বঙ্গ ক্রিকেটে পরিবর্তন আনতে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত পরিকল্পনাকে স্বাগত জানালেন প্রাক্তন ক্রিকেটাররা। ম্যাটে ক্লাব টুর্নামেন্ট করার পরিকল্পনা। যা হতে চলেছে এ বারের এএন ঘোষ মেমোরিয়াল ট্রফির খেলায়।
বাংলার ব্যাটসম্যানদের ফুটওয়ার্ক আর রিফ্লেক্স ভাল করার উদ্দেশ্যেই এই পরিকল্পনা সিএবি-র নতুন যুগ্মসচিবের। যাতে দ্রুত গতির বল সামলে আরও বেশি হুক, পুল ও স্কোয়ার কাট মারার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন তাঁরা। যা শুনে ম্যাট উইকেটে ক্রিকেট জীবনের অনেকাংশ কাটানো প্রাক্তন ক্রিকেটাররা বলছেন, “আইডিয়াটা বেশ ভাল।”
ষাটের দশকে যাঁরা কলকাতায় নিয়মিত ক্রিকেট খেলতেন, তাঁদেরও মনে করতে গিয়ে বেশ কষ্ট পেতে হল যে, শেষ কবে ম্যাটিং উইকেটে ক্লাব ক্রিকেট হয়েছে এ শহরে। গত পঞ্চাশ বছরেও যা হয়নি, তা এ বার হতে চলেছে রঞ্জি ট্রফি শুরুর আগেই নভেম্বরে এএন ঘোষ ট্রফির সব ম্যাচে। এমনকী ইডেনেও পাতা হবে ‘কয়্যার ম্যাট’। এখানেই শেষ নয়, প্র্যাকটিসের জন্য ক্লাবগুলোকে ম্যাটও দেবে সিএবি।
কেন এই অভিনব পরিকল্পনা?
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “ম্যাটে বল বাউন্স করে বেশি। বলের গতিও বেশি থাকে। ছেলেরা হুক, পুল, কাট করার সুযোগ পাবে বেশি। এই অভ্যাসটা ওদের হওয়া দরকার। রঞ্জিতে বাউন্সি ও গতিময় উইকেটে ব্যাট করতে অসুবিধা হবে না।”
প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের এই ব্যাখ্যা শুনে রাজু মুখোপাধ্যায় বললেন, “আমার আইডিয়াটা খুব ভাল লেগেছে। ১৯৯৬-এ অনূর্ধ্ব ১৬ বাংলা দলকে ম্যাটে প্র্যাকটিস করিয়ে সুফল পেয়েছিলাম। ম্যাটে ব্যাট করলে স্কোয়ার শটের দক্ষতা বাড়ে। এতে ভালই হবে।” গোপাল বসুর বক্তব্য, “বিজ্ঞাপনের সেই স্লোগানটা মনে পড়ছে, ‘জাস্ট ডু ইট’। করেই দেখা হোক না। ভাল বই খারাপ তো হবে না। আমাদের তো এখন আর কিছু হারানোর নেই।” প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে পঞ্চাশের উপর গড় থাকা শ্যামসুন্দর মিত্রও এই উদ্যোগকে সাধুবাদ দিচ্ছেন। বললেন, “ম্যাটিং উইকেটে খেললে ফুটওয়ার্কে উন্নতি হয়। তবে ইডেনে কখনও ম্যাটে খেলিনি। এ বার ইডেনেও ম্যাট পাতা হলে তা অভিনব ব্যাপার হবে।”
যদিও প্রশ্ন উঠছে ম্যাটিং উইকেটে বোলারদের স্পাইক ছাড়া জুতো পরে বল করতে হলে তারা পুরো দমে বল করতে পারবেন কি না। সোমবার যে বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়, সেখানে থাকা এক প্রতিনিধির কথায়, বিষয়টি শুধু তাঁদের জানানো হয়, মতামত চাওয়া হয়নি। মতামত চাইলে হয়তো এই যুক্তিটা উঠে আসত। তা ছাড়া বিভিন্ন মাঠে স্পোর্টিং উইকেট বানানোর পরিকল্পনার কী হবে, তা নিয়েও এখন প্রশ্ন উঠছে সিএবির বিভিন্ন মহলে।
এ দিকে, ২০ অক্টোবর ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ান ডে টিকিটে ইডেনে সফল আট ক্রিকেটারের ছবি ছাপা হবে। এই আট জনকে বাছা হবে শহরের বিশিষ্ট ক্রিকেট সাংবাদিকদের পরামর্শ নিয়ে, জানালেন কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে।
ঘরোয়া ক্রিকেটে নতুন পাঁচ নিয়ম
১) সব ম্যাচে ম্যাটিং উইকেটে।
২) দু’দিনের বদলে তিন দিনের ম্যাচ।
৩) প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং দল পাবে ৯৫ ওভার ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৫ ওভার।
৪) বোলার এক ওভারে দু’টি বল লেগ স্টাম্পের বাইরে করলে ব্যাটিং দলকে এক রান পেনাল্টি।
৫) সব সময়ই অন্তত একজন স্লিপ ফিল্ডার রাখতেই হবে।