চর্চায়: ইডেনে হ্যাটট্রিক করে বৃহস্পতিবার রাতে এভাবেই ডানা মেলে উড়ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন আবিষ্কার এবং চায়নাম্যান বোলার কুলদীপ যাদব। য়টার্ফাসের তোলা ফাইল চিত্র।
ইডেনে স্টিভ স্মিথ-দের বিরুদ্ধে তাঁর হ্যাটট্রিকের পর চব্বিশ ঘণ্টা কেটেছে। এর মধ্যেই ইডেনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আর এক হ্যাটট্রিককারী হরভজন সিংহের দরাজ শংসাপত্র পেলেন কুলদীপ যাদব। তবে ষোলো বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হরভজনের সেই হ্যাটট্রিক ছিল টেস্টে। আর কুলদীপের হ্যাটট্রিক হয়েছে এক দিনের আন্তর্জাতিকে।
বৃহস্পতিবার রাতে ইডেনে কুলদীপের হ্যাটট্রিক দেখার পর উচ্ছ্বসিত হরভজন বলছেন, ‘‘অদূর ভবিষ্যতে কুলদীপকে সরিয়ে সিনিয়র কোনও স্পিনারকে খেলানোর সম্ভাবনা এই মুহূর্তে দেখছি না।’’
যাঁকে নিয়ে এত আলোচনা, সেই কুলদীপ যাদব যদিও একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তৃতীয় ভারতীয় হিসেবে ‘হ্যাটট্রিক ক্লাব’-এ ঢুকে বলছেন, ‘‘ভাবতেই পারিনি শেষ পর্যন্ত হ্যাটট্রিক করে মাঠ ছাড়ব।’’
বৃহস্পতিবার ম্যাচ শেষ হওয়ার পর বিসিসিআই টিভিতে ভুবনেশ্বর কুমারের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারভিত্তিক অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন কুলদীপ। সেখানেই তিনি বলেন, ‘‘হ্যাটট্রিকের বলটা করার সময় বাঁ হাতি রিস্ট স্পিনারের চিরাচরিত ডেলিভারির কথা মাথায় ছিল না। কারণ তাতে উইকেট আসত না। সেক্ষেত্রে উইকেট পাওয়ার একমাত্র রাস্তা ছিল গুগলি দেওয়া।’’
আরও পড়ুন: তৃতীয় ওয়ান ডে খেলতে ইনদওর পৌঁছলেন বিরাটরা
ইডেনে প্রথম স্পেলে উইকেট পাননি কুলদীপ। বরং এই সময় বেশ কিছু রান দিয়ে ফেলেছিলেন। যার কারণ হিসেবে কুলদীপ বলেছেন, ‘‘বল ভিজে থাকায় গ্রিপ করতে অসুবিধা হচ্ছিল।’’ কিন্তু বোলিং-এ প্রান্ত বদল করে আসার পর আমার লক্ষ্য ছিল একটা উইকেট তুলে নিয়ে চাপটা অস্ট্রেলিয়া শিবিরে পৌঁছে দেওয়া। কারণ অস্ট্রেলিয়া তখন ম্যাচে ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। ওই সময় বলটা ঠিক জায়গায় ফেলে বোলিং-বৈচিত্র্য কাজে লাগাতে চাইছিলাম।’’
গত তিন মরসুম আইপিএল-এ কলকাতার দল কেকেআর-এর হয়ে খেলায় ইডেনের পিচ সেই অর্থে অনেকটাই চেনা কুলদীপের কাছে। যে প্রসঙ্গে তিনি বলছেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে আমার ঘরের মাঠ ইডেন গার্ডেন্স। তাই ইডেনের পিচ সেই অর্থে আমার কাছে অনেকটাই চেনা।’’
এ দিকে ইডেনে কুলদীপের হ্যাটট্রিক দেখে হরভজন সিংহ রীতিমতো নস্ট্যালজিক। ২০০১-এ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্টে মাত্র ২১ বছর বয়সে এই ইডেনেই হ্যাটট্রিক করে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন তিনি। হরভজনের কথায়, ‘‘সেই একই মাঠ, একই প্রতিপক্ষ আর একই বয়সের বোলার! কুলদীপকে ইডেনে বল করতে দেখে বার বার মনে পড়ে যাচ্ছিল ২০০১-এর সেই দুপুরে।’’
ভারতীয় দলে কুলদীপের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে হরভজন বলছেন, ‘‘জাতীয় দলে নবাগত এ রকম একজন তরুণ স্পিনার হ্যাটট্রিক করলে এক ধাক্কায় তাঁর আত্মবিশ্বাস অন্য উচ্চতায় চলে যেতে পারে।’’ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭০০ উইকেটের মালিক হরভজন আরও বলেন, ‘‘কুলদীপ এবং যুজবেন্দ্র চহাল এই মুহূর্তে যা বোলিং করছে তাতে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাডেজা-র মতো সিনিয়র স্পিনারদের একদিনের দলে ফেরা একটু কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে কী হবে কেউ জানে না।’’
কেন কুলদীপ ও চহালের জুটিকে এত ভয়ঙ্কর দেখাচ্ছে তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ভাজ্জি। বলেছেন, ‘‘রিস্ট স্পিনারদের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। যা পরিবেশের উপর নির্ভরশীল নয়। চহালের হাতে ভাল গুগলি রয়েছে। ও ভাল বল ঘোরায়। একই সঙ্গে কুলদীপও উইকেটের দু’দিকেই বল কাটাতে পারে। আর গুগলিটাও ভয়ঙ্কর। সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটে সফল হতে গেলে যে ‘এক্স ফ্যাক্টর’ দরকার তা ওদের রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy