Advertisement
E-Paper

সারা দিনের মেঘ কাটিয়ে রাতে রোদ কেকেআরে

ক্লজ ওয়ান: আজ রবিবার, ইডেনে গৌতম গম্ভীররা জিতে গেলেন। প্লে অফ নিয়ে টেনশন আর থাকল না। ১৪ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে সসম্মানে কেকেআর প্লে অফে। চর্চা পড়ে থাকবে শুধু পজিশন নিয়ে। ক্লজ টু: আজ রবিবার, ইডেনে গৌতম গম্ভীররা হেরে গেলেন। ১৪ ম্যাচে পয়েন্ট থাকল ১৪। প্লে অফ স্বপ্ন প্রচণ্ড ধাক্কা খেল। কিন্তু একেবারে নিঃশেষ হল না। কেকেআর তার পরেও টুর্নামেন্টে বেঁচে থাকবে রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত।

রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৬ ০৪:১৫
নাইটদের সহকারী কোচ সাইমন কাটিচের পিচ পরীক্ষা। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

নাইটদের সহকারী কোচ সাইমন কাটিচের পিচ পরীক্ষা। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

ক্লজ ওয়ান: আজ রবিবার, ইডেনে গৌতম গম্ভীররা জিতে গেলেন। প্লে অফ নিয়ে টেনশন আর থাকল না। ১৪ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে সসম্মানে কেকেআর প্লে অফে। চর্চা পড়ে থাকবে শুধু পজিশন নিয়ে।

ক্লজ টু: আজ রবিবার, ইডেনে গৌতম গম্ভীররা হেরে গেলেন। ১৪ ম্যাচে পয়েন্ট থাকল ১৪। প্লে অফ স্বপ্ন প্রচণ্ড ধাক্কা খেল। কিন্তু একেবারে নিঃশেষ হল না। কেকেআর তার পরেও টুর্নামেন্টে বেঁচে থাকবে রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত। রাতে আরসিবি জিতে গেলে, ভাল নেট রান রেট থাকায় কেকেআরও চলে যাবে।

সাইমন কাটিচ শনিবার রাতে ঠিক কেমন মুখচোখ নিয়ে ঘুরছিলেন, জানা গেল না। বিকেলে হাসিখুশি, স্বভাব ফুরফুরে যে কেকেআর কোচকে ইডেনে দেখা গিয়েছিল, তিনি ভাল রকম টেনশনাক্রান্ত। লিগ টেবলের বিদঘুটে অঙ্ক টিমকে কোথায় পৌঁছে দেবে, আন্দাজ পাওয়া যাচ্ছিল না। আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা-ও অনিশ্চয়তার মেঘে ঢাকা ছিল। কপালে অসহ্য চাপের বলিরেখা নিয়ে প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় কোচ অস্ফুটে বারবার বলছিলেন, ‘‘কে কী করবে, ছেড়ে দিন। জিততে তো আমাদের হবে। পুরো ফাইনাল হয়ে গেল ম্যাচটা।’’ পিচ দেখে গেলেন একবার। শোনা গেল, গিয়ে প্রথম যে প্রশ্নটা ইডেন কিউরেটরের দিকে ছুঁড়ে দেন কেকেআর সহকারী কোচ তা হল— খেলাটা হচ্ছে তো? উইকেট পুরো তৈরি তো?

তখনকার মতো মনে হচ্ছিল, ম্যাচ নিয়ে ভাববে কী। ডেভিড ওয়ার্নার-মুস্তাফিজুর রহমান নিয়ে প্ল্যান করবে কী। যুদ্ধের পারিপার্শ্বিক যদি এতটা আক্রমণ করে একটা টিমকে, ঠান্ডা মাথায় টিম রুমে তার মস্তিষ্ক ঢুকবে কী ভাবে? মনে হচ্ছিল, রোদ শুধু শহরের আকাশেই উঠেছে। নাইট-আকাশে নয়। ওটা মেঘাচ্ছন্ন, ভাল রকম মেঘাচ্ছন্ন।

কেকেআরেও রোদ উঠল। তবে মধ্যরাতে। মুম্বইয়ের হারের পরে।

গৌতম গম্ভীর মানুন না মানুন। তাঁর টিম স্বীকার করুক চাই না করুক। একটা টিম যদি প্লে অফের জীবন-মৃত্যু যুদ্ধের আগে শোনে যে, হেরে গেলেও সে বেঁচে থাকবে, তেতে তারা যাবেই। এ তো ম্যাচে বাড়তি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে নামা। গভীর রাতে মুম্বইয়ের হারের পর গোটা টিম কী করল, জানা সম্ভব নয়। কিন্তু এটুকু শোনা গেল যে, টিমের কম-বেশি সবাই ম্যাচটা দেখেছেন। আর উল্লাস বাহ্যিক ভাবে না দেখা যেতে পারে, কিন্তু ভেতরে ভেতরে? না হলেই বরং আশ্চর্যের।

খোঁজখবর নেওয়া তো চলছিল। চলছিল যখন, মুম্বই তখন বিশাখাপত্তনমে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে নেমে পড়েছে। টিমের সঙ্গে থাকা একজন তখন ঘনিষ্ঠদের কাছে জানতে চাইছিলেন, হিসেবটা কী? মুম্বই হারলে কেকেআরের সুবিধে হবে কি না?

রাত সাড়ে এগারোটায় তার উত্তর পাওয়া গেল। বৃষ্টি— পূর্বাভাস ধরলে টানা চলার সম্ভাবনা নেই। আর বৃষ্টি ম্যাচ পণ্ড করলেও বা কী? কেকেআর তাতেও প্লে অফ যাবে। এত দিন টিমের কেউ কেউ ভাগ্যকে দোষারোপ করে যে বলতেন, গত বার থেকে একটা ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। বলতেন যে, আগাগোড়া ভাল খেলেও শেষ পর্বে আজগুবি সব ব্যাপারস্যাপারে টিম টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যায়, এ দিনের পর আর সেটাও বলা যাবে না। ভাগ্য যদি গত বছর টিমটাকে শেষ দু’ম্যাচে নিঃস্ব করে দিয়ে থাকে, আকাঙ্খার একমাত্র জয় যদি না দিয়ে থাকে, তা হলে এ বার সুদ সমেত কেকেআরকে ফেরত দিচ্ছে। শেষ ম্যাচে জিতলে আছে, হারলে আছে, ভেস্তে গেলেও— এত আরামদায়ক স্বস্তির কুশন আর কবে পেয়েছে কেকেআর?

ইডেন পিচও রবিবারের নাইট-পার্টি ধ্বংস করতে পারে বলে মনে হয় না। আরসিবি ম্যাচের পিচে ওয়ার্নার-যুবরাজদের খেলতে হবে ঠিকই। বিশেষ টার্ন না থাকতে পারে, কোনও এক মুস্তাফিজুর রহমানও বিপক্ষ টিমলিস্টে থাকতে পারেন। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে, এসআরএইচ ব্যাটিং আরসিবি ব্যাটিং নয়। এখানে কোনও বিরাট কোহালির ব্রিলিয়ান্স নেই। বরং শোনা গেল, গৌতম গম্ভীর নাকি তৈরি হচ্ছেন। ওয়ার্নার-শিখর নিয়ে অতিরিক্ত গবেষণায় না গিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করছেন একক বিস্ফোরণের জন্য। ম্যাচ হারলে টুথব্রাশের উপর তার প্রভাব ছুড়ে ফেলা তাঁর স্বভাব। এবং সোমবার, গৌতম গম্ভীরের টুথব্রাশের উপর অত্যাচার চালানোর কোনও ইচ্ছে নেই!

কাঁটা শুধু একটা। তিনি, আন্দ্রে রাসেল মহাযুদ্ধের চব্বিশ ঘণ্টা আগেও পুরো ফিট হলেন না। এ দিন সকাল থেকে দফায় দফায় যদি সিএবি কর্তারা পিচ নিয়ে পড়ে থাকেন, কেকেআর পড়ে ছিল রাসেল নিয়ে। কিন্তু তার পরেও সহকারী কোচের কণ্ঠস্বর ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার নিয়ে আশাবাদ জাগায়নি। পরে যা শোনা গেল, নাইট টিম ম্যানেজমেন্ট ইতিমধ্যে কলিন মানরো নিয়ে নাকি ভাবতে শুরু করেছে। ধরে নিয়েছে ফিটনেসে মহানাটকীয় উন্নতি না ঘটলে রাসেলকে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

ভাল-খারাপ মিশিয়ে অতঃপর কী বোঝা গেল? রবিবার পারবে কেকেআর?

চিন্তা-ভাবনা বাদ দিন। বিকেল চারটেয় ঢুকে পড়ুন ইডেনে। জিতলে ওখানেই উৎসব, হারলে বাড়ি ফিরে প্রার্থনা করন বিরাট কোহালির জয়ের। নাইট ভাগ্যে কী হবে আগাম বলা যায় না, কিন্তু একটা কথা এখনই লিখে ফেলা যায়।

আজ ২২ মে, রবিবার, শহরবাসীর কাছে নতুন সপ্তাহের ব্যস্ততম দিন হতে যাচ্ছে!

আজ আইপিএলে

কেকেআর : সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (ইডেন, বিকেল ৪-০০)।

আরসিবি : দিল্লি ডেয়ারডেভিলস (রায়পুর, রাত ৮-০০)।

Kolkata Knight Riders KKR Sunrisers Hyderabad beat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy