Advertisement
E-Paper

কুয়েরির চেয়েও মানসিক চাপ ডোবাল নোভাককে

শকিং। কিন্তু শকটা হঠাৎ আসেনি বলেই এসডব্লিউ ১৯-এ জকোভিচের হার নিয়ে সেই হা-হুতাশ দেখছি না। যা হয়তো দেখা যেত ম্যাচটা এক দিনেই শেষ হয়ে গেলে।

জয়দীপ মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৬ ০৪:১৬
বিদায় জকোভিচ। অঘটনের পরে নায়ক কুয়েরি। শনিবার। -এএফপি

বিদায় জকোভিচ। অঘটনের পরে নায়ক কুয়েরি। শনিবার। -এএফপি

শকিং। কিন্তু শকটা হঠাৎ আসেনি বলেই এসডব্লিউ ১৯-এ জকোভিচের হার নিয়ে সেই হা-হুতাশ দেখছি না। যা হয়তো দেখা যেত ম্যাচটা এক দিনেই শেষ হয়ে গেলে। বরং ইংরেজ টেনিসপ্রেমীদের চোখ-মুখ দেখছি হঠাৎ বেশ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে অ্যান্ডি মারের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রাস্তা পরিষ্কার হয়ে যাওয়ায়।

শুক্রবার যখন প্রথম দু’সেটেই হেরে বসে জোকার, তখন থেকেই মনের মধ্যে একটা খোঁচা খাচ্ছিলাম যেন, আদৌ নোভাক জিততে পারবে তো ম্যাচটা? যতই গ্র্যান্ড স্ল্যামে টানা ৩০টা ম্যাচ জিতুক না কেন, এ দিন প্রথম দুটো সেটে যেন ও নিজের সঙ্গেই যুদ্ধ করছিল। একেই ঘাসের কোর্টে নোভাক অন্য সারফেসের তুলনায় অল্প হলেও দুর্বল। উইম্বলডনে নামলে যে ওকে কিছুটা ‘সাইকোলজিক্যালি চ্যালেঞ্জড’ লাগে, তা গ্যালারিতে বসেই বোঝা যায়। এখানেও বোধহয় সেটা বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াল। একেই ক্যালেন্ডার স্ল্যামের চাপ। এ বার উইম্বলডনে নাদাল না থাকায় ওর সম্ভাবনাটা ভালই ছিল। তার উপর ঘাসের কোর্ট। তার সঙ্গে যোগ হয় বিপক্ষের দিক থেকে আসা মারাত্মক চাপ। এ দিন কিন্তু সেরা পারফরম্যান্সটা দেখিয়ে দিল মার্কিন স্যাম কুয়েরি।

একটা ম্যাচ যখন বৃষ্টির জন্য দু-দু’বার বন্ধ হওয়ার পর ফের চালু হয়, তখন বেশি চাপে থাকে ফেভারিটরাই। ছন্দটা নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে ফের মনঃসংযোগ করা অবশ্যই কঠিন হয়ে যায়। অন্য দিক থেকে দেখতে গেলে প্রতিপক্ষ রিকভারির ভরপুর সুযোগ পেয়ে যায়। কুয়েরির ক্ষেত্রে সম্ভবত এটাই হল। দশ বছর ধরে প্রো সার্কিটে খেলা ছেলেটা এখন পর্যন্ত কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের শেষ চারেও যায়নি। আট বার নোভাকের কাছে হেরেছে। তার আর হারানোর কী আছে? সে যখন একটা গোটা দিন বিশ্রাম পেয়ে ফের কোর্টে নামে, তখন শূন্য থেকে শুরু করতে পারে। শনিবার সেটাই হল। বিশ্বের সেরার বিরুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ে যাওয়ার পর টাই ব্রেকারে গেম ও ম্যাচ ছিনিয়ে নেওয়ার প্ল্যানটা যে ও আগাম ছকে রেখেছিল এ দিন, তা ওর অ্যাপ্রোচেই বোঝা গিয়েছে।

এখানে একটা আলোচনা শুনছিলাম যে, নোভাক নাকি ওর ম্যাচ এক নম্বর কোর্টে ফেলা নিয়ে অসন্তুষ্ট। কয়েকজনের কাছে নাকি ও বলেছে, অ্যান্ডি মারের ম্যাচ বারবার ছাদে ঢাকা সেন্টার কোর্টে ফেলা হচ্ছে, অথচ ওর ম্যাচ দেওয়া হচ্ছে খোলা কোর্ট নম্বর ওয়ানে। জানি না কতটা সত্যি। তবে যদি বলেই থাকে, অন্যায় কিছুই করেনি বোধহয়।

তৃতীয় সেটে নোভাকের জয়ে ফিরে আসা দেখে আশা জেগেছিল। অসম্ভব মনের জোর আর নিখুঁত প্ল্যানিংয়ের সাহায্য নিয়ে হয়তো ও ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত বার করে নেবে। বলাবলিও হচ্ছিল এখানে, জোকার ম্যাজিক জানে। ওর কাছে এটা কোনও ব্যাপারই নয়। সে শেষ পর্যন্ত বিশ্বের ৩৭ নম্বরের কাছে এ ভাবে হেরে যাবে, সত্যিই ভাবা যায়নি।

কুয়েরির উচ্চতাটাই ওর সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট। ছ’ফুট ছয় ইঞ্চি। ওকে দেখে ওর দেশেরই জন ইসনারের কথা মনে পড়ে যায়। এ রকম উচ্চতার টেনিস প্লেয়াররা যদি সার্ভিসটা ভাল করে রপ্ত করতে পারে, তা হলে ওদের দমানো বেশ কঠিন হয়ে যায়। তার উপর পাওয়ার শট। কুয়েরির শটগুলো গোলার মতো। খেলার শেষে দেখছিলাম ও এস্ মেরেছে ৩১টা। যার মধ্যে ১৫টাই শেষ সেটে। যেখানে জকোভিচ মেরেছে মোটে সাতটা এস্। ওর মোট উইনার ৩৪টা, কুয়েরির সেটা ৫৬। এই দুটো পরিসংখ্যানেই বোঝা যায় কুয়েরি কতটা দাপট দেখিয়েছে।

ঘাসের কোর্টে পাওয়ার টেনিস বরাবর এ রকমই কার্যকর। ক্রোয়েশিয়ার গোরান ইভানিসেভিচের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। ওর পাওয়ার টেনিসে সাম্প্রাস-আগাসি যুগের উইম্বলডনও কেঁপে উঠেছিল।

নোভাক হেরে যাওয়ায় অ্যান্ডি মারের রাস্তা পরিষ্কার হয়ে গেল অনেকটাই। সামনে শুধু ফেডেরার। ও যথেষ্ট ভাল খেলছে। আর এক জনের কথা বলব। দেল পোত্রো। ওয়ারিঙ্কাকে হারিয়ে ও বুঝিয়ে দিয়েছে কতটা ভাল ফর্মে আছে। তাই আমার ফেভারিটদের তালিকায় তিন নম্বরে রাখলাম দেল পোত্রোকে।

Novak jovovich wimbledon
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy