নেইমার ‘নার্ভাস’! জীবনের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে নামার বাহাত্তর ঘণ্টা আগেই। যার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আবার ফেসবুকে নেইমারেরই ভবিষ্যদ্বাণী—‘‘বার্সা ত্রিমুকুট পাবে।’’ সঙ্গে টিম বার্সেলোনা-র সঙ্গে তিন ট্রফি-সহ ছবির পোস্ট। লা লিগা, কোপা দেল রে। আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফির গায়ে লেখা— ‘পরের সপ্তাহে!’
মেসিকে ‘অপার্থিব’ বলেও বিপক্ষ গোলকিপার বুফোঁ-র খোঁচা, ‘‘শনিবার রাতে মনে হয় লিও আমাদের মতো বিশ্বের বাকি মনুষ্য ফুটবলার হিসেবে মাটিতে পা রাখার অনুভূতি পাবে।’’ এ দিনই আবার মেসির ডোপ পরীক্ষা নিল উয়েফা। যার জন্য সতীর্থ জাভির বিদায়ী সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির থাকতে পারেননি বার্সা রাজপুত্র। ফেসবুকে নিজেই সে কথা জানিয়ে জাভির সঙ্গে নিজের পুরনো একটা ছবি পোস্ট করে মেসি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন টিমমেটকে।
সুয়ারেজকে বার্লিনের অলিম্পিয়া স্টেশন-এ (যে স্টেডিয়ামে বার্সেলোনা-জুভেন্তাস গ্র্যান্ড ফিনালে) প্রথম দর্শনে কিয়েলিনি নাকি করমর্দন করে জড়িয়ে ধরবেন! বিশ্বকাপের সেই কামড়-কাণ্ডের কোনও রেশ নাকি কিয়েলিনির ভেতর আর নেই। তাঁর কাছে বার্লিনের মাঠে সুয়ারেজ কেবল বিপক্ষ দলের স্ট্রাইকারই। অন্য কিছু নয়।
বার্সার মহা ত্রিশূল— মেসি-নেইমার-সুয়ারেজ, এ মরসুমে যাঁদের মিলিত গোল সংখ্যা ‘মাত্র’ ১২০, সেই ভয়ঙ্কর ত্রয়ীর জন্য ইউরোপের সর্বোত্তম ক্লাব টুর্নামেন্টের ফাইনালে বিপক্ষের অবস্থান এই মুহূর্তে এ রকমই।
চাপ-পাল্টা চাপের চাপানউতরে ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজার তিন দিন আগেই টগবগ করে ফুটছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল।
মেসি সম্পর্কে যেমন প্রাক্তন জুভেন্তাস মিডফিল্ডার মাতেরাজ্জি বলেছেন, ‘‘লিও অন্য গ্রহের গোল অনেক করেটরে ঠিকই, কিন্তু একটা কথা মানতেই হবে— লা লিগায় আক্রমণ যেমন অসাধারণ, রক্ষণ তেমনই জঘন্য। মেসি সেরি এ-তে খেললে এত ঘনঘন এ রকম গোল করতে পারত না। ফুটবলে ডিফেন্সটা কী বস্তু সেটা ইতালিতে খেললেই কারও পক্ষে সবচেয়ে ভাল ভাবে বোঝা সম্ভব।’’
জুভ অধিনায়ক বুফোঁ আবার অন্য কায়দায় মেসির বিরুদ্ধে মনস্তাত্ত্বিক লড়াই শুরু করে দিয়েছেন। ‘‘মেসি অপার্থিব, যে আমাদের মতো মানুষ ফুটবলারদের সঙ্গে বা বিরুদ্ধে খেলে। তবে আশা করব চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে মেসির পা-ও মাটি স্পর্শ করবে এক জন মনুষ্য ফুটবলার হিসেবেই।’’
যদিও বুফোঁর সতীর্থ ডিফেন্ডার বোনুচি যেন এখনই সাদা রুমাল উড়িয়ে দিচ্ছেন! মেসি-নেইমার-সুয়ারেজের দিকে আগাম আত্মসমর্পণের ভঙ্গি ইতালিয়ান সাইড ব্যাকের কথায়। ‘‘মেসিকে আটকানোর কোনও আইনি পথ নেই। ওকে আটকানোর একটাই রাস্তা— ল্যাং মেরে ফেলে দাও। সোজা কথায়, মেসিকে আটকাতে হলে বেআইনি ভাবে আটকাতে হবে। শনিবার মাঠে ওদের তিন জনকে প্রথম বার দেখে আমি কী করব ঠিক করেছি? হাততালি দেব। যদি তাতে আমার একটু সুবিধে হয়!’’
কিন্তু উল্টো ড্রেসিংরুমেও টেনশনের চাপা স্রোত বইছে যে! ফেসবুকে যেমন আছেন, তেমনই নেইমার এ-ও বলেছেন, ‘‘আমাদের অ্যাটাকিং ত্রিভূজ বিপক্ষের কাছে ভয়ের কারণ যেমন, তেমনই এটাও মাথায় রাখছি, আমার বিখ্যাত ব্রাজিলিয়ান পূর্বসুরি রোনাল্ডো জীবনে চার-চারটে বড় ইউরোপিয়ান ক্লাব বার্সা, রিয়াল, এসি মিলান, ইন্টারে খেলেও কখনও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ পায়নি। আমি সে জন্য একটু হলেও ভীত। বড় রোনাল্ডোর দশা দেখে বুঝতে পারছি, ঠিক কতটা কঠিন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ পাওয়াটা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy