Advertisement
E-Paper

‘ঘরের মাঠে’ নয়া অস্ত্রে বাজিমাত কুলদীপের

তাঁর পয়া ইডেনে রোহিত-ম্যাজিক দেখা গেল না ঠিকই। কিন্তু ইডেনের ‘ঘরের ছেলে’ কুলদীপ যাদব ও দীনেশ কার্তিক মান রাখলেন।  

রাজীব ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৩
দুরন্ত: ১৩ রানে ৩ উইকেট কুলদীপের। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

দুরন্ত: ১৩ রানে ৩ উইকেট কুলদীপের। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

তাঁর পয়া ইডেনে রোহিত-ম্যাজিক দেখা গেল না ঠিকই। কিন্তু ইডেনের ‘ঘরের ছেলে’ কুলদীপ যাদব ও দীনেশ কার্তিক মান রাখলেন।

কলকাতা নাইট রাইডার্সের ঘরের মাঠে কেকেআরের সেই ‘হিট’ জুটিই রবিবার ভারতকে জয়ের মুখ দেখাল। এবং এ জন্য নাইটদের হয়ে খেলার অভিজ্ঞতাকেই ধন্যবাদ দিতে চান কুলদীপ ও দীনেশ দু’জনেই।

তবে এ দিন যে নতুন অস্ত্রে বিপক্ষের ব্যাটিংয়ে ধস নামিয়ে দেন ভারতীয় দলের চায়নাম্যান বোলার, তাতে সারা ক্রিকেটবিশ্বই অবাক। কুলদীপ যাদবকে এ দিন এক নতুন রূপে দেখা গেল যেন। ইডেন তাঁর কাছে প্রায় ঘরের মাঠ বলেই রবিবারের ম্যাচে এক নতুন ধরনের বল করেন কুলদীপ। যে বলটা তাঁর আর পাঁচটা সাধারণ বলের চেয়ে বেশি গতির। ঘণ্টায় একশো কিলোমিটার বা তার বেশি গতিতে এই নতুন ধরনের বল নিয়ে ভারতীয় দলের তারকা স্পিনার বলেন, ‘‘হ্যাঁ, নতুন ধরনের এই বলটা ইদানীং করছি। যাতে ব্যাটসম্যানের ছন্দ নষ্ট কর যায়। এটা অনেক দিন ধরেই অনুশীলন করছি আমি।’’

প্রায় বছর পাঁচেক অনুশীলন করার পরে এখন স্পিনের বিষ মেশানো এই নতুন গতিময় বোলিং করা শুরু করলেন উত্তর প্রদেশের তরুণ স্পিনার, যা নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বছর পাঁচেক ধরে অনুশীলন করছি এই বলটা। প্রায় ১৯ বছর বয়স থেকে। তবে কখনও এটা ম্যাচে করে দেখিনি। আসলে বড় ম্যাচে এই ধরনের বল করা অত সোজা নয়। সদ্য ম্যাচে করা শুরু করেছি। তবে এটা শুধু অস্ট্রেলিয়া সফরের কথা ভেবে নয়।’’

ইডেনে তাঁর বোলিংয়ে ও কার্তিকের ব্যাটিংয়ে নাইটরা জিতেছে বহু ম্যাচ। ভারতের হয়ে এখানে নেমে হ্যাটট্রিকও করেছেন কুলদীপ। ইডেনে খেলার সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই এ দিন ফের দুর্দান্ত বোলিং করলেন ভারতীয় দলের চায়নাম্যান বোলার। পরপর তিন ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান ড্যারেন ব্র্যাভো, রভমান পাওয়েল ও কার্লোস ব্রাথওয়েটকে ফিরিয়ে দিয়ে তাঁদের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ডই ভেঙে দেন। মাত্র পাঁচ ওভারের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ৪৯-৪ থেকে ৬৩-৭ হয়ে যায় তাঁর দাপটে।

জেতার পরে সাংবাদিকদের ম্যাচের সেরা বলেন, ‘‘আইপিএলে খেলার অভিজ্ঞতা থাকায় অনেক বেশি সুবিধা হয়েছে আমার। এখানে বহু ম্যাচ খেলেছি বলে বাড়তি আত্মবিশ্বাস পাই। কারণ, এখানে সব কিছুই আমার জানা।’’ ইডেন যে তাঁর হৃদয়ের অনেক কাছের, তা স্বীকার করে নিয়ে কুলদীপ বলেন, ‘‘ইডেন আমার হৃদয়ের অনেক কাছের। এই মাঠটা আমার ঘরের মতো। পাঁচ বছর ধরে এখানে খেলছি কেকেআরের হয়ে। এখানকার আউটফিল্ড কেমন, এই মাঠের ‘অ্যাঙ্গল’ সবই ভাল করে জানি আমি। ইডেনের উইকেটে যে তেমন বল টার্ন করে না, উইকেটে বল গ্রিপ হয় ভাল, গতি কমিয়ে-বাড়িয়ে বল করলে ব্যাটসম্যানকে সমস্যায় ফেলা যায়। এগুলো সবই আমার খুব ভাল করে জানা।’’

ইডেনের খুঁটিনাটি তাঁর সব জানা বলে ক্রুণাল পাণ্ড্যও কুলদীপের শরণাপন্ন হন এ দিনের ম্যাচে। এই নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বল তেমন ঘুরছিল না। ও আমার কাছে এলে আমি ওকে বলে দিই এখানে কী ভাবে বল করলে সাফল্য পেতে পারে। তাতে ওর বেশ কিছুটা সুবিধা হয়।’’ বিপক্ষের সবচেয়ে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত কায়রন পোলার্ডকে ফেরান পাণ্ড্যই।

রবিবারের ম্যাচে কষ্টার্জিত জয় নিয়ে কুলদীপ বলেন, ‘‘মাঝে মাঝে কম রান তোলাও কঠিন হয়। যেটা আজ আমাদের হয়েছে। তবে ওরা যে ভাল বোলিং করেছে, এটা মানতেই হবে। ঠিক জায়গায় বল রাখছিল ওরা। আসলে ইডেনে পরের দিকে বল ভাল সুইং করে। এ জন্যই কিছুটা কঠিন হয়ে উঠেছিল আমাদের কাজটা।’’

দীনেশ কার্তিক পুরস্কার মঞ্চে উঠে বলেন, ‘‘ভাল উইকেট ছিল ব্যাট করার জন্য। তবে ওরা সমানে ১৪০-রওপর গতিতে বল করছিল। সিনিয়র হিসেবে আমার কাজ হল চাপ সামলে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, যেটা আমাকে কেকেআরের ম্যাচেও করতে হয়েছে। তা করতে পেরে ভাল লাগছে।’’ কুলদীপও বলেন, ‘‘ডিকে তো এ বারের আইপিএলে এমন একাধিক ইনিংস খেলেছে। আজও সে রকমই খেলল। দারুণ ব্যাট করেছে।’’

অন্য দিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বোচ্চ স্কোরার ফ্যাবিয়েন অ্যালেন ইডেনের উইকেটকে কম রানের জন্য দায়ী করে বলেন, ‘‘খুব ভাল উইকেট ছিল না ব্যাটিংয়ের জন্য। টি-টোয়েন্টিতে এর চেয়ে ভাল উইকেট আশা করা যায়।’’ তবে আন্দ্রে রাসেলের হঠাৎ না আসাকে ব্যর্থতার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখান তিনি।

Cricket T20 India West Indies Kuldeep Yadav Dinesh Karthik
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy