Advertisement
E-Paper

ইস্টবেঙ্গলের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানের ‘চিফ পেট্রন’ মুখ্যমন্ত্রী

ইস্টবেঙ্গলের প্রাক-শতবর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের সূচনা হয়েছিল অক্ষয়কুমারের হাতে। তিন বছর বাদে সেই অনুষ্ঠানকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে (নেতাজি ইন্ডোর নয়) মুখ্যমন্ত্রীর দেড়ঘণ্টার উপস্থিতি ইস্টবেঙ্গলের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানের নকশা শুধু বদলে দিল না, বদলে দিল গোটা বাংলা ফুটবলকেও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৬ ০৪:৩৭
শ্যাম থাপা ও শ্যামল ঘোষকে ইস্টবেঙ্গলের জীবনকৃতি সম্মান তুলে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। সোমবার। ছবি: উৎপল সরকার

শ্যাম থাপা ও শ্যামল ঘোষকে ইস্টবেঙ্গলের জীবনকৃতি সম্মান তুলে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। সোমবার। ছবি: উৎপল সরকার

ইস্টবেঙ্গলের প্রাক-শতবর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের সূচনা হয়েছিল অক্ষয়কুমারের হাতে।

তিন বছর বাদে সেই অনুষ্ঠানকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোমবার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে (নেতাজি ইন্ডোর নয়) মুখ্যমন্ত্রীর দেড়ঘণ্টার উপস্থিতি ইস্টবেঙ্গলের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানের নকশা শুধু বদলে দিল না, বদলে দিল গোটা বাংলা ফুটবলকেও।

এক কিক-এ বাংলা ফুটবলের সব অভাব অনটন অনেকটাই দূর করে দিলেন যে! ক্রীড়া বাজেটকে বাড়িয়ে এক রাতেই রাজ্যের কোষাগার থেকে পনেরো কোটি টাকা শুধু ফুটবলের জন্য খরচ করে দিলেন তিনি। বাংলার ক্রীড়া ইতিহাসে যে ঘটনা অভূতপূর্ব।

ইস্টবেঙ্গলের প্রতিষ্ঠা দিবসে এসে ক্লাবের গ্যালারি সংস্কারের জন্য দু’কোটি টাকা ঘোষণা তো করলেনই, বাংলা ফুটবলের কল্পতরু হয়ে আইএফএ-র প্রিমিয়ার লিগের তেরোটা ক্লাবের জন্যও আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করে দিলেন মমতা। বলে দিলেন, ‘‘বাংলার খেলাধুলোয় ফুটবল হল শিকড়। জন্মেই ফুটবলে কিক মারতে শেখে বাচ্চারা। কিন্তু আমি জানি, এখন কী কষ্টে ক্লাবগুলো ভুগছে। তাই তিন বড় দলের সঙ্গে আমি প্রিমিয়ারের বাকি ক্লাবগুলোকেও দু’বছর ৫০ লাখ টাকা করে দেব। অফিস টিমগুলো বাদে। ওরা যথেষ্ট সক্ষম টিম চালাতে।’’

তিন বছর বাদে লাল-হলুদের শতবর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানেও সরাসরি যুক্ত হওয়ার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘শতবর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের জন্য ক্লাব যে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করবে, তাতে রাজ্য সরকার থাকবে। কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দেখা হবে কী ভাবে সেই অনুষ্ঠানকে আরও জাঁকজমক পূর্ণ করে তোলা যায়।’’

ইস্টবেঙ্গল দিবসকে এ দিন যেন শুরু থেকেই মাতিয়ে রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে এসেই তিনি মঞ্চে ডেকে নিলেন ট্রেভর মর্গ্যানের লাল-হলুদ টিমকে। তার পরে একে একে প্রাক্তনদের। এমনকী বাদ গেলেন না আরএসপি নেতা ক্ষিতি গোস্বামীও। আসলে ফুটবলারদের আগাগোড়াই প্রাধান্য দেওয়ার ঐতিহ্য আছে ইস্টবেঙ্গলে। সোমবারও সেই প্রথায় ব্যতিক্রম দেখা গেল না। উল্টে মুখ্যমন্ত্রী নিজে যখন অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ফুটবলারদের নিয়েই মেতে থাকলেন, তখন লাল-হলুদ জনতার উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভেঙে পড়ার উপক্রম। ক্লাবের অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বলছিলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকেই আমরা শতবর্ষপূতি অনুষ্ঠানের চিফ পেট্রন করব ভেবে রেখেছিলাম। তিনি আজ নিজেই সম্মতি দিয়ে আমাদের কাজটা সহজ করে দিলেন।’’

অনুষ্ঠানে ‘ভারত গৌবর’ তো বটেই, বাকি পুরস্কারগুলোও মমতা তুলে দিলেন সবার হাতে। অসুস্থতার জন্য মিলখা সিংহ আসতে পারেননি। তাঁর জায়গায় পুরস্কার নিলেন দিল্লি থেকে আসা মিলখার ব্যক্তিগত সচিব দিগরাজ সিংহ। শ্যাম থাপা ও শ্যামল ঘোষ নিলেন লাল-হলুদের জীবনকৃতি সম্মান। বর্ষসেরা ফুটবলার ডু ডং। সেরা সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিকের পুরস্কার পেলেন দেবাশিস দত্ত ও রনি রায়। মমতা বলছিলেন, ‘‘রাত জেগে আমরা বিশ্বকাপ দেখি। ফুটবল নিয়ে উন্মাদনার অভাব নেই বাংলায়। আমরা দশ বছরের জন্য একটা এক্সপার্ট কমিটি তৈরি করব। যাতে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপকে আরও ভাল করে আয়োজন করা যায়। আমি জানি, এই টুর্নামেন্ট যদি একবার হিট করে যায়, তা হলে ফুটবলের চেহারা বদলে যাবে বাংলায়।’’

ইস্টবেঙ্গল দিবসে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মঞ্চে ইস্টবেঙ্গলের ফার্স্ট ডে কভার প্রকাশ করেন পশ্চিমবঙ্গের পোস্টমাস্টার জেনারেল। তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে এ দিনের লাল-হলুদ সন্ধ্যা যেন শুধুই মমতাময়।

Mamata Bandyopadhyay East Bengal Chief Patron
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy