Advertisement
E-Paper

ম্যাচের দু’দিন আগেই শুরু সনি বনাম ডাফি

গুয়াহাটি টু গোয়া। এএফসি কাপ থেকে আই লিগ। বিদেশি টিমের বিরুদ্ধে চমকপ্রদ জয়ের পর মিশন সালগাওকর। ষোলো ঘণ্টার মধ্যেই যুদ্ধক্ষেত্র বদল হয়ে গেল মোহনবাগানের।

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:৪৯
ডাফির ডেরায় হানা টিম বাগানের। বৃহস্পতিবার প্র্যাকটিসে ডাফি ও গোয়া বিমানবন্দরে কর্নেলরা।ছবি: উৎপল সরকার।

ডাফির ডেরায় হানা টিম বাগানের। বৃহস্পতিবার প্র্যাকটিসে ডাফি ও গোয়া বিমানবন্দরে কর্নেলরা।ছবি: উৎপল সরকার।

গুয়াহাটি টু গোয়া। এএফসি কাপ থেকে আই লিগ। বিদেশি টিমের বিরুদ্ধে চমকপ্রদ জয়ের পর মিশন সালগাওকর। ষোলো ঘণ্টার মধ্যেই যুদ্ধক্ষেত্র বদল হয়ে গেল মোহনবাগানের।

সেই নতুন মঞ্চে পা দিয়েই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন সনি নর্ডি। ‘‘ওডাফার চেয়ে ড্যারেল ডাফি বড় স্ট্রাইকার নয়। সেই ওডাফা যখন আমাদেরকে গোল দিতে পারেনি, ডাফিও পারবে না।’’

বাগানের হার্টথ্রব হাইতিয়ান ভাস্কোয় টিম হোটেলে দাঁড়িয়ে এই মুহূর্তে আই লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা ‘ডাফি থামাও’-এর নিশ্চয়তা দিচ্ছিলেন। যার ঘন্টাখানেকের মধ্যে আবার পাল্টা চ্যালেঞ্জের ছবি ফুটে উঠল চার কিলোমিটার দূরে। সালগাওকর অনুশীলনে তাদের স্কটিশ স্ট্রাইকার তখন উইং বা কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে গোল করতে মগ্ন। সনির হুঙ্কার শুনে তিলক ময়দানে সূর্যাস্তের মায়াবী আলোয় প্রথমে হেসে ফেলেন ডাফি। ভাঙাচোরা মুখাবয়ব অবশ্য পরক্ষণেই বদলে যায় জেদে। ‘‘ও হয়তো জানে না এ দেশে আসার পর আমার গোলের ট্র্যাকরেকর্ডটা। তবে আমি জানি, ওদের ডিফেন্সে লুসিয়ানো খেলবে না। ওডাফার পিছনে যাকে ওদের কোচ লাগিয়েছিলেন সেই ছেলেটারও (প্রণয়) কার্ড আছে। এটা শনিবারের ম্যাচে আমাদের বিরাট সুবিধে। যেটার ফায়দা তুলতে আমি কিন্তু মাঠে থাকব। দেখে নেবেন, লিগে মোহনবাগানের অপরাজিত থাকার রেকর্ডটা এখানেই ভাঙবে।’’

ডাফির আত্মবিশ্বাস সনির চেয়ে কম নয় বোঝাই গেল। তিন বছর ভারতে খেলছেন ছ’ফুট-দুই। ওডাফা-র‌্যান্টিদের মতো প্রচারের আলোয় সে ভাবে আসেননি কখনও, কিন্তু গোকুলে বেড়ে উঠেছেন। চমকে দিয়েছেন প্রচুর গোল করে। প্রথম বার সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে আই লিগে যুগ্ম সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে সোনার বুট পেয়েছিলেন। গত বার চোট পাওয়ার আগে এগারো ম্যাচে আট গোল ছিল। এ বার তাঁর দল সালগাওকর যখন অবনমনের লড়াইয়ে তখনও ডাফি সর্বোচ্চ গোলদাতার চেয়ারে বসা। করে ফেলেছেন আট ম্যাচে আট গোল। একশো শতাংশ সাফল্য। ডাফি-ই সন্তোষ কাশ্যপের দলে আশার সলতে হবেন এর মধ্যে চমক নেই। অনুশীলনেও দেখা গেল সামান্য ঝুঁকে হাঁটা ফুটবলারই এখন গোয়ার দলটার মেরুদণ্ড। সেই ডাফিকে নিয়ে বাগান চিন্তিত হবে না তা কি হয়? হচ্ছেও। সনিও ঘুরিয়ে যা বললেন।

‘‘লুসিয়ানো-প্রণয় না থাকাটা আমাদের সমস্যায় ফেলেছে ঠিক। কিন্তু ওদের বিকল্পও আমাদের দলে তৈরি। সবাই ফর্মে আছে। যারা ডাফিদের থামাতে পারে,’’ বলার সময় সনির গলায় উৎকন্ঠা আর আত্মবিশ্বাস একসঙ্গে চুঁইয়ে পড়ল। সম্ভবত মলদ্বীপের ক্লাবকে পাঁচ গোল দিয়ে এখানে আসার জন্য। বাগানের এক নম্বর তারকা বলে দেন, ‘‘গোয়ায় দু’টো ম্যাচ জিততে পারলে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে আশি শতাংশ নিশ্চিত হয়ে যাব আমরা।’’

সনিরা এ দিন গুয়াহাটি থেকে ভোর সাড়ে চারটেয় রওনা দিয়ে দুপুর দু’টোয় গোয়ায় পৌঁছন। টিমের সঙ্গে আসেননি সঞ্জয় সেন। অসুস্থতা বোধ করায় ফিরে গিয়েছেন কলকাতা। ডাক্তার দেখিয়ে শুক্রবারই দলের সঙ্গে এখানে যোগ দেওয়ার কথা বাগান কোচের। তিনি যখন আসবেন কাল, ততক্ষণে অবশ্য সনি-কাতসুমিদের অনুশীলন শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কারণ শুক্রবার বিকেলে প্র্যাক্টিসের জন্য মাঠ চেয়েও পায়নি বাগান। বদলে ভাস্কোর মাঠ পেয়েছে সকালে। আগের দিন রাতে এএফসি কাপে খেলা, তার পর গুয়াহাটি থেকে মুম্বই হয়ে গোয়া আসার দীর্ঘ ধকল। শৌভিক-কিংশুকদের দেখে মনে হচ্ছিল মানসিক ভাবে আত্মবিশ্বাসী থাকলেও শারীরিক ভাবে ক্লান্ত।

আর এটাই নাকি ম্যাচে তাঁদের সুবিধে করে দেবে, দাবি ডাফির। ‘‘আমি টিমের সবাইকে বলেছি, বাগান ক্লান্ত থাকবে, সেই সুযোগটা নিতেই হবে।’’ সঙ্গে তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘সনি নয়, মোহনবাগানের আসল ইঞ্জিন কাতসুমি। ওই পুরো দলটাকে চালায়। সনি আসার আগেও টিমটা ভাল ছিল। এখন আর একটু ভাল হয়েছে। তবে আমরাও ওদের থামাতে তৈরি।’’

সনি অবশ্য তাতে একটুও উত্তেজিত নন। বরং বলছেন, ‘‘আমাদের টিমে সবাই খুব ভাল ফর্মে আছে। বেঞ্চও গতবারের চেয়ে ভাল। না জেতার কোনও কারণ নেই।’’ পানামার বিরুদ্ধে প্রাক বিশ্বকাপে হোম-অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে সনি হাইতি যাচ্ছেন ২০ মার্চ। ফিরবেন ১ এপ্রিল। ফিরতি ডার্বির আগের দিন। এত ধকলের পর আবার ডার্বির চাপ? বললেন, ‘‘চোট না পেলে লড়ে যাব। ডার্বি জিততেই হবে।’’ আর নেইমারের বিরুদ্ধে কোপা আমেরিকায় খেলার আগাম উত্তেজনা? সেটাও নিশ্চয়ই আছে! শুনে হেডফোনটা গোছাতে শুরু করেন। কানে লাগানোর আগে হেসে ফেলেন সোনালি চুলের বাগান মহাতারকা। ‘‘নেইমার, ব্রাজিল, ডার্বি ও সব অনেক পরে। আগে ডাফিদের হারাই। তার পর আবার ওডাফাদের সঙ্গে খেলা।’’

বোঝাই যায়, আই লিগ জয়ের চওড়া রাস্তায় উঠেও আপাতত সনির একমাত্র স্টেশন— ড্যারেল ডাফি!

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy