ঘটনাটা শোনার পর ইন্টারনেটে ভিডিওটা দেখতে বসেছিলাম। এ তো একেবারে অচেনা মেসি। ওকে মাঠে কোনও দিন এত রাগতে দেখিনি। ২০০৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে জিনেদিন জিদানের মতো পুরোপুরি মেজাজ হারিয়ে ফেলেছিল মেসি। যার জেরে ওই ঢুঁসো এবং বিপক্ষ ডিফেন্ডারের গলা টেপা।
মেসিকে দেখে একটা কথা মনে হচ্ছে। কোপা আমেরিকার ব্যর্থতার জন্যই মানসিক ভাবে এখনও বিধ্বস্ত ও। কোপা শেষ হওয়ার পর থেকেই দেখছি সবাই মেসিকে দোষ দিচ্ছে। মারাদোনাও ছাড়েনি। এক জন ফুটবলার হওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এটা কতটা মানসিক চাপ তৈরি করতে পারে। তা সে যতই মেসির মতো প্রতিভাবান হোক না কেন। হাজার হোক, মেসিও তো মানুষ। সহ্যের একটা সীমা আছে। আর্জেন্তিনা জিতলে তখন এগারো জন জেতাচ্ছে। আর হারলে একা মেসির উপর দোষ। এটা তো ঠিক নয়।
বুধবার রাতে মেসির ওই আচরণ দেখার পর কিন্তু বিশ্বজুড়ে কোচেরা একটা নতুন স্ট্র্যাটেজি নিতে পারেন। ওকে রাগিয়ে দিয়ে খেলাটা নষ্ট করে দেওয়া। ডিফেন্ডাররাও এই সুযোগটা নেওয়ার চেষ্টা করবে। আমার সময় আমি যেমন সুরজিৎ বা শ্যাম থাপাকে রাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতাম। স্লেজিং করে বা গায়ের সঙ্গে সব সময় সেঁটে থেকে ওদের খেলাটা খেলতে না দিয়ে। কখনও সফল হয়েছি, কখনও হইনি। রোমার ডিফেন্ডারও সেই চেষ্টায় ছিল। মেসি মাথা গরম করল ঠিকই, কিন্তু খেলায় কোনও প্রভাব পড়তে দেয়নি। বরং হাইলাইটসে দেখলাম, এই ঘটনার মিনিট সাতেকের মধ্যেই ও গোল করল। মেসির মতো প্রতিভা মাথা গরম করলেও জানে মাঠে নেমে ওকে কী করতে হবে।
তাই কোচেদের একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে। মেসিকে রাগানোর চেষ্টাটা কিন্তু বুমেরাংও হয়ে যেতে পারে। ওর রাগটা যদি জেদে বদলে যায়, তা হলে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে। তবে মেসিকেও একটা ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। এ রকম আচরণ আবার করলে কিন্তু লাল কার্ড খেয়ে যেতে পারে। তা হলেই কিন্তু প্রতিপক্ষের স্ট্র্যাটেজি একেবারে খেটে যাবে।