Advertisement
E-Paper

গোল-সহ প্রত্যাবর্তন মেসির, বড় প্লেয়ারের ইগো আরও ভয়ঙ্কর করে তুলবে

লেখার শুরুটা একটা ভবিষ্যদ্বাণী দিয়ে করার লোভ সামলাতে পারছি না। রাশিয়া বিশ্বকাপে লিওনেল মেসিকে নিয়ে একটা ভবিষ্যদ্বাণী। মন বলছে, রাশিয়ায় আমরা মারাত্মক এক লিও মেসিকে দেখতে চলেছি!

সুব্রত ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:২০
তারাদের কাছাকাছি। মেসির পা ছুঁয়ে।

তারাদের কাছাকাছি। মেসির পা ছুঁয়ে।

আর্জেন্তিনা-১ : উরুগুয়ে-০
(মেসি)

লেখার শুরুটা একটা ভবিষ্যদ্বাণী দিয়ে করার লোভ সামলাতে পারছি না। রাশিয়া বিশ্বকাপে লিওনেল মেসিকে নিয়ে একটা ভবিষ্যদ্বাণী।

মন বলছে, রাশিয়ায় আমরা মারাত্মক এক লিও মেসিকে দেখতে চলেছি!

আমাদের, প্লেয়ারদের জীবনে ইগোটা খুব বড় হয়। প্লেয়াররা যখন প্রবল ঝড়ঝাপটার মধ্যে পড়ে, চতুর্দিক থেকে সে যখন সমালোচনা-সমালোচনায় এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যেতে থাকে, অনেক সময় সে রাগে-দুঃখে-হতাশা-অভিমানে তাৎক্ষণিক নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। অবশ্যই সে সব সিদ্ধান্তে আবেগ থাকে বেশি। মেসির ক্ষেত্রেও মনে হয়, ব্যাপারটা ও রকমই ছিল। তিন-তিনটে মেগা টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেও দেশকে ট্রফি না দিতে পারার যন্ত্রণা, চার দিকের সমালোচনা আর সহ্য না করতে পেরে অবসর নিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু ওই যে বললাম, প্লেয়ারের ইগো। অবসর ভেঙে ফিরে এসে মেসি যে একটা ওলটপালটের চেষ্টা করবে, আন্দাজ করেছিলাম। কিন্তু এতটা ভয়ঙ্কর ওকে দেখাবে, ভাবতে পারিনি।

শুক্রবার ভোররাতে উরুগুয়ের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ কোয়ালিফাইং ম্যাচে মেসিকে দেখে এককথায় আমি বিস্ফারিত হয়ে গিয়েছি। কখনও লেফট উইং, কখনও রাইট উইং, কখনও স্ট্রাইকার, এমনকী কখনও ডিফেন্সে সার্পোটিং রোলে— একজন ফুটবলারের পক্ষে অতিমানবীয় হয়ে উঠে যা-যা করা সম্ভব, সব লুইস সুয়ারেজদের বিরুদ্ধে করে গেল মেসি। উরুগুয়ে কিন্তু ভাল নয়, বেশ ভাল টিম। সুয়ারেজ, কাভানি, গডিন— তিন জন বিশ্বের অন্যতম সেরা প্লেয়ার ওদের টিমে খেলে। কিন্তু তবু গোটা ম্যাচে আর্জেন্তিনার সামনে ওরা দাঁড়াতে পারল না। এমনকী পাওলো দিবালা লাল কার্ড দেখার পরে মিনিট পঁয়তাল্লিশ দশ জনে খেলা আর্জেন্তিনার কাছেও দাঁড়াতে পারল না।

বলা ভাল, একটা মেসির কাছে দাঁড়াতে পারল না। আর্জেন্তিনার নতুন কোচ এদগার্দো বাউজার একটা আলাদা ধন্যবাদ প্রাপ্য। মেসিকে উনি ফ্রি জোনে খেলিয়ে আরও ভয়ঙ্কর করে দিলেন। ঠিক যেটা মেসি চায়। ও চায় বলটা একটু ফাঁকায় পেতে। সেটা একবার পেয়ে গেলে এক বা দু’জন প্লেয়ারকে ড্রিবল করে বেরিয়ে যাওয়া কোনও ব্যাপার নয় ওর পক্ষে।

মেসির গোলটাও অসাধারণ। ম্যাচের বিয়াল্লিশ মিনিটে যেটা হল। কেউ কেউ বলতে পারেন, গোলটা তো ডিফ্লেক্টেড। উরুগুয়ে ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে ঢুকেছে। আমি বলব, ডিফেন্ডারের পায়ে না লাগলেও বলটা গোলেই যেত। যাচ্ছিলও। আর তার আগে মেসির স্কিলটা ভাবুন। দু’জন প্লেয়ারের মধ্যে থেকে বলটা হিল করে বার করে নিয়ে গেল! গোটা সেকেন্ড হাফ দশ জন হয়ে গিয়েছিল আর্জেন্তিনা। কিন্তু মেসিকে ও রকম খেলতে দেখে দি’মারিয়া আর মাসচেরানোও এতটা তেতে গেল যে, ওরা দশ জনে খেলছে বুঝতেই পারলাম না।

এটাই হয়। টিমের সেরা প্লেয়ার যদি দুর্দান্ত খেলতে শুরু করে, বাকিরাও চার্জড হয়ে যায়। আর মেসি তো অবসর থেকে ফিরেছে। চাপ যে একেবারে ছিল না ওর উপর, বলাটা অন্যায় হবে। টিভিতে মেসিকে যত বার দেখেছি, ওকে একটু টেনশনে মনে হয়েছে। স্বাভাবিক। না পারলে তো আবার ওকে ছিঁড়ে ফেলা শুরু হয়ে যেত। কিন্তু নিজেকে আবার প্রমাণের তাগিদটা এত বাড়াবাড়ি রকমের ছিল যে, ও সব চাপ-টেনশন কোনও পাত্তা পায়নি। একটা সময় দেখলাম, ডিফেন্সে নেমে এসে সাপোর্টিং রোলে খেলছে। বল ছিনিয়ে নিয়ে মিডফিল্ডারকে পাস করে নিজে উপরে উঠে ফের বল নিচ্ছে! বলছি না, ম্যাচটায় মেসি নিজের একশো শতাংশ দিতে পেরেছে। কিন্তু এটা বলব, এ বার দেবে। একশো কেন, আগামী দিনে মেসিকে দু’শো পার্সেন্ট দিতে আমরা দেখব। অবসর থেকে ফিরে নিজেকে আরও একবার প্রমাণের তাগিদটাই ওকে ছোটাবে।

কেন ভবিষ্যতে মেসি আরও মারাত্মক হতে যাচ্ছে, এ বার বোঝা গেল? রাশিয়া বিশ্বকাপের কথাটাও কিন্তু আমি এমনি এমনি বলিনি!

Leo Messi Argentina
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy