প্রথম জন টেকনিক নিয়ে মহাসমস্যায় পড়েছেন। তিনি, মনোজ তিওয়ারি স্ট্রোক খেলার সময় আবিষ্কার করছেন, ব্যাটের মুখটা অনের দিকে চলে যাচ্ছে। সোজা নামছে না। গণ্ডগোলের কারণও ধরে ফেলেছেন তিনি দ্রুত। সমস্যা ব্যাকলিফটে। ওটা আরও বড় করতে হবে। ঠিক যেমন করেন জাক কালিস বা ইয়ান বেল।
দ্বিতীয় জনকে আবার টেকনিক আক্রমণ করেনি। অশোক দিন্দার সমস্যাটা আলাদা। তাঁকে নিয়ে নানা দিক থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ভাল করে বললে, সিএবি ইন্ডোরে তাঁর গত দিন দশ-বারোর অনুপস্থিতিকে ঘিরে। যা দিন্দা শুনলেন। শুনে পাল্টাটাও দিয়ে রাখলেন।
বঙ্গ ক্রিকেটের দুই নায়ক। বুচিবাবু টুর্নামেন্টে লক্ষ্মীরতন শুক্ল-র বাংলা রওনা হওয়ার চব্বিশ ঘণ্টা আগে যে দুই নায়কের ভিন্ন সমস্যা আদতে আলোচনার মুখ্য বস্তু হিসেবে দেখা দিল।
শুক্রবার বুচিবাবুতে প্রথম ম্যাচে নামছে বাংলা। এবং মনোজ তিওয়ারিও ঠিক করে ফেলেছেন, পরিবর্তিত টেকনিক নিয়েই সেখানে ম্যাচে নামবেন। সিএবি ইন্ডোরে যা নিয়ে খাটাখাটনি চালাচ্ছেন নিয়মিত। ভারত ‘এ’-র হয়ে অস্ট্রেলিয়া সফর শেষের পরপরই ব্যাপারটা ধরতে পারেন মনোজ। টেকনিক ত্রুটিমুক্ত করার কাজও শুরু করে দেন। “এতে সুবিধে হচ্ছে, পেসারদের খেলার সময় একটু বাড়তি সময় পাব,” সোমবার সিএবি ইন্ডোরে ট্রেনিং সেশন শেষ করার পর বলছিলেন মনোজ। কী দেখে পাল্টাচ্ছেন ব্যাকলিফট? মনোজ বলে দিলেন, “ক্রিকেট নিয়ে প্রচুর বই পড়েছি। বড় বড় ক্রিকেটারদের ব্যাটিং ভিডিও দেখছি। ইয়ান বেল বা জাক কালিসের যেমন ব্যাকলিফটটা বড়। শেখার চেষ্টা করছি সে সব দেখে। কাজও দিচ্ছে।” মনোজ প্রতিশ্রুতিও দিয়ে গেলেন, যথাসাধ্য করবেন জুনিয়রদের ব্যাটিংয়ে উন্নতির জন্য। যেগুলো অনূর্ধ্ব উনিশে থাকার সময় তাঁর জন্য সে ভাবে কেউ করেনি। দিন্দা আবার বুচিবাবুতে নেই। কারণ আসন্ন লম্বা ক্রিকেট-মরসুমের কথা ভেবে তাঁকে বিশ্রামে রেখেছে সিএবি।
নতুন স্টান্সে মনোজ। সোমবার ইন্ডোরে।
কিন্তু তাতেও পরের পর প্রশ্ন তাড়া করছে দিন্দাকে। যা সম্পূর্ণ অক্রিকেটীয়।
গত দশ-বারো দিন ‘ভিশন ২০২০’-র প্র্যাকটিসে দেখা যায়নি দিন্দাকে। যে প্রোজেক্টের অলিখিত নিয়ম হল, ম্যাচ বা টুর্নামেন্ট না থাকলে ক্রিকেটারকে হাজির থাকতে হবে ‘ভিশন ২০২০’-র প্রোজেক্টে। অথচ দিন্দা কলকাতায় ছিলেন। ক্রিকেট-বহির্ভূত কয়েকটা অনুষ্ঠানেও তাঁকে দেখা গিয়েছে। প্রশ্ন উঠে পড়ে, বুচিবাবুর দল নির্বাচনী বৈঠকে সিএবি যুগ্ম-সচিব সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন বুচিবাবুতে দিন্দাকে না পাঠিয়ে বিশ্রামে রাখতে। কিন্তু প্র্যাকটিস তো বন্ধ করতে বলেননি। তা হলে আসছেন না কেন? ‘ভিশন২০২০’-র বোলিং কোচ রণদেব বসু বা বাংলা টিমের সিনিয়র ক্রিকেটারদের কাছেও দিন্দার অনুপস্থিতি নিয়ে কোনও খবর ছিল না। রণদেব বললেন, “আমি কিছু জানি না। এখন ব্যাটিং-বোলিং হচ্ছে না, তাই বলতে পারব না। এটা ট্রেনাররা বা সিএবি বলতে পারবে।” ধোঁয়াশা আরও বাড়ছে দেখে এ দিন দিন্দাকে ফোন করেন সিএবি-র অন্য যুগ্ম-সচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়। দিন্দা তাঁকে আশ্বস্ত করেন যে, তিনি ইন্ডোরে না গেলেও জিমে ঠিকই যাচ্ছেন। নিজেকে ফিট রাখার জন্য যা যা দরকার, সবই করছেন।
কিন্তু তা হলে ভিশনের প্র্যাকটিসে আসছেন না কেন?
দিন্দা স্বপক্ষে যুক্তি দিলেন। বললেন, “আমি সিএবি ইন্ডোরে যাচ্ছি না ঠিক। কিন্তু তাই বলে কিছু করছি না, এমন নয়। ভিশন ২০২০-র প্র্যাকটিসে এখন দু’টো ব্যাপার হচ্ছে। দৌড়োনো আর জিম করে নিজেকে ফিট রাখা। দ্বিতীয়টা আমি করছি নিয়মিত। আর এক জন ট্রেনারের (ইনি সিএবি-র প্রাক্তন) সঙ্গে। আর দৌড়োদৌড়ির ব্যাপারটা আপাতত বাদ রেখেছি কারণ আমি সামনে কোনও ম্যাচ খেলতে নামছি না। বিশ্রাম নিয়ে আমাকে ফিট থাকতে বলা হয়েছে। তা হলে কথা এত হচ্ছে কেন?”
ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy