Advertisement
E-Paper

গুরু বালাজির মুখে দুই যাদব, আক্রমের ক্লাস

সকাল সাড়ে ন’টা। ব্রেকফাস্ট সেরে ইস্টার্ন বাইপাসের ওপর কেকেআর টিমহোটেলের লবিতে তিনি এলেন। মুখে চাপদাঁড়ি রেখেছেন। গায়ে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি। মাথায় টুপি।

সোহম দে

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৬
আসরে: নেটে নিজে বলও করে  যাচ্ছেন কোচ বালাজি। —নিজস্ব চিত্র।

আসরে: নেটে নিজে বলও করে যাচ্ছেন কোচ বালাজি। —নিজস্ব চিত্র।

সকাল সাড়ে ন’টা। ব্রেকফাস্ট সেরে ইস্টার্ন বাইপাসের ওপর কেকেআর টিমহোটেলের লবিতে তিনি এলেন। মুখে চাপদাঁড়ি রেখেছেন। গায়ে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি। মাথায় টুপি।

বারবার চোটকে হারিয়ে মাঠে ফেরা তাঁকে যেমন জনপ্রিয় করেছিল, ঠিক ততটাই সমর্থকদের মন জয় করেছিল তাঁর মুখের হাসি। ২০১২-তে কলকাতায় আইপিএল আসার পিছনে তাঁর অবদান ছিল অসামান্য। ১১টা উইকেট নিয়ে কেকেআর-এর পাশে চ্যাম্পিয়নের তকমা বসাতে সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু এ বার তাঁর কাজটা একটু অন্য রকম।

কেকেআর-এর বোলারদের আরও ধারালো করার দায়িত্ব তাঁর ওপর। কিন্তু কলকাতা তো তাঁর দ্বিতীয় ঘরের মতোই। দায়িত্ব যাই হোক না কেন প্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজিকে তিন বারের চ্যাম্পিয়ন করতে এখন থেকেই তৎপর প্রাক্তন এক পেসার।

তিনি— কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলিং কোচ লক্ষ্মীপতি বালাজি। কী মনে হচ্ছে নতুন দায়িত্ব নিয়ে? বালাজি সোজাসাপ্টা বলে দিচ্ছেন, ‘‘দেখুন সব সময় কোচ মানে যে তাকে টেকনিক্যাল কথাবার্তা বলতে হবে এমন নয়। আমার অভিজ্ঞতা আছে। আমি সেটা ভাগ করতে পারব দলের সঙ্গে। মাঝে মাঝে দলে একটা নেতার প্রয়োজন হয়। আমি নিজেকে সেই ভূমিকায় দেখতে চাইছি। তার ওপর কেকেআরে তিন বছর খেলেছি। আমার প্রিয় ফ্যাঞ্চাইজি এটা।’’

বালাজি নিজে যখন নাইট রাইডার্সে খেলেছিলেন তখন ওয়াসিম আক্রম ছিলেন বোলিং কোচ। শেষ বছর পর্যন্তও যে দায়িত্ব সামলেছেন পাকিস্তান পেসার। আক্রমের কোচিংয়ে সে সব সোনার দিন আজও ভুলতে পারেননি বালাজি। ‘‘ওয়াসিম ভাইয়ের থেকে অনেক কিছু শিখেছি। ওয়াসিম ভাই কিংবদন্তি। সব সময় বোলারদের উদ্বুদ্ধ করতেন। এমন এমন কথা বলতেন যা যে কারও আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিতে পারত,’’ বলছেন বালাজি।

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের পিছনে ছিল দুই যাদবের কীর্তি। বালাজি মনে করছেন, সিরিজ জয়ের পর দু’জনেই আরো আত্মবিশ্বাসী হয়ে নামবেন। দুই যাদবই যে তাঁদের দলে। উমেশ যাদব আর কুলদীপ যাদব। ‘‘উমেশ গত দেড় বছর ধরেই ভাল বল করছে। খুব উন্নতি করছে। ভারতের পেস আক্রমণ এখন যথেষ্ট ভাল। কুলদীপ একটা ম্যাচ খেলেছে। কিন্তু ওর বোলিংও আমার খুব ভাল লেগেছে,’’ বলছেন বালাজি।

গত কয়েক বছরে কেকেআর বোলিংয়ের অঘোষিত নেতা হয়ে উঠেছেন সুনীল নারাইন। সেই ঠান্ডা মাথার যোদ্ধার প্রসঙ্গ উঠতেই বালাজির মুখে তাঁর বিখ্যাত হাসি। প্রাক্তন সতীর্থের মাথা ঠান্ডা হলেও মনের জোর অসীম। ‘‘নারাইন দারুণ ছেলে। অবশ্যই ও কেকেআর-এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের একজন। ও ঠান্ডা মাথার ছেলে হলেও মানসিক জোর আছে। তরুণদের সব সময় উন্নতি করতে সাহায্য করে,’’ বলছেন বালাজি। সঙ্গে ক্যাপ্টেন গম্ভীর প্রসঙ্গেও বালাজি যোগ করেন, ‘‘দারুণ ক্যাপ্টেন। ওর অধিনায়কত্বে বোলারদের উইকেট তোলার সুযোগ থাকে। ফিল্ডিং এমন ভাবে সাজায় যাতে সুবিধে হয় বোলারদের।’’

টি-টোয়েন্টি মানেই তো সবার ধারনা ব্যাটসম্যানদের ফর্ম্যাট। মাত্র চার ওভার বল করতে পারে বোলাররা। শুনেই মুখটা গম্ভীর হয়ে গেল। প্রতিবাদী সুরেই বালাজি বললেন, ‘‘কে বলল ব্যাটসম্যানদের ফর্ম্যাট! বোলারদেরও যথেষ্ট সুযোগ আছে। বোলাররাও অনেক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জেতায়, তাই না?’’

কলকাতার প্রথম দুটো ম্যাচ গুজরাত লায়ন্স ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে। জিততে পারবে তো কেকেআর? ‘‘আমি কি জ্যোতিষী নাকি! কী করে বলব!’’ বলে উঠলেন বালাজি। তার পর যোগ করলেন, ‘‘এটা বলতে পারি আমাদের দলটা খুব ভাল। ব্যালান্স আছে। বোলিং ইউনিট ভাল। এ বারের নিলাম থেকেও ভাল ক্রিকেটারদের নেওয়া হয়েছে। নিজেদের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে।’’ মাঠের এগারো ছাড়া মাঠের বাইরে একজন কিংগ খানও তো আছেন। যিনি দলের আদর্শ মেন্টর। জিতলে যেমন বাহবা দেন আবার হারলেও পিঠ চাপড়ে আগামী ম্যাচে মন দিতে বলেন। বালাজি তাই বলতে ভুলছেন না, ‘‘শাহরুখ খান সব সময় উদ্বুদ্ধ করে দলকে।’’

প্রিয় দলে ফিরেছেন। বোলিং কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন। তাতেও একটা ব্যাপার নিয়েই তিনি দুঃখিত। ‘‘ওয়াসিম ভাইয়ের নম্বর নেই। তাই কথা বলা হল না।’’

Lakshmipathy Balaji KKR IPL
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy