যুগলবন্দি: দুই গোলদাতা ফৈয়জ এবং জিতেন। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
রবিবার সন্ধ্যায় বারাসত স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে আনন্দে আত্মহারা লাফাচ্ছিলেন হাওড়ার বছর পঞ্চাশের এক মহমেডান সমর্থক।
৩৬ বছর আগে মহমেডানের শেষ বার কলকাতা লিগ জয় দেখেছিলেন বাবার হাত ধরে। তখন তাঁর বয়স মাত্র চোদ্দো। কিন্তু সেই স্মৃতি এখনও উজ্জ্বল তাঁর মনে। তার পর থেকে শুধুই ব্যর্থতা। এই মরসুমেও ঘরোয়া লিগের প্রথম ম্যাচে কল্যাণীতে পাঠচক্রের বিরুদ্ধে হারের যন্ত্রণা নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। এ দিন সাদার্ন সমিতির বিরুদ্ধে ৩-০ গোলে জয়ের পর ফের লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছেন তাঁর মতোই অসংখ্য মহমেডান সমর্থক।
সাদার্ন সমিতির বিরুদ্ধে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তোলেন মহমেডানের ফুটবলাররা। নেপথ্যে ওগবা কালু। আট বছর আগে ওডাফা ওকোলির সঙ্গে জুটি বেঁধে চার্চিল ব্রাদার্সকে আই লিগ জিতিয়েছিলেন কালু। আগের চেয়ে অনেক শ্লথ হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু মাঝমাঠে তিনিই প্রধান ভরসা। ম্যাচের পর উচ্ছ্বসিত মহমেডান কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলছিলেন, ‘‘প্রথম ম্যাচে কালু থাকলে হয়তো হারতাম না। গতি কমলেও দারুণ খেলছে। ওর জন্যই অন্যরা চাপমুক্ত হয়ে খেলছে।’’
কালু দুরন্ত খেললেও আর বিদেশি দিপান্দা ডিকা এ দিনও ব্যর্থ। তাতেও অবশ্য জিততে সমস্যা হয়নি মহমেডানের। ২১ মিনিটে শেখ ফৈয়জ অসাধারণ গোল করে এগিয়ে দেন মহমেডানকে। বাংলার সন্তোষ ট্রফি চ্যাম্পিয়ন দলের এই সদস্য দ্বিতীয় গোল করেন ৫৬ মিনিটে। আর একেবারে শেষ মুহূর্তে তৃতীয় গোল জিতেন মুর্মুর। গত মরসুমে ইস্টবেঙ্গলের লিগ জয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন জিতেন। এ বছরও লাল-হলুদের হয়ে প্রাক-মরসুম প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু লিগ শুরু হওয়ার সপ্তাহখানেক আগে সই করেন মহমেডানে। তিন ম্যাচে তিন গোল হয়ে গেল জিতেনের। মহমেডান কোচ বললেন, ‘‘জিতেন এখন অনেক পরিণত।’’
কিন্তু আই লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা ডিকার কী হল? ‘‘আমি টিম গেমে বিশ্বাস করি। ডিকা গোল না পেলেও খুব ভাল খেলছে। ওকে নিয়ে আমি একেবারেই চিন্তিত নই,’’ দাবি বিশ্বজিতের। মহমেডান কি পারবে এ বার চ্যাম্পিয়ন হতে? মহমেডান কোচ বললেন, ‘‘দল যে ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাতে স্বপ্ন দেখতে ক্ষতি কী?’’
মহমেডান: মহম্মদ রশিদ, অঙ্কিত মুখোপাধ্যায়, রানা ঘরামি, রিচার্ড আগুউ, শেখ ফৈয়জ, ওগবা কালু, তীর্থঙ্কর সরকার (মুমতাজ আখতার), দীপেন্দু দোয়ারি (প্রহ্লাদ রায়), জিতেন মুর্মু ও দিপান্দা ডিকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy