এল রাহুল। যিনি ২৯ বলে ৬৬ করলেন।

পঞ্জাব ম্যাচটা কেকেআরের কাছে মরণ-বাঁচন ম্যাচ ছিল। যে ম্যাচে সুনীল নারাইন ফাটকাটা পুরোপুরি খেটে গেল। ফাটকা বলছি, কারণ নারাইন যতই ৩৬ বলে ৭৫ করুন না কেন, ওঁর রান পাওয়াটা অনেকটা ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে। লটারি পাওয়ার মতো ব্যাপার আর কী। নারাইনকে আটকাতে গেলে যে শরীর লক্ষ্য করে শর্ট বল দরকার, তা সব দলই জেনে গিয়েছে। কিন্তু জেনেও সেই ওষুধ ঠিক মতো কাজে লাগাতে পারলেন না পঞ্জাবের বোলাররা।

ম্যাচের পরে একটা পরিসংখ্যানে দেখছিলাম, নারাইনকে করা পঞ্জাব পেসারদের ১৮টা বলের মধ্যে ১২টাই শর্ট ছিল। শর্ট বলের বিরুদ্ধে নারাইন যে সব শট খেলেছেন, তার মধ্যে মাত্র ৩৩.৩৩ শতাংশ শটের ক্ষেত্রে ওঁর নিয়ন্ত্রণ ছিল। কিন্তু ভাগ্য ভাল থাকায় ‘মিসটাইম্ড’ পুলগুলো ফিল্ডারদের কাছে যায়নি। আবার বাউন্ডারি ছোট হওয়ায় কিছু ক্ষেত্রে ছক্কাও হয়ে গিয়েছে। বোলার নারাইন শুরুতে মার খেলেও পরের দিকে রাহুলের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটা তুলে নেন।

উৎসব: ক্রিস গেলের মহামূল্যবান উইকেট নিয়ে আন্দ্রে রাসেলের নাচ।(ডানদিকে) সুনীল নারাইনের ব্যাটের ঝড়ে ম্লান তাঁর দেশের গেল-ও। শনিবার ইনদওরের মাঠে। ছবি: পিটিআই

কেকেআরের জয়ের পিছনে ম্যাচের সেরা নারাইনের অবদানের চেয়েও আমি আগে রাখব দীনেশ কার্তিক-আন্দ্রে রাসেলের জুটিকে। এবং, পরে রাসেলের একটা ওভার। রাসেল-কার্তিক মিলে ৩১ বলে ৭৬ রান তুললেন। এ বারের আইপিএলে সর্বোচ্চ রান তোলার পিছনে এই জুটিরই কৃতিত্ব। না হলে কলকাতা কিন্তু ২০৫-২১০ রানে আটকে যেতে পারত। যে রানটা এই ছোট মাঠে জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। পঞ্জাব তো নড়বড় করতে করতেও আট উইকেটে ২১৪ রান তুলে দিল। রাসেলের চেয়েও বেশি করে আমি কার্তিকের কথা বলতে চাই। সব রকম শট খেলেছেন। উইকেটের সব দিকে শট মেরেছেন। ২৩ বলে ৫০ রানের ইনিংসে রয়েছে পাঁচটি চার, তিনটি ছয়। উইকেটের পিছনে খুব ভাল শট খেলেন কার্তিক। স্কুপ, রিভার্স স্কুপ বা সুইপে পারদর্শী। যে সব শট এই ম্যাচে খেলতে দেখা গেল। জেনেবুঝেও অধিনায়ক অশ্বিন ওঁকে উইকেটের পিছনে রান তুলতে দিলেন।

রাসেল (১৪ বলে ৩১) অবশ্য ব্যাটের চেয়েও সফল বল হাতে। পরপর দু’টো শর্ট বলে গেল এবং মায়াঙ্ককে ফিরিয়ে দিয়ে। ওই দু’টো উইকেট পঞ্জাবকে বড় ধাক্কা দিয়ে যায়। রাহুল একা লড়াই করেছিলেন, কিন্তু লক্ষ্যটা বড্ড বড় ছিল। তবে রাহুলের এই ইনিংসটা আবার বুঝিয়ে দিল, টেকনিক ভাল থাকলে সব ধরনের ক্রিকেটেই সফল হওয়া যায়।

জিতে কেকেআর প্লে-অফের লড়াইয়ে থেকে গেল। কিন্তু ফিল্ডিং নিয়ে একটু প্রশ্ন থাকল। তবে ইডেনে রাজস্থান ম্যাচে আরও সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে ফিল্ডিংয়ে কোনও ভুল করলে চলবে না।

Dinesh Karthik Skipper KKR Sunil Narine Andre Russell Cricket IPL 11 IPL 2018 KXIP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy