Advertisement
E-Paper

উৎসবের ভাঙড়া নেচে নাইটদের সামনে এখন সবুজ পিচ আর স্টার্ক

সবাই আছেন। অথচ তিনি নেই! রাত পোহালেই ঘরের মাঠে তাঁর দল নামছে এমন একটা দলের বিরুদ্ধে, যাদের সঙ্গে লিগ টেবলে লড়াই এখন প্রায় সমানে সমানে। অথচ তিনিই কি না প্র্যাক্টিসে নেই! বিরাট কোহলির প্র্যাক্টিসে না থাকার যে যথেষ্ট কারণ রয়েছে, তা বোঝা গেল বিকেলে মুম্বই থেকে আসা এক ক্রিকেট সাংবাদিকের ফোনে।

রাজীব ঘোষ

শেষ আপডেট: ০২ মে ২০১৫ ০১:৫৩
চেন্নাই বধের তৃপ্তি নিয়ে নতুন যুদ্ধের প্রস্তুতিতে গম্ভীর-দাহিয়া-বেলিস।

চেন্নাই বধের তৃপ্তি নিয়ে নতুন যুদ্ধের প্রস্তুতিতে গম্ভীর-দাহিয়া-বেলিস।

সবাই আছেন। অথচ তিনি নেই!

রাত পোহালেই ঘরের মাঠে তাঁর দল নামছে এমন একটা দলের বিরুদ্ধে, যাদের সঙ্গে লিগ টেবলে লড়াই এখন প্রায় সমানে সমানে। অথচ তিনিই কি না প্র্যাক্টিসে নেই!
বিরাট কোহলির প্র্যাক্টিসে না থাকার যে যথেষ্ট কারণ রয়েছে, তা বোঝা গেল বিকেলে মুম্বই থেকে আসা এক ক্রিকেট সাংবাদিকের ফোনে। ভোরবেলা না কি মুম্বই বিমানবন্দরেরর অ্যারাইভাল লাউঞ্জে তাঁকে দেখা গিয়েছে। দিনটাও খুব তাৎপর্যপূর্ণ। অনুষ্কা শর্মার জন্মদিন। এমন দিনে বিরাট কোহলিকে মুম্বইয়ে দেখতে পেলে তাতে অবাক হওয়ার আর কী আছে?
কিন্তু পরের দিনই তো ম্যাচ? রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর এক কর্তা বিকেলে দলের অনুশীলনের পর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের ড্রেসিংরুমের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘বিরাট তো বিশ্রামে। আজ যেহেতু অপশনাল প্র্যাকটিস ছিল তাই ও আসেনি। এ ছাড়া আর কিছু নয়।’’ বোঝাই গেল, বিরাটের মুম্বই সফরকে রাখঢাক করতে চাইছে আরসিবি।
কেকেআর আবার একই দিনে তাদের ‘বিতর্কিত’ অস্ত্রকে বেঙ্গালুরু এনে ফেলল। সুনীল নারিনকে। চেন্নাই থেকে। সরকারি ভাবে মিডিয়াকে কিছু জানানো হয়নি ক্যারিবিয়ান অফস্পিনারের বেঙ্গালুরুতে ঢুকে পড়া নিয়ে। পরে দেখা গেল জল্পনাটা ঠিক কারণ তাঁকে দেখাও গেল টিম হোটেলে। তবে তিনি শনিবার নামবেন, তেমন পূর্বাভাস এখনও পর্যন্ত নেই।

নারিনের খবরে যতটা মনমরা হয়ে পড়েছিল নাইট শিবির, বৃহস্পতিবারের ইডেন-জয়ে সেই গুমোট পরিবেশটা কিছুটা হলেও কেটেছে। এবং তাঁর কারণ যে মূলত তিন জন— ব্র্যাড হগ, আন্দ্রে রাসেল ও রবিন উথাপ্পা, তা এখন কলকাতায় কারও অজানা নয় বোধহয়। জানা গেল, আগের রাতে ইডেনের ড্রেসিংরুমে হগের সাফল্যের জন্য কেক কাটা হয়েছে। রাতে হোটেলে পার্টিতে তুমুল নেচেছেন আন্দ্রে রাসেল। ভাঙড়া নেচে তাঁকে আবার সঙ্গ দেন ইউসুফ পাঠান।

৪৪-এর হগকে নিয়ে দলের সবাই রীতিমতো উচ্ছ্বসিত। শনিবারের ম্যাচেও মোটামুটি জায়গা পাকা তাঁর। কিন্তু শুক্রবার বিকেলে চেন্নাস্বামীতে গিয়ে উইকেটের যে সবুজ আভা দেখা গেল, তাতে কেকেআর অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর গত দুই ম্যাচের মতো মর্নি মর্কেলের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়ে গেল।

পরিসংখ্যান বলছে, গত বার যে শহর থেকে আইপিএল ট্রফি নিয়ে শহরে ফিরেছিল নাইট-বাহিনী, সেই বেঙ্গালুরু উইকেটে এ বারের আইপিএলে পেসাররা ২৯টি উইকেট নিয়েছেন। ওয়াংখেড়ে ও চিপকে সবচেয়ে বেশি ৩০টি করে। তার পরেই চিন্নাস্বামী। এ বারের আইপিএলেই পেসারদের দু-দু’বার ইনিংসে চার উইকেট করে নেওয়ার নজিরও রয়েছে এখানে। এ থেকেই আন্দাজ করে নেওয়া যেতে পারে চিন্নাস্বামী বাইশ গজের চরিত্র। শুক্রবার দুপুরে নেটে নাগাড়ে বোলিং করে গেলেন মিচেল স্টার্ক, যিনি আসার পর আরসিবি টিমটা যেন নতুন আগুনের সন্ধান পেয়েছে। অন্য দিকে বিকেলে মর্কেলকে টিম হোটেলে ঢুকতে দেখা গেল সম্পুর্ণ স্বাভাবিক ভাবে। তাই আশা করা যায়, শনিবার বিকেলে মর্কেল ও স্টার্কের দ্বৈরথ দেখা যেতে পারে।

লড়াই তো ব্যাটসম্যানদেরও। এক দিকে গেইল, ডে’ভিলিয়ার্স, কোহলি তো অন্য দিকে উথাপ্পা, রাসেল, গম্ভীর। শেষের জন আবার লাল-সোনালী রঙটা দেখলেই যেন জ্বলে ওঠেন। পাঁচ-পাঁচটা হাফ সেঞ্চুরি আছে তাঁর আরসিবি-র বিরুদ্ধে। শেষ তিন ম্যাচে যদিও সে ভাবে জ্বলে উঠতে দেখা যায়নি গোতিকে। কিন্তু এ বার ফের যখন আরসিবি সামনে, তখন আবার হয়তো জ্বলে উঠতে পারেন। শুক্রবার টিম হোটেলে তাঁকে দেখে মেনে হল বেশ নিশ্চিন্ত রয়েছেন।

হবেন নাই বা কেন? চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচে নামার আগে দলের উদ্দেশ্যে ড্রেসিংরুমে যা যা বলেছিলেন, সবই প্রায় অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন তাঁর নাইট-সতীর্থরা। ম্যাচের পর গম্ভীর বলেওছেন সে কথা। বলেন, ‘‘ওদের ঝাঁপিয়ে পড়তে বলেছিলাম। ওরা ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এর চেয়ে বড় আর কী হতে পারে?’’ তাই তিনি এখন এক গর্বিত নেতা। চেন্নাইয়ের কাছে হারের পর বদলা নিয়েছেন। এ বার কোহলির দলের কাছে ইডেনে হারের বদলা নেওয়ার পালা। তবে পাশাপাশি উঠে আসছে ২০১৩-র সেই কোহলি-গম্ভীর কথা কাটাকাটির প্রসঙ্গও। সে-ও তো হয়েছিল এই চিন্নাস্বামীতেও। যদিও আরসিবি-র এক ভারতীয় সাপোর্ট স্টাফ বলছেন, ‘‘সেই কোহলি আর এই কোহলির মেজাজে অনেক ফারাক। এখন কোহলি অনেক ঠান্ডা।’’ কয়েক দিন আগে কোহলি নিজেও সাংবাদিকদের সামনে বলেছেন, ‘‘এখন নিজেকে অনেক ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করি।’’ কিন্তু দুই দিল্লিওয়ালা আমনে-সামনে হলে কী হবে কে জানে।

যেমন বলা যাচ্ছে না বেঙ্গালুরুর আবহাওয়ার কথাও। শোনা গেল, বৃহস্পতিবার রাতে যখন রাসেল-উথাপ্পারা ইডেনে ঝড় তুলেছিলেন, তখন বেঙ্গালুরু জুড়ে প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে প্রায় ৯০টা গাছ উপড়ে গিয়েছে সারা শহরে। অথচ শুক্রবার সারা দিন যা আবহাওয়া পাওয়া গেল ও বিকেলে মনোরম পরিবেশ, তাতে এ শহরে বসে আলাদা করে গান বাঁধতে হবে না ‘বসন্ত এসে গেছে’। সারা বছরই এ শহরে বসন্ত বিরাজ করে। কিন্তু কখন যে প্রকৃতি এ শহরের উপর রুষ্ট হবে, কেউ বলতে পারে না। যদিও শুক্রবার দুপুরে চিন্নাস্বামীর সবুজ প্রাকৃতিক গালিচায় পা রেখে মনেই হল না আগের রাতে প্রকৃতি অমন তাণ্ডব চালিয়েছে সারা সন্ধে ধরে। আশঙ্কা কাটিয়ে স্বস্তির দুনিয়ায় তাই কিছুটা হলেও ফেরা যাচ্ছে।

অপেক্ষা শুধু এখন মাঠে নেমে পড়ার। নাইট ও চ্যালেঞ্জারদের।

abpnewsletters KKR VS RCB IPL8 mitchell starc green wicket chinnaswamy stadium kkr latest news rajib ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy