Advertisement
১১ মে ২০২৪

মন্ত্রীমশাই ১৯ বলে ৫০

মন্ত্রীমশাইয়ের ব্যাট থেকে ছিটকে বেরচ্ছে একের পর এক চার, ছয়। ম্যাচের শেষে যখন ফিরে আসছেন তখন তাঁকে দেখে কে বলবে তিনি রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী!

দুরন্ত লক্ষ্মী। শনিবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

দুরন্ত লক্ষ্মী। শনিবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

শমীক সরকার
শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৬ ১০:১২
Share: Save:

মন্ত্রীমশাইয়ের ব্যাট থেকে ছিটকে বেরচ্ছে একের পর এক চার, ছয়। ম্যাচের শেষে যখন ফিরে আসছেন তখন তাঁকে দেখে কে বলবে তিনি রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী!

প্রদর্শনী ম্যাচে মন্ত্রীরা মাঠে নামেন। ব্যাটও করেন। কিন্তু সেটা নিতান্তই নামার জন্যই নামা। লক্ষ্মীরতন শুক্ল কিন্তু নেমেছিলেন রাজ্যের অন্যতম সেরা ঘরোয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টে টিমকে জেতাতে। ফাইনালে তুলতে। জেতালেনও। ফাইনালে খেলবেন কী না, তা অবশ্য জানেন না।

অভিনব এই ঘটনার সাক্ষী থাকল শনিবারের ইডেন। মাঠ থেকে বেরিয়ে লক্ষ্মীর প্রথম প্রতিক্রিয়া, ‘‘অনেক দিন পর মনে হচ্ছে যেন ঘরে ফিরলাম। কাল যখন ইন্ডোরে প্র্যাকটিস করছিলাম তখন থেকেই এক্সাইটেড ছিলাম,’’ বলছিলেন একশোরও বেশি রঞ্জি ম্যাচ খেলা লক্ষ্মী। যিনি ক’য়েক মাস আগে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে এখন বিধায়ক হয়ে মন্ত্রীর চেয়ারে।

ক্রিকেট মাঠে যখন নিয়মিত খেলতেন তখন যেমন সিরিয়াস ছিলেন। মন্ত্রীর গুরুদায়িত্ব সামলে ব্যাট হাতে নামার পরও কিন্তু মনে হল, বদলাননি। ‘‘জীবনটাই তো একটা চ্যালেঞ্জ। মাঠে যখন নেমেছিলাম তখন নিজেকে এক বারও মন্ত্রী মনে হয়নি। বার বার মনে হয়েছে এটা সেমিফাইনাল ম্যাচ। দলকে ফাইনালে তুলতেই হবে। তাই ম্যাচটাকে সিরিয়াসলি নিয়েছিলাম,’’ বলছিলেন মোহনবাগানকে শনিবার পি সেন ট্রফির ফাইনালে তোলা লক্ষ্মী। বাগান এ দিন হারাল নেতাজি সুভাষ ইনস্টিটিউটকে আট উইকেটে।

মন্ত্রী মাঠে নামছেন। ময়দান জেনে গিয়েছিল আগের দিনই। ইডেনে অন্য দিনের তুলনায় তাই ভিড় ছিল বেশি। তবে পথ চলতি অনেককেই দেখা গেল উঁকি-ঝুঁকি দিতে। আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা লক্ষ্মী অবশ্য এ সবের দিকে নজরই দেননি। তাঁর সব আগ্রহ ছিল রান করা নিয়ে। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়লেন তিনি।

মন্ত্রীমশাইয়ের পাশাপাশি এ দিন তাঁর সতীর্থ ঋদ্ধিমান সাহাও ব্যাটে আগুন ছোটালেন। যাঁর ৩৭ বলে ১০০ দেখে লক্ষ্মী বলে দেন, ‘‘ঋদ্ধির ব্যাটিং দেখে তো আমার দিনটা আরও ভাল হয়ে গেল।’’

আর ঋদ্ধিমান? এত দিন পর লক্ষ্মীর সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করার ব্যাপারটা কী অন্য রকম ছিল? ‘‘না না, লক্ষ্মী আগে যেমন ছিল সে রকমই আছে। মনেই হচ্ছিল না অনেক দিন পর নামছে। বোলিং, ব্যাটিং সবকিছুতেই আগের মতোই লাগছিল। মনে হচ্ছিল খেলার মধ্যেই আছে,’’ বলছিলেন এ দিন এগারোটা চার আর সাতটা ছক্কা হাঁকানো ঋদ্ধি। তাঁর আর লক্ষ্মীর ব্যাটিংয়ের জোড়া ইঞ্জিনে নেতাজি সুভাষ ইন্সটিটিউটের ১৯৮ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ১৩.২ ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় মোহনবাগান।

তবে টিম ফাইনালে উঠলেও মন্ত্রীমশাই নামবেন কি না তা অনিশ্চিত। লক্ষ্মী বললেন, ‘‘আমি জানতাম ফাইনালটা রবিবার। দেখা যাক সোমবার ফাইনালে নামতে পারি কি না।’’ মরসুমে ইতিমধ্যেই জেসি মুখোপাধ্যায় ট্রফি, সিনিয়র নক আউট আর সুপার লিগ জিতেছে মোহনবাগান। সোমবার চতুর্মুকুট জয়ের হাতছানি তাদের সামনে। যে চ্যালেঞ্জে তাদের সামনে মনোজ তিওয়ারির কালীঘাট।

প্রো কবাডির উদ্বোধনে জাতীয় সঙ্গীত গাইছেন বিরাট কোহালি। কবাডিতে মজে বলিউডের তিন প্রজন্মও।
রণবীর কপূর, শাহরুখ খান, অমিতাভ এবং জয়া বচ্চন। শনিবার মুম্বইয়ে। -টুইটার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Laxmi Ratan Shukla
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE