Advertisement
২৪ অক্টোবর ২০২৪

মনোরঞ্জনের দ্বারস্থ খালিদ

মনোরঞ্জনের হঠাৎ সরে যাওয়ার নেপথ্যে ছিল কোচের সঙ্গে মতান্তর। কারণ প্রাক্তন তারকা ডিফেন্ডারের পরামর্শ নিতে একেবারেই আগ্রহী ছিলেন না খালিদ। সেই কারণেই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।

ইস্টবেঙ্গলে ফিরছেন মনোরঞ্জন। ফাইল চিত্র

ইস্টবেঙ্গলে ফিরছেন মনোরঞ্জন। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫৮
Share: Save:

তাঁর জন্যই নিঃশব্দে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য। ডার্বি বিপর্যয়ের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে সেই খালিদ জামিলই দ্বারস্থ হলেন ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডারের!

গত মরসুমেই তিন প্রাক্তন তারকা মনোরঞ্জন, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় ও তুষার রক্ষিতকে দলের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন ক্লাবকর্তারা। এই মরসুমে খালিদ কোচ হওয়ার পরেও দলের সঙ্গে ছিলেন মনোরঞ্জন এবং তুষার। ম্যানেজার হিসেবে আই লিগের ম্যাচে রিজার্ভ বেঞ্চেও বসছিলেন মনোরঞ্জন। কিন্তু গত ৯ ডিসেম্বর আই লিগে লাজং এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচের পর থেকেই বদলে যায় ছবিটা। হঠাৎই নিজেকে সরিয়ে নেন ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার। অনুশীলনেও দেখা যায়নি তাঁকে। রবিবার আই লিগের ফিরতি ডার্বিতে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে হারের পর সেই মনোরঞ্জনই এখন প্রধান ভরসা ইস্টবেঙ্গলের।

মনোরঞ্জনের হঠাৎ সরে যাওয়ার নেপথ্যে ছিল কোচের সঙ্গে মতান্তর। কারণ প্রাক্তন তারকা ডিফেন্ডারের পরামর্শ নিতে একেবারেই আগ্রহী ছিলেন না খালিদ। সেই কারণেই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। সোমবার ক্লাব তাঁবুতে বসে মনোরঞ্জন খোলাখুলি বললেন, ‘‘কোচকে জবাবদিহি করতে হয় না। সাধারণ সমর্থকদের মুখোমুখি কিন্তু আমাদের হতে হয়। সমর্থকরা আমাকে বলতেন, আপনার মতো ডিফেন্ডার থাকা সত্ত্বেও দল এ ভাবে গোল কেন খাচ্ছে। আমার কাছে এর কোনও উত্তর ছিল না। খালিদ কী ভুল করছে, সেটা তো ওঁদের কাছে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। এই কারণেই দল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলাম।’’

রবিবার যুবভারতীতে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে আই লিগের ফিরতি ডার্বিতে হারের পরে নাটকীয় ভাবে বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। চূড়ান্ত ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও বারবার উইলিস প্লাজার রক্ষাকর্তা হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছিলেন খালিদ। রবিবার পরিস্থিতির চাপে ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগো স্ট্রাইকারকে ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে কোনও আপত্তি জানাননি তিনি। শুধু তাই নয়। দলের হাল ফেরাতে এ দিন তিনিই উদ্যোগ নেন মনোরঞ্জনকে ফেরাতে। লাল-হলুদের অন্যতম কর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, ‘‘খালিদ নিজেই মনোরঞ্জনের সাহায্য চেয়েছে। ওর ডাকেই মনোরঞ্জন ক্লাব তাঁবুতে এসেছে। দু’জনের মধ্যে আলোচনাও হয়েছে। আশা করছি, দু’এক দিনের মধ্যেই অনুশীলনে দেখা যাবে মনোরঞ্জনকে। খালিদকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য মনোরঞ্জন ছাড়াও সহকারী কোচ রঞ্জন চৌধুরী, ফিজিক্যাল ট্রেনার গার্সিয়া মিরান্দা ও গোলরক্ষক কোচ আব্দুল সিদ্দিকিও থাকবে। তবে দলের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কোচই।’’

কিন্তু এ বারও তো একই সমস্যা হতে পারে? প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক স্পষ্ট বলে দিলেন, ‘‘আমার কী ভূমিকা হবে, সেটা ক্লাবের কাছে আগে জানতে চাইব। তার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘দলে কোচের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। কোন ফর্মেশনে দল খেলবে সেটা কোচই ঠিক করবেন।’’ সেই সঙ্গে বুঝিয়ে দিলেন, ডার্বির হারে তিনি বিস্মিত নন। বললেন, ‘‘বিপর্যয়ের পূর্বাভাস অনেক দিন আগে থেকেই ছিল। ডার্বিতে তা চূড়ান্ত আকার নেয়।’’

মনোরঞ্জনের প্রত্যাবর্তনে ইস্টবেঙ্গল ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কি না, সেটা অবশ্য সময়ই বলবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE