Advertisement
E-Paper

ইংল্যান্ড থেকে শিক্ষা নিয়েই ব্যাটিং টেকনিক পাল্টে ফেলেছিলাম

ক্রিকেটের ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। তাঁকে এখন এই নামেই ডাকা হচ্ছে। টেস্ট, ওয়ান ডে, টি-টোয়েন্টি— তিন ফর্ম্যাটেই তিনি বিশ্বসেরা। অথচ দু’বছর আগেও ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজে একটা হাফসেঞ্চুরিও করতে পারেননি। নিজের সাফল্যের রেসিপিটা তুলে ধরলেন বিরাট কোহালি। বিসিসিআই টিভি-তে দেওয়া সাক্ষাৎকারে।

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:৫৩

ক্রিকেটের ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। তাঁকে এখন এই নামেই ডাকা হচ্ছে। টেস্ট, ওয়ান ডে, টি-টোয়েন্টি— তিন ফর্ম্যাটেই তিনি বিশ্বসেরা। অথচ দু’বছর আগেও ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজে একটা হাফসেঞ্চুরিও করতে পারেননি। সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মাস চারেক পরেই তাঁর ব্যাটে ঝড়। তাঁকে যিনি রোনাল্ডো নামটা দিয়েছেন, সেই প্রাক্তন ইংল্যান্ড ক্যাপ্টেন নাসের হুসেনের কাছে নিজের সাফল্যের রেসিপিটা তুলে ধরলেন বিরাট কোহালি। বিসিসিআই টিভি-তে দেওয়া সাক্ষাৎকারে।

প্রশ্ন: ইংল্যান্ড সিরিজে কী ভুল হচ্ছিল?

বিরাট: ইংল্যান্ড সিরিজ শুরু হওয়ার আগেই প্রচুর চাপ নিয়ে ফেলেছিলাম। আমাকে রান করতেই হবে, এই চাপ। জানি না কেন উপমহাদেশের প্লেয়ারদের সামনে একটা মাপকাঠি রেখে দেওয়া হয় যে, অমুক দেশে যদি তুমি সফল হও তা হলে মানব যে তুমি ভাল ক্রিকেটার। ইংল্যান্ডে তাই রান করতে মরিয়া ছিলাম। কিন্তু শুরুটা ভাল না হলে মানসিক ভাবে পিছিয়ে পড়াটাও শুরু হয়ে যায়। আমারও সেটাই হয়েছিল।

প্রশ্ন: ইংল্যান্ডে শুধু মানসিকতাই সমস্যা ছিল না টেকনিকও?

বিরাট: টেকনিক গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এ রকমও কিন্তু দেখা গিয়েছে খুব ভালো টেকনিক নেই এমন ব্যাটসম্যানও ইংল্যান্ডে প্রচুর রান পেয়েছে দারুণ মানসিকতার জন্য। আমার সমস্যা হচ্ছিল, ঘন ঘন ইনসুইং আসবে এটা ধরে নিয়েছিলাম। কোমরটা তাই ঘুরে যাচ্ছিল। ফলে আউটসুইং এলে সেটা সামলাতে পারছিলাম না।

প্রশ্ন: পুরনো ব্যাটিং স্টান্সে কী সমস্যা হচ্ছিল?

বিরাট: আগে আমি মিডল স্টাম্পে দাঁড়াতাম। আমার স্টান্সটাও ছিল ক্লোজড। তার পর আবিষ্কার করলাম ব্যাট করার সময় আমার পায়ের পাতা পয়েন্টের দিকে থাকছে না বরং কভার পয়েন্টের দিকে চলে যাচ্ছে। গোড়াতেই আমার কোমর ঘুরে যাচ্ছিল। আমার গ্রিপটাও ছিল ‘বটম হ্যান্ড’ মানে নীচের হাতের উপর বেশি নির্ভরশীল। বলের লাইনের সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করার মতো জায়গা পাচ্ছিলাম না। বল সুইং করলে সামলানোর মতো সময়ও থাকত না।

প্রশ্ন: সমস্যাটা কী ভাবে কাটালে?

বিরাট: কিছু ড্রিল শুরু করলাম। ব্যবস্থা করলাম পুরোটা রেকর্ড করে রাখার। প্রত্যেক বার বল খেলার সময় মাথায় রাখতাম যে পায়ের আঙুলগুলো যেন পয়েন্টের দিকে থাকে। কভারের দিকে নয়। এ ভাবেই কোমর ঘুরে যাওয়ার সমস্যাটা গেল। সুইং সামলাতে আরও জায়গা পেলাম। দু’পায়ের মধ্যে ফাঁকটা বেশি রাখলাম। যাতে ফ্রন্টফুটে যেতে চাইলে ব্যালান্সটা ঠিকঠাক থাকে।

প্রশ্ন: অস্ট্রেলিয়া সিরিজে সাফল্যের পিছনে কী এই স্টান্সে বদল?

বিরাট: অস্ট্রেলিয়ায় শর্ট বল নিয়ে আমার কোনও সমস্যা ছিল না। তাতে বরং আরও খোলামেলা ব্যাটিং স্টান্স নিতে আর ফ্রন্ট ফুটে খেলতে সুবিধা হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার গতি আর বাউন্স নিয়ে কখনও চিন্তায় ছিলাম না। জানতাম, সামলাতে পারব। তবে স্টান্স নেওয়ার সময় ক্রিজের বাইরে এক ফুট মতো এগিয়ে থাকতাম। যাতে অফ স্টাম্প করিডোরেই শর্ট বলের পাল্টা দেওয়া যায়। আর গার্ড নিতাম চতুর্থ স্টাম্পে। যাতে সহজে আমার প্যাড টার্গেট না করা যায়।

প্রশ্ন: এই পরিবর্তন আনার পর্বটা কী রকম ছিল?

বিরাট: শুনতে ব্যাপারটা সহজ লাগলেও শুরুতে সে রকম কিন্তু ছিল না। দিনে তিন ঘণ্টা করে ব্যাটিং করতাম। সপ্তাহের শেষে পেশিতে টান ধরে যেত। দিন দশেক এ রকম প্র্যাকটিস করেছি। গল্ফে বলা হয় একটা শটকে নিখুঁত করার জন্য ৪০০-৫০০ বার প্র্যাকটিস করতে হয়। আমার ক্ষেত্রেও প্র্যাকটিসটা ছিল নির্দিষ্ট। ফ্রন্টফুটে এগিয়ে আগে খেলতাম না। তাই ব্যাপারটা মাথায় ঢুকিয়ে নেওয়াটাই টার্গেট ছিল। এ ব্যাপারে সচিনও আমায় একটা পরামর্শ দিয়েছিল।

প্রশ্ন: সেটা কী?

বিরাট: সচিন বলেছিল স্পিনারের মতোই পেসারকেও ফরোয়ার্ড প্রেস মানে ফ্রন্টফুটে খেলতে হবে। পেস বা সুইংয়ের কথা না ভেবে টপ অব দ্য বল যেতে হবে। যাতে বল মুভ করার সুযোগ কম পায়। এখন এটাই আমার ব্যাটিংয়ে দু’নম্বর অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রশ্ন: বোলারের কাছে বিরাট কোহালিকে বোলিং করাটা কতটা কঠিন?

বিরাট: ব্যাট করার সময় আমি মাঠের নির্দিষ্ট কয়েকটা জায়গা টার্গেট করি। পয়েন্ট, কভার, স্ট্রেট আর কাউ কর্নার (ডিপ মিড উইকেট থেকে ওয়াইড লং অনের মাঝের জায়গা)। এ সব জায়গায় বল পড়লে আমার শরীর আপনা থেকেই শট খেলার মতো জায়গায় চলে যায়।

Virat Kohli Interview BCCI TV
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy