Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কুলদীপের ম্যাজিক শো দারুণ লাগল

ভীষণ ভাবে চেয়েছিলাম হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচটায় টস জিততে। রান তাড়া করার প্যাটার্নটা আমরা চালিয়ে যেতে চাইছিলাম। কলকাতার হাওয়ায় বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় আমরা চেয়েছিলাম ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির সুবিধেজনক জায়গাটায় থাকতে। তাই প্ল্যানটা ছিল টস জেতো বোলিং নাও।

নাইটদের চায়নাম্যান

নাইটদের চায়নাম্যান

গৌতম গম্ভীর
শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৬ ০৩:২৬
Share: Save:

ভীষণ ভাবে চেয়েছিলাম হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচটায় টস জিততে। রান তাড়া করার প্যাটার্নটা আমরা চালিয়ে যেতে চাইছিলাম। কলকাতার হাওয়ায় বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় আমরা চেয়েছিলাম ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির সুবিধেজনক জায়গাটায় থাকতে। তাই প্ল্যানটা ছিল টস জেতো বোলিং নাও। এতটাই মরিয়া ছিলাম যে টসের আগে ডেভিড ওয়ার্নার যাতে কয়েনটা দেখতে না পায় সেই চেষ্টাও করি! আসলে একটা সাধারণ ধারণা আছে যে টস করার সময় কয়েনের যে দিকটা উপরে থাকে মাটিতে পড়ার পর তার উল্টো দিকটা উপরে থাকে। এর কোনও বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যখ্যা আছে কি না আমার জানা নেই। তবে আমি বহু ক্রিকেটারকে জানি যারা এই তত্ত্বটা বিশ্বাস করে। এমনকী আমি নিজেও!

সুতরাং বুঝতেই পারছেন টস করতে যাওয়ার সময় প্লে-অফে ওঠার কথা ভেবে আমি কতটা নার্ভাস ছিলাম। এতটাই যে আমি যখন ভেবেছিলাম কয়েনটা আকাশে ছুড়ে দিয়েছি, তখন সেটা মাটিতে পড়েই যায়। এতটাই লজ্জায় পড়ে যাই যে অতিচালাকির আইডিয়াটা তার পর বাদই দিতে হয়। ফের টস হারলাম আর আমাদের ব্যাট করতে পাঠানো হল। শুরুটা খারাপ হল বলেই ভেবেছিলাম। কিন্তু সেই ভাবনাটা যে ঠিক নয়, তা পরে বুঝলাম।

মনে পড়ে গেল আমার মায়ের কথা। ছোট্টবেলায় মা আমাকে একটা জিনিস শিখিয়েছিলেন। বলতেন, শুরুটা কেমন হল সেটা বড় কথা নয়। শেষটা ভাল হওয়াই বেশি দরকার। আর হায়দরাবাদকে হারিয়ে প্লে-অফে উঠে কেকেআরের শেষটা যা হল, তা তো জানাই।

ইউসুফ পাঠানের ইনিংসটা নিয়ে লেখার আগে বরং আর একটা জিনিস আপনাদের জানাই। তরুণ কুলদীপ যাদবের বোলিংয়ে আমি মুগ্ধ। বাঁ-হাতি চায়নাম্যান বোলারের কাজটা কিন্তু মোটেই সোজা নয়। অর্থোডক্স স্পিনারদের তুলনায় ওর ভুল করার জায়গাটা কিন্তু খুব কম। বাঁ-হাতি চায়নাম্যান বোলিং অনেকটা নতুন ম্যাজিক শিখে পারিবারিক অনুষ্ঠানে তা দেখানোর মতো। ঠিকঠাক হলে দেখতে দারুণ লাগে। কিন্তু ভুল হলেই কেলেঙ্কারি। লজ্জার শেষ নেই। রবিবার কুলদীপের শো-টা কিন্তু ঠিকঠাকই ছিল। এক জন তরুণ ভারতীয় স্পিনারের বল ফ্লাইট করানোর সাহস দেখে আমি খুব খুশি। এই নিয়ে ওর এটা দ্বিতীয় আইপিএল মরসুম। কিন্তু ওকে কখনও মাঠে না নামতে পারার জন্য মুষড়ে পড়তে দেখিনি।

এ বার আসি ইউসুফের কথায়। ওর পরিণত মাথাটা দিয়ে খেলে আবার ইউসুফ আমাদের ম্যাচ জেতাল। ওর জন্য আমি খুব গর্বিত। অনেকেই আমায় জিজ্ঞেস করেন ইউসুফের মধ্যে পরিবর্তনটা কী এসেছে? আগের ইউসুফ ছিল ‘ব্যাং, ব্যাং’ এবং আরও কিছুটা ‘ব্যাং’। আর এখনকার ইউসুফ হল ‘ব্লক, ব্যাং, ব্যাং’ এবং দরকার পড়লে আরও কিছুটা ‘ব্যাং’। তা না হলে ও ‘ব্লক’-য়েই খুশি। ওর খুচরো রান নেওয়া দেখে বোঝাই যাচ্ছে ও চূড়ান্ত ফিট। আর একটা বড় মুহূর্ত ছিল সুনীল নারিনের ডেভিড ওয়ার্নারকে ফেরানো। অনেকে সুনীলকে নিয়ে অনেক রকমের তত্ত্ব দেন। কিন্তু আমার কাছে ওর সবচেয়ে বড় শক্তি হল ওর নিয়ন্ত্রণ।

আমরা দিল্লি রওনা হলাম খেপে খেপে। রাজধানীতে শুনলাম খুব বৃষ্টি হচ্ছে। আর তাপমাত্রাও বেশ আরামদায়ক। বুধবারের কী পূর্বাভাস তা জানি না। তবে সে দিনও যদি বৃষ্টি হয় তা হলে আমাকে টস জেতার জন্য মরিয়া হয়েই নামতে হবে। যেহেতু এটা প্লে-অফ ম্যাচ তাই জানি না কয়েন কার হাতে থাকবে। তবে যাই হোক না কেন, আমাকে আমার চালাকিগুলো কাজে লাগাতেই হবে। সে কয়েন ছোড়া বা হেড-টেল কল, যাই করি না কেন!

জয়পুর চলে গেলেন গম্ভীর

দিল্লিতে প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির জন্য নামতেই পারল না কেকেআর ক্যাপ্টেন গৌতম গম্ভীরের বিমান। সোমবার রাতে তা চলে যায় জয়পুরে। সেখানেই রাত কাটিয়ে মঙ্গলবার গম্ভীরের নিজের শহরে যাওয়ার কথা। সোমবার কেকেআর ক্রিকেটাররা একাধিক বিমানে কলকাতা থেকে দিল্লির পথে রওনা হন। অন্য বিমানগুলি ঠিকঠাক দিল্লিতে পৌঁছলেও, গম্ভীর ও তাঁর ক’য়েক জন সতীর্থকে নিয়ে রওনা হওয়া বিমানটি সেখানে নামতে না পেরে জয়পুরে চলে যায়। অগত্যা সোমবার সেখানেই থেকে যেতে হয় গম্ভীরদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kuldeep Yadav Gautam Gambhir KKR IPL2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE