মোহনবাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী।
চাতক পাখির মতো গত আট বছর কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের জন্য হা পিত্যেশ করে বসে থাকতে হয়েছে মোহনবাগানকে। খেতাব গিয়েছে প্রতিবেশী চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবে।
কিন্তু বড় ম্যাচের আগে সেই পরিসংখ্যান মাথায় রাখতে নারাজ মোহনবাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী। এ দিন ছিল সবুজ-মেরুনের প্রয়াত কিংবদন্তি শৈলেন মান্নার জন্মদিন। তাঁর ছবিতে মালা দিয়েই মোহনবাগান কোচ বলেন, ‘‘এ বার চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে জিততেই হবে রবিবার। ডার্বি জিতলে অনেকটাই এগিয়ে যাব আমরা। খেতাবের কাছে পৌঁছে যাবে মোহনবাগান।’’
তার পরেই সবুজ-মেরুন শিবিরের কোচের গলায় ফুটে ওঠে মোহনবাগান সমর্থকদের মতো যন্ত্রণা। বলেন, ‘‘গত বছর কলকাতা লিগের কাছে গিয়েও গোলপার্থক্যে ট্রফিটা পাইনি। আই লিগ ফস্কে গিয়েছিল তিনটে ম্যাচে প্রত্যাশা মতো খেলতে না পারায়। সেই দলের অনেকেই রয়েছে এ বারের দলে। ছেলেদের ড্রেসিং রুমে এই যন্ত্রণার কথাই জানিয়ে এসেছি।’’
মহড়া: মরসুমের প্রথম বড় ম্যাচের আগে প্রস্তুতি তুঙ্গে দুই প্রধানে। মোহনবাগান মাঠে অনুশীলনে মগ্ন দিপান্দা ডিকা ও হেনরি কিসেক্কা। দর্শক কিংসলে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
গত বছর খেতাবের কাছ থেকে ফিরে আসার এই যন্ত্রণা, নাকি এ বারের কলকাতা লিগে দিপান্দা ডিকা, হেনরি কিসেক্কার গোলের মধ্যে থাকা সবুজ-মেরুনে প্রেরণা আনবে তা সময় বলবে। কিন্তু মরসুমের প্রথম বড় ম্যাচ খেলতে নামার আগে মোহনবাগান কোচ নিজের দলকেই পিছিয়ে রাখছেন। নেপথ্যে ইস্টবেঙ্গলের দুই বিদেশি—কোস্টা রিকার ডিফেন্ডার জনি আকোস্টা ও মহম্মদ আল আমনা। শঙ্করলাল বলছেন, ‘‘আমরা স্বপ্ন দেখি বিশ্বকাপ খেলব। আর জনি বিশ্বকাপ খেলে এসেছে। ফলে আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলবে। তা ছাড়া গত এক মাস দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছে। জনির জন্যই এগিয়ে রাখছি ইস্টবেঙ্গলকে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘সঙ্গে রয়েছে আমনা। এ বার ও দুর্দান্ত খেলছে। ইস্টবেঙ্গল এক স্ট্রাইকারে খেললেও, ওদের দুই উইঙ্গার ও দুই সাইডব্যাক-সহ কাশিম আইদারা উঠে এসে ভিড় বাড়ায় বিপক্ষ রক্ষণে।’’ ডিকা-হেনরিদের অনুশীলন দেখে স্পষ্ট এ দিন বড় ম্যাচে ৪-৪-২ ছকে দল সাজাচ্ছে মোহনবাগান। এর আগের ম্যাচে যে প্রথম একাদশ ছিল তাতে বদল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সংবাদমাধ্যমের সামনে বিপক্ষকে এগিয়ে রাখলেও সবুজ-মেরুন শিবিরের লক্ষ্য, ইস্টবেঙ্গলের ছন্দ নষ্ট করে দেওয়া। তার জন্য, এ দিন সকালে দুই প্রান্ত থেকে যাতে বল না ভেসে আসে কিংসলেদের রক্ষণে, তার অনুশীলন হল জোরকদমে।’’
পরিসংখ্যানে ময়দানের ডার্বি
আধিপত্যের দশক (কলকাতা লিগে)
• ইস্টবেঙ্গল: ১৯৭০-৭৯, ম্যাচ ১১, জয় ৭, হার ২, ড্র ২
• মোহনবাগান: ২০০০-২০০৯: ম্যাচ ২০, জয় ৯, হার ৩, ড্র ৮
কলকাতা লিগের শেষ পাঁচ সাক্ষাৎকার
• ২৩ মে ২০১৩: ইস্টবেঙ্গল ৩: মোহনবাগান ২
• ১১ জানুয়ারি: ২০১৪ মোহনবাগান ১: ইস্টবেঙ্গল ০
• ৩১ অগস্ট: ২০১৪ ইস্টবেঙ্গল ৩: মোহনবাগান ১
• ৬ সেপ্টেম্বর: ২০১৫ ইস্টবেঙ্গল ৪: মোহনবাগান ০
• ২৪ সেপ্টম্বর: ২০১৭ ইস্টবেঙ্গল ২: মোহনবাগান ২
*২০১৬ সালের সাক্ষাৎকারে মোহনবাগান ওয়াকওভার দেয় ইস্টবেঙ্গলকে।
দুই প্রধানের মোট সাক্ষাৎকার
• প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচ ৩৩৯, ইস্টবেঙ্গল জয়ী ১২১, মোহনবাগান জয়ী ১০৬, ড্র ১১২।
• প্রদর্শনী ম্যাচ ১৮, ইস্টবেঙ্গল জয়ী ২, মোহনবাগান জয়ী ৯, ড্র ৭।
কলকাতা লিগের দ্বৈরথ
• ম্যাচ ১৫২, ইস্টবেঙ্গল জয়ী ৫০, মোহনবাগান জয়ী ৪৪, ড্র ৫৮, ইস্টবেঙ্গলের গোল ১২৬, মোহনবাগানের গোল ১২৩।
তথ্য: হরিপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
কোচ ছাড়া গোটা দলের মুখে কুলুপ। এ দিন অনুশীলনের আগে প্রাক্তন অর্থসচিব ও সহ-সচিব ফুটবলারদের উদ্বুদ্ধ করে গেলেন। শেষ বেলায় ‘পেপ টক’ দিলেন সচিব অঞ্জন মিত্রও। আট বছরের কলকাতা-লিগ খরা কাটাতে সবুজ-মেরুন আপাতত এককাট্টা।
রবিবার কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ
ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান
(বিকেল, ৪.৩০ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। সরাসরি সম্প্রচার সাধনা নিউজে)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy